শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

বিশ্ব হসপিস ও প্যালিয়েটিভ দিবসের অনুষ্ঠানে প্যালিয়েটিভ কেয়ারকে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

প্রকাশের সময় : ৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্যালিয়েটিভ কেয়ারকে জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করে বিশেষায়িত চিকিৎসা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন। কারণ দেশে প্রায় ৬ লাখ রোগীর প্রশমন সেবা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তারা তা পাচ্ছে না। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা পেশায় প্রশমন বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল তৈরি করা অতীব জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে ‘বিশ্ব হসপিস ও প্যালিয়েটিভ কেয়ার’ দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সেমিনার, চলচ্চিত্র, সম্পূরক আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ব্যথাপূর্ণ জীবন এবং ব্যথাসহ মৃত্যুÑ কোনোটাই কাম্য নয়’। দিবসটি উপলক্ষে ‘মৃত্যুর কাছে জীবনের প্রশ্ন’ চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো বাংলাদেশে, শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমারে প্রদর্শন করা হয়। সারা বিশ্বে প্রতি বছর আনুমানিক ৪০ মিলিয়ন রোগীর প্রশমন সেবা প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন, দুরারোগ্য ক্যান্সার এবং এই ধরনের রোগে আক্রান্ত পৃথিবীর শতকরা ৭৫ ভাগ রোগীই তাদের জন্য স্বীকৃতি নিরাপদ আদর্শ ব্যথানাশক ওষুধ মুখে খাবার মরফিন না পেয়ে অসহনীয় ব্যথা নিয়ে জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত করেন এবং ব্যথা নিয়েই মৃত্যুবরণ করেন। এটা বিশেষভাবে সত্য বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য। উদাহরণস্বরূপ সমগ্র বিশ্বে প্রতিটি রোগীর জন্য গড়ে ব্যবহৃত হয় ৬ মি.লি. গ্রাম মরফিন সেখানে বাংলাদেশের রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হয় গড়ে দশমিক শূন্য পাঁচ মি.লি. গ্রাম। এই অবস্থার উন্নতির জন্য প্রয়োজন যথাযথ আইন সংশোধন এবং পরিবর্তন, চিকিৎসকদের যথাযথ জ্ঞান এবং প্রশিক্ষণ প্রদান। রোগজনিত ব্যথা হতে মুক্তি লাভ এ মানবিক অধিকারকে স্বীকৃতি প্রদান এবং ওষুধ কোম্পানিগুলোকে একই জাতীয় দামি ওষুধগুলোর পরিবর্তে সস্তায় মরফিন প্রস্তুতকে উৎসাহিত করা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রধান প্রফেসর ডা. নিজামউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় রোগ প্রতিরোধ এবং আরোগ্য নির্ভর চিকিৎসার প্রসার ঘটলেও যারা আরোগ্য লাভ করবেন না এবং প্রান্তিক সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন তাদের জন্য পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা যা ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’ নামে পরিচিত এর কোনো স্থান নেই বললেই চলে।
সারাদেশে কমপক্ষে ছয় লাখ রোগী যথাযথ চিকিৎসার অভাবে সর্বশান্ত হয়ে নিদারুণ ব্যথা এবং যন্ত্রণায় মৃত্যুবরণ করেন। অথচ খুব অল্প সময়ে, স্বল্প প্রচেষ্টায় এসব রোগীকে প্যালিয়েটিভ কেয়ার-এর মাধ্যমে জীবনের শেষ দিনগুলোর জন্য নিরাপদ যন্ত্রণাহীন মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যুর নিশ্চয়তা দেয়া যায়। তাই আমরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূলধারায় প্যালিয়েটিভ মেডিসিনকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএমএ সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. মাহমুদ হাসান, বিএমএ মহাসচিব প্রফেসর ডা. এম ইকবাল আর্সলান, ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টারের প্রফেসর সিনথিয়া গো, প্যালিয়েটিভ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহিনুর কবির প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন