মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ব্রিজ সংলগ্ন কুমার নদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। নৌকা বাইচকে ঘিরে নদীর পাড়ের নারী পুরুষ মেতে ওঠে উৎসবে। বাংলা ও বাঙ্গালীর চিরায়ত সংস্কৃতির প্রাচীনতম এ উৎসব উপভোগ করতে শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ নির্বিশেষে সকলেই মেতে ওঠে আনন্দে-উল্লাসে। নদের পাড়ে বসে হরেক রকমের খেলনা ও মিষ্টির পশরা।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আনন্দ, উৎসব ও খেলাধুলা সবকিছুতেই নদী ও নৌকার সরব আনাগোনা। হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংস্করণ নৌকা বাইচ। গ্রাম বাংলার শত বছরের চিরচেনা এই নৌকা বাইচের ঐতিহ্য ধরে রাখতে মাদারীপুরে রাজৈরে বেশি বেশি নৌকা বাইচ অনুষ্ঠান আয়োজনের দাবি দর্শনার্থীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে মুজিববর্ষ উপলক্ষে রাজৈর উপজেলার কুমার নদের পাড়ের স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় মনোমুগ্ধকর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার। এ সময় কুমার নদের পাড়ের দু’ধারে পরিণত হয় রাজৈর উপজেলাসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার বিনোদন প্রেমী মানুষের মিলন মেলায়। প্রতিযোগিতায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৩২টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। এসময় বাইচ দেখতে নদের দু’পাড়ে উৎসুক মানুষের সমাগমের মধ্যদিয়ে আমগ্রাম ব্রিজ এলাকায় সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ। বিকেলে শুরু হয়ে নৌকা বাইচ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। উৎসবমুখর এ প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী নৌকার দলপতির হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। নৌকা বাইচ দেখতে আসা জনগণ ঐতিহ্য ধরে রাখার আহবান জানান।
আয়োজক কমিটির সদস্য রাজৈর পৌরসভার কাউন্সিলর উজির মিয়া বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে নৌকা বাইচের আয়োজন করেছি। করোনা মহামারী ও লকডাউনের জন্য রাজৈরবাসী দীর্ঘদিন ঘর বন্দি ছিল। লকডাউনের জন্য তাদের চিত্তবিনোদনের লক্ষ্যে তেমন কিছু ছিল না। চিরায়িত বাংলার ধারক ও বাহক অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে আমাদের অত্র অঞ্চলের নৌকা বাইচ। আমরা নয় কাউন্সিলর উদ্যোগ নিয়েছিলাম সবাইকে বিনোদন দেওয়ার জন্য।
আরেক কাউন্সিলর সুলাইমান বলেছেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। সে কারণে আমরা এই নৌকা বাইচ আয়োজন করেছি। আমরা ভবিষ্যতে আরো বড় করে এ নৌকা বাইচের আয়োজন করবো। নৌকাবাইচ দেখতে এসে স্নিগ্ধা নামের একজন জানান, আমি এর আগে কখনো নৌকাবাইচ দেখিনি। প্রথম দেখলাম, তবে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। স্বর্ণা নামের একজন জানান, আমি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার কথা শুনে অনেক দূর থেকে এসেছি। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে নৌকা বাইচ।
সাঈদ নামের একজন বলেন, আসলে বর্তমানে নৌকা বাইচ খুব কম দেখা যায়। তাই নৌকা বাইচের কথা শুনে আমি এসেছি। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এবং আনন্দ পেয়েছি। আমি চাই আমাদের রাজৈরে এরকম ধরনের নৌকা বাইচের আয়োজন আরো করা হোক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন