সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী : চলনবিল অঞ্চলে দেশি জাতের মাছ নিধন করে চলছে হাইব্রিড মাছের আবাদ। ফলে এ অঞ্চল থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে দেশি জাতের মাছ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এভাবে দেশি মাছ নিধন চলতে থাকলে ২/১ দশকের মধ্যই এ অঞ্চল থেকে দেশীয় জাতের মাছ হারিয়ে যাবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলনবিলাঞ্চলের ৮ উপজেলার পুকুর, দিঘি, ডোবা-নালা এমনকি নদীতেও বাণিজ্যিকভাবে মাছের চাষ করা হচ্ছে। হাইব্রিড জাতের মাছ চাষ করে কিছু মানুষ অধিক মুনাফা অর্জন করলেও দেশীয় জাতের মাছের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। প্রকাশ্যে অবাধে দেশি জাতের মাছ নিধন করা হলেও প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। দেশি মাছ নিধন করা হচ্ছে সুন্দর যুক্তি দেখিয়ে। এগুলোকে বলা হচ্ছে রাক্ষুসে মাছ। চাষিদের কাছে রাক্ষুসে মাছের তালিকায় রয়েছে-বোয়াল, শৈল, গজার, চিতল ও টাকী। পুকুরে হাইব্রিড মাছের পোনা ছাড়ার আগে বিষ, সার, চুন, গ্যাস ট্যাবলেটসহ বিভিন্ন নামি-দামি কোম্পানির ঔষধ প্রয়োগ করে হত্যা করা হচ্ছে উল্লেখিত দেশীয় মাছ।
অপরদিকে পুকুর অথবা জলাশয়ে হাইব্রিড জাতের মাছের পোনা ছাড়ার কিছুদিন পর আগাছা দমনের নামে উক্ত জলাশয়গুলোতে বিশেষ ধরনের ঔষধ প্রয়োগ করে নিধন করা হচ্ছে-বাইলা, ইছা (দেশি জাতের ছোট চিংড়ি) ও চান্দা খলশেসহ দেশি জাতের সু-স্বাদু ছোট মাছগুলো। এ বিষয়ে কথা হয় সলঙ্গা থানা সদরের বিশিষ্ট মৎস্য চাষি রাতি চন্দ্র হালদারের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা পুকুরে মাছ চাষ করি। মাছ চাষে অল্প সময়ে অধিক আয় করতে হলে জলাশয়ে সার-বিষ প্রয়োগ করতে হয়। এছাড়া কোনো জলাশয়ে হাইব্রিড জাতের মাছ আবাদ করতে হলে সে জলাশয় থেকে অবশ্যই রাক্ষুসে মাছ নামে খ্যাত শৈল, বোয়াল, গজার, চিতল ও টাকি নিধন করতে হবে। নইলে হাইব্রিড জাতের মাছ আবাদ করা সম্ভব নয়। অপরদিকে আবাদকৃত জলাশয় থেকে ইছা (দেশি জাতের ছোট চিংড়ি) বাইলা, চান্দা, খলশে অপসারণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এভাবে দেশি মাছ নিধন করে হাইব্রিড মাছের আবাদ চলতে থাকলে ৫/৭ বছরের মধ্যে চলনবিল থেকে দেশি মাছ বিলুপ্তি হয়ে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন