শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

সন্তানের প্রতি পিতামাতার দায়িত্ব ও কর্তব্য

মাওলানা এ এইচ এম আবুল কালাম আযাদ | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

সন্তানের কৃতিত্বে যেমন আপনি আনন্দিত হন তেমনি সন্তানের পদস্খলনের দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ স. বলেন, ‘জান্নাতে কোনো ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি করা হলে তারা বলবে কীভাবে আমার মর্যাদা বৃদ্ধি পেল? তখন তাকে বলা হবে, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমাপ্রার্থনার ফলে।’ (ইবনে মাজাহ) ইসলাম অনুমোদন করে না এমন কাজ থেকে তাদেরকে বিরত না রাখলে এই সন্তানগণই কিয়ামাত দিবসে পিতা-মাতার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। অন্যথায় তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! জ্বিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে তাদেরকে আমাদের দেখিয়ে দাও। আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নীচে রাখব, যাতে তারা নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়। ( সূরা আত তাহরীম- ০৬)
সন্তানের জন্যে দুয়া করা: মা-বাবা হওয়া সহজ হলেও দায়িত্বশীল মা-বাবা হওয়া সহজ নয়। সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারলে সন্তানের কারণে উভয় জগতে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হবে।
তাই আমাদের সন্তানের জন্য দুয়া করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দুয়া শিক্ষা দিয়েছেন। ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি তাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন।’ (আল কুরআন, ২৫:৭৪)।
অনুরূপ সন্তান লাভের জন্য দুয়া করতে হবে। জাকারিয়া আ. এভাবে দুয়া করেছেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে সৎ বংশধর দান করুন, অবশ্যই আপনি দুয়া শ্রবণকারী।’ [সুরা আলে ইমরান-৩৮] অপরপক্ষে সন্তানকে কোন অভিশাপ বা বদদোয়া করা মাতা-পিতার জন্য শোভনীয় নয়। এক ব্যক্তি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক রহ. এর নিকট এসে নিজের এক পুত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করল।
তিনি বললেন, তাকে তুমি কোনরূপ বদদোয়া করেছ কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তবে তুমি তাকে নষ্ট করেছ।
আমাদের ইহজগত অত্যন্ত ক্ষীণ। কেউ স্থায়ী নই। তাই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি লাভের জন্য সন্তানদেরকে যথাযথভাবে গড়ে তোলা পিতা-মাতার দায়িত্ব। যাতে সৎ সন্তান হিসাবে তারা পিতা-মাতার মৃত্যুর পরও তাদের জন্য আমল জারী থাকার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয় না- ১.সদকায়ে জারিয়া ২. এমন জ্ঞান-যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় ৩. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দুয়া করে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে তাঁর নির্দেশ মতো সন্তান লালন পালন করার তাওফীক দান করুন। আমিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন