নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টির কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, কোভিড বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নতুন পৃথিবীর চ্যালেঞ্জে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই জ্ঞান-বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টি করতে হবে। যৌক্তিক সমাজ সৃষ্টি করতে হবে। শনিবার (২ অক্টোবর) অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মশিউর রহমান বলেন, সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা এবং যোগ্য মানুষের প্রাপ্য অধিকার আমাদের সমাজে অবশ্যই সৃষ্টি করতে হবে। কারণ সমাজে সৎ ও শিক্ষিত মানুষের মর্যাদা যদি প্রতিষ্ঠা করা না যায়, প্রকৃত অর্থে বৃহৎ কোন পরিবর্তন এবং আলোকিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকশিত করাও তখন দু:সাধ্য হয়ে ওঠে। কেননা শিক্ষার্থীরাও তাদের সমাজের বাস্তব চিত্র থেকে কিছু শেখে, আত্মস্থ করে এবং তাদের জীবনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করে। সেটা করা সম্ভব হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে আলোর প্রভায় নতুন ধারা তৈরি হবে। বিজ্ঞানমনস্ক, যৌক্তিক ও আদর্শ নির্ভর নতুন এক পৃথিবী আমাদের সকলের কাম্য।
উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত করতে হলে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর বৈশ্বিক দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরির কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে ভিসি বলেন, দেশের হাওর, বাঁওড়, চরাঞ্চল, নদী ভাঙন কিংবা বন্যাকবলিত এলাকা, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলসহ প্রত্যন্ত জনপদে বসবাসকারী অনগ্রসর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সন্তানদের মধ্যে উচ্চশিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়কে এখন বিশ^মানের গ্র্যাজুয়েট তৈরির দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব ও উন্নয়নসহ মোট ৮১৫ কোটি ৪৭ লাখ ১৬ হাজার টাকার বাজেট পেশ করেন, যা সিনেটে অনুমোদিত হয়। অধিবেশনে বার্ষিক বাজেট, বার্ষিক প্রতিবেদন, গত অধিবেশনের কার্যবিবরণী, সার্ভিস রুলের বিভিন্ন ধারা ও তফসিলের সংযোজন-বিয়োজন পরিমার্জনপূর্বক সংবিধি সংশোধন অনুমোদন হয়।
এ অধিবেশনে জুম অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, অ্যারোমা দত্ত এমপি, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ^বিদ্যালয় বাংলাদেশের ভিসি প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সাজাহান মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক প্রমুখ। এছাড়া জাতীয় নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি, মাউশির ডিজি প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ, সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষসহ ৫৬ জন সম্মানিত সিনেট সদস্য এবং ৬ জন আমন্ত্রিত অতিথি অধিবেশনে সংযুক্ত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন