পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে গুজব, মিথ্যা কথা, মানুষের নামে বদনাম, চরিত্র হনন, কুৎসা রটনা ষড়যন্ত্র প্রচার হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজারো মিথ্যা, ষড়যন্ত্র ও কুৎসা গুজবের মধ্যেও একটা ভালো সংবাদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভালো সংবাদ প্রচার করার জন্য সংবাদকর্মীসহ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতারগোপ্তা এলাকায় এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুরের একটি স্থানীয় অনলাইন নিউজের মাধ্যমে জানতে পারলাম মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে কমলনগর ও রামগতি উপজেলার প্রায় অর্ধেক এলাকা তলিয়ে গেছে। নদীতে ভিটে-মাটি হারানো অন্তত দুই হাজার পরিবার এখন রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের ওপর বসবাস করছে। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর দাফনের জায়গা না থাকায় নানা সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে পরিবারের লোকজনকে। এ সংবাদটি নজরে আসার পর ওই এলাকায় গণকবর ও মসজিদ করার উদ্যোগ নিই। গণকবর ও মসজিদ নির্মাণের জন্য সাড়ে ২৯ শতক জমি ক্রয় করে সেখানে গণকবর ও মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীতেও ভিটামাটি হারা অসহায় পরিবারের সন্তানদের আরবি, বাংলা, ইংরেজি পড়ানোর জন্য একটি মক্তব করার উদ্যোগ নেয়ার আশ^াস দেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি আরো বলেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর শেষকৃত্যটা তার ধর্মীয় অধিকার। এটি তার অবিচ্ছেদ্য মানবাধিকার এবং তার পরিবারের নৈতিক কর্তব্য। দেশে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। এরকম একটি উন্নত দেশে মানুষের মৃত্যু হবে, আর তার কবরের জায়গা নেই। কিন্তু তার দাফনের ব্যবস্থা হবে না। এটা অসম্ভব। এটা হতে পারে না। এমন সংবাদে স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় লক্ষ্মীপুরের ভূমিহীন মানুষের জন্য এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় সংবাদকর্মী সানাউল্যাহ, মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন আইজিপির সহধর্মীনী ও বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জাসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এর আগে দুপুর বারোটার দিকে হেলিকপ্টার যোগে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে আসেন। পরে সুতারগোপ্তা এলাকায় নিজ অর্থায়নে নির্মিত গণকবর ও মসজিদ উদ্বোধন করেন। পরে বৃক্ষরোপণ করেন তিনি। দুপুরে ওই মসজিদে জোহারের নামাজ আদায় করেন আইজিপি। বিকেলে পুলিশ লাইন্স হলরুমে পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন