সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৩ বছর নিষিদ্ধ বাংলাদেশ!

প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : অবশেষে আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হলো। শেষ পর্যন্ত ভুটানের কাছেও হারলো বাংলাদেশ। আর এ হার বাংলাদেশ ফুটবলকে এক নিমিষেই ছুড়ে ফেলে দিলো অন্ধকার গহŸরে। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লেÑঅফ-২ এর অ্যাওয়ে ম্যাচে ভুটানের কাছে হেরে বাংলাদেশ শুধু আসরের প্রাক-বাছাই পর্ব থেকে বাদই পড়েনি, আগামী তিন বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলার সুযোগও হারিয়েছে। ফিফার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভুটানের কাছে হারে বাংলাদেশ তিনবছর কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারবে না। গতকাল থিম্পুতে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফের অ্যাওয়ে ম্যাচে ভুটান ৩-১ গোলে বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো লাল-সবুজদের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ নিলো। বিজয়ী দলের পক্ষে চেন চু দু’টি ও জিগমে দর্জি একটি করে গোল করেন। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সান্ত¦নাসূচক গোলটি শোধ দেন রুবেল মিয়া।

একে লজ্জা বললে কি লজ্জা শব্দের অপমাণ হবে? ভুটানের কাছে ৩-১ গোলের হার! লজ্জা ছাড়া অভিধানিক অন্য কোনো শব্দই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লেÑঅফে ভুটানের কাছে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আত্মহুতিই দিয়েছেন মামুনুল, রায়হান, রনি, সোহেলরা। নিজেদের ফুটবলকে হিমাগারে পাঠিয়ে একের পর এক হারের ষোলোকলাপূর্ণ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাফুফের কিছু হতচ্ছড়া কর্মকর্তাদের অজ্ঞতা, অপরিণামদর্শী কোচ এবং অপরিপক্ব খেলোয়াড়দের দায়ে এখন লজ্জায় মাথা নোয়াতে হচ্ছে বাংলাদেশের অগণিত ফুটবলপ্রেমীকে? এ দায় পুরোটাই মেনে নিয়ে দেশবাসীর কাছে জবাবদিহী করতে হবে বাফুফে কর্মকর্তা, সাধারণ মানের কোচ টম সেইন্টফিট ও খেলোয়াড়দের। ভুটানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ের স্বপ্ন নয়, অন্তত ১-১ গোলের ড্র’র লক্ষ্যই ছিলো বাংলাদেশের। কারণ জয়ের স্বপ্ন দেখার এত দুঃসাহস সেইন্টফিটের দলের নেই। এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হোম ম্যাচে এই ভুটানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিলো বাংলাদেশ। তখনই সবার ধারণা জন্মেছে এই ভুটান ভোগাবে লাল-সবুজদের। আশঙ্কা ছিলো ভুটানীরা বাংলাদেশের ফুটবলকে অন্ধকার গহŸরে নিমজ্জিত করবে। আশঙ্কাই সত্যি হলো, ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেলো অক্ষরে অক্ষরে। অথচ এই ভুটানকেই এক সময় গুণে গুণে গোল দিতো বাংলাদেশ। কোন ঘরনার ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে জয় পায়নি ভুটান। ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বশেষ লড়াইয়ে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হারিয়েছিলো ভুটানকে। অবশ্য এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে যেন খেই হারিয়ে ফেলে লাল-সবুজরা। প্রস্তুতি ম্যাচে আমিরাতের বিপক্ষে ৬-১ গোলে, জর্ডানের কাছে ৮-০, তাজিকিস্তানের কাছে ৫-০ ও ১-০, প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৫-০ গোলে হারের পর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লেÑঅফে ঢাকায় ভুটানের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে বাংলাদেশ প্রমাণ রাখে যে, তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে লাল-সবুজের ফুটবল!
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লেÑঅফে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ডু অর ডাই ম্যাচই ছিলো কাল। থিম্পুর কৃত্রিম টার্ফ, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাত হাজার ফুট উচ্চতার অপরিচিত কন্ডিশন, ভুটানের সঙ্গে কোনও পর্যায়ের ফুটবল ম্যাচে না হারার রেকর্ড- সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা হিসেবেই অপেক্ষা করছিলো ম্যাচটি। শেষ পর্যন্ত কঠিন, কঠিনই থেকে গেলো। জয় তো দূরের কথা, ড্র’র দেখাও পেলেন না মামুনুলরা। অথচ ম্যাচ খেলতে ঢাকা ছাড়ার আগে কথার ফুলঝুরি ছুটিয়েছিলেন বেলজিয়ান কোচ টম সেইন্টফিট। তার কথায়, ‘থিম্পুতে গোলের দেখা পাবে বাংলাদেশ।’ হ্যাঁ, গোলের দেখা ঠিকই পাওয়া গেছে। তবে তা নিজেদের জালে!
এদিন ম্যাচে মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামকে অধিনায়ক করেই একাদশ নামান কোচ টম সেইন্টফিট। তাতেও কাজ হয়নি, বাংলাদেশ সুসংগঠিত একটি ইউনিট হিসেবে খেলতেই পারেনি। আবদুল্লাহ হেমন্ত ভিনসেন্ট, রুবেল মিয়া, শাখাওয়াত রনি, জুয়েল রানা; পাঁচ অ্যাটাকার ছিলেন একাদশে। তাতেও আক্রমণ শাণাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। আক্রমণে ধার বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধে নামানো হয় এমিলিকে। তাতেও গোলের দেখা পায়নি সফরকারীরা। ভুটানের টার্ফে ম্যাচের প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৪ মিনিটে দারুণ এক হেডে দলকে এগিয়ে নেন জিগমে দর্জি (১-০)। ভুটানের দ্বিতীয় সাফল্য ২৭ মিনিটে চেন চুর দারুণ এক পেসিং শটে (২-০)। প্রথমার্ধে দ্বিগুণ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া মামুনুলরা, দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আক্রমণের ধার উজ্জ্বল করে। কিন্তু বল আর জালে পাঠাতে পারেনি। মামুনুলদের একের পর এক শট দেখে মনে হচ্ছিল ফুটবল বলে ক্রিকেট খেলছেন তারা। বারপোস্টের বিশাল ওপর দিয়ে যাওয়া বলকে কি বলবেন আপনি? তবে ৬৩ মিনিটে রুবেল মিয়া এক গোল মান বাঁচানো ব্যবধান কমিয়েছে (২-১)। তবে সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭৬ মিনিটে ম্যাচের তৃতীয় এবং নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করে দলকে ৩-১-এ জয় এনে দেন চেং চু। পরে জয়ের আনন্দে টার্ফ ছাড়ে ভুটান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md. Jamal Uddin ১১ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:৪২ এএম says : 0
I was a blind fan of Abahoni football club during 1980-1987 and had went to Abahoni club many times to see the practice of Abahani football players. Now nothing remains for Bangladesh football. BFFA president Mr. Salahuddin and other officials should resign immediately from their post taking responsibility of the failure of football team. He has no ability to do anything for Bangladesh football even he has golden record as a player.
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন