সউদী আরবে ওমরাযাত্রীদের পরিবহন ভাড়া হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় এজেন্সিগুলো চরম বিপাকে পড়েছে। আগের চুক্তি অনুযায়ী ওমরাযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হওয়ায় যাত্রী ও এজেন্সির মালিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়ায় ওমরাযাত্রীদের ট্রান্সপোর্ট চুক্তি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ওমরাহ ভিসা করতে হিমসিম খাচ্ছে এজেন্সিগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈশ্বিক করোনা মহামারির দীর্ঘ ১৯ মাস পর গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওমরাযাত্রীদের ভিসা চালু করা হয়। গত ২৫ আগস্ট মাছরাঙ্গা ট্রাভেলসের মাধ্যমে আইবিএম ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মো. জাফর ইকবাল খান টিটুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকে প্রথম ওমরাযাত্রীর দল সউদীতে গমন করেন।
এদিকে, গত ১ অক্টোবর থেকে ওমরাহ ভিসা সিস্টেমে হাইচ গাড়ি আউট করে দেয়ায় কাক্সিক্ষত যাত্রীদের ভিসার আবেদন করা সম্ভব হচ্ছে না। হাবের ইসির অন্যতম সদস্য ও রাজশাহী ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজশাহী ট্রাভেলসের মাধ্যমে ৩৬০ জন ওমরাযাত্রী সউদী আরবে গেছেন। এদের অধিকাংশই ওমরাহ শেষে দেশে ফিরেছেন। তিনি বলেন, ছোট ওমরাহ গ্রুপের ট্রান্সপোর্ট সঙ্কটের দরুন ওমরাহ ভিসা করতে পারছে না অধিকাংশ ওমরাহ এজেন্সি। তিনি বলেন, আগে ২ জনের প্রাইভেট কারের ভাড়া ছিল ১৮শ’ সউদী রিয়াল। গত ১ অক্টোবর থেকে উক্ত প্রাইভেটকারের ভাড়া বাড়িয়ে ৩ হাজার ৮৭৯ রিয়াল নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫ জন ওমরাযাত্রীর জিএমসি জীপের ভাড়া ছিল ২ হাজার ৪৯৪ রিয়াল। বর্তমানে উক্ত জীপের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৮১৪ রিয়াল। আগে ওমরাযাত্রীদের হাইচ গাড়ির ভাড়া ছিল ২ হাজার ৫ রিয়াল।
এখন ওমরাহ সিস্টেম থেকে হাইচ গাড়ি আউট করে দেয়া হয়েছে। তবে ওমরাযাত্রীদের ২৪ সিটের বড় গাড়ির ভাড়া বাড়েনি। বড় গাড়ির ভাড়া ৫ হাজার ১৭১ রিয়াল বহাল রাখা হয়েছে। সউদী সরকার ছোট গ্রুপের ওমরাযাত্রীদের প্যাকেজে নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যেই গাড়ি ভাড়া বাড়িয়েছে বলেও হাবের ঐ নেতা উল্লেখ করেন। ওমরাহ সিস্টেম থেকে হাইচ গাড়ি বন্ধ রাখায় ৮/৯ জনের ওমরাযাত্রীকে এখন ৫ হাজার ১৭১ রিয়াল ভাড়া দিয়ে ২৪ সিটের বড় গাড়ি ভাড়া করতে বাধ্য হচ্ছে এজেন্সিগুলো। এতে ওমরাহ এজেন্সিগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। হাবের ইসির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ওমরাযাত্রীদের আকাশচুম্বী পরিবহন ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের জন্য রাজকীয় সউদী সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অপর দিকে, চীনা টিকা দেয়ার কারণে গ্রামাঞ্চলের ৮০% ওমরাযাত্রী ওমরাহ পালন করতে সউদী আরবে যেতে পারছেন না বলে হাবের সাবেক সিনিয়র-সহসভাপতি আব্দুল কবীর খান জামান জানিয়েছেন। তিনি অপেক্ষমান হাজার হাজার ওমরাযাত্রীর সউদী গমনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য চীনা টিকা সিনোফার্মের অনুমোদন লাভের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সউদী রাজকীয় সরকারের সাথে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনের অনুরোধ জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন