ওমরাযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং চারটি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করায় বিমান টিকিট সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করছে। এ সুযোগে এয়ারলাইন্সগুলো মধ্যপ্রাচ্যের টিকিটমূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে। এতে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মী ও ওমরাযাত্রীদের টিকিট কিনতে নাভিশ্বাস উঠেছে। ফ্লাইটের আসন সঙ্কটের কারণে হাজার হাজার ওমরাযাত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিমানের টিকিট সঙ্কট অব্যাহত থাকলে চলতি রমজানে প্রায় ২০ হাজার ওমরাযাত্রী সউদী যেতে পারবে না। গতকাল শনিবার নয়া পল্টনস্থ একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম একথা বলেন।
টিকিট সঙ্কট নিরসন না হলে ওমরাযাত্রীদের ভিসা ও হোটেল বাবদ খরচ হওয়া প্রায় ৯০ কোটি টাকা গচ্চা যাবে। বাংলাদেশ থেকে ওমরাহযাত্রী ও মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীদের ফ্লাইটে তীব্র আসন সঙ্কট ও দ্বিগুণ ভাড়া বৃদ্ধিতে উদ্ভূত জটিলতা নিরসনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে হাব।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, হাব-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী, সহ-সভাপতি এসএম ইব্রাহিম, মহাসচিব ফারুক হোসাইন সরদার, অর্থসচিব মুফতী আব্দুল কাদের মোল্লা, ড. কাফিল উদ্দিন সরকার সালেহী, মুফতী মোস্তাফিজুর রহমান, মাজহারুল হক, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মো. আবু তাহের, মাওলানা জাহিদ আলম, ফোরাব সভাপতি টিপু সুলতান ও মহাসচিব আরিফুর রহমান আরিফ ও হাব ওলামা সোসাইটির নেতা মুফতী জুনাইদ গুলজার।
লিখিত বক্তব্যে এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো বিমান ভাড়া অসহনীয় মাত্রায় বৃদ্ধি করেছে। চলতি বছর থেকে সউদী সরকার সারা বছর (হজের এক সপ্তাহ বাদ দিয়ে) ওমরাহ ভিসা প্রদান করছে। গত ৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০৮ জনকে ওমরাহ ভিসা দিয়েছে।
সরকারের অভিবাসন ব্যয় কমানো নীতিমালা থাকলেও বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীদের বিমান ভাড়া বাড়ার কারণে অভিবাসন ব্যয় অনেক বেড়েছে। অসহায় গরিব অভিবাসনপ্রার্থীরা বর্ধিত ব্যয় বহন করতে না পারায় অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বা ভিসা বাতিল হচ্ছে।
তাছাড়াও ছুটিতে আসা অনেক অভিবাসী বিমানের আসন সঙ্কট ও ভাড়া বাড়ার কারণে গন্তব্যে ফিরতে পারছেন না। তিনি আরও জানান, বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা অভিবাসীদের বিমান ভাড়া ৬০-৬৫ হাজার টাকা। যেখানে আগে ২২-২৪ হাজার টাকা ছিল। অতিরিক্ত বিমানভাড়ার টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আকারে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো।
স্বল্পমেয়াদি সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যেসব রুটে যাত্রী সংখ্যা কম ও অলাভজনক সে সকল রুটে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা, ঢাকা-রিয়াদ-ঢাকাসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী অন্যান্য গন্তব্যে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। এতে বিমান লাভবান হবে এবং ওমরাহযাত্রীসহ সকল মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীরা উপকৃত হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সমাধানে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ওপেন স্কাই নীতি ঘোষণা করতে হবে। তাদেরকে উৎসাহ প্রদানের জন্য বিমান বন্দরের হ্যান্ডলিং, ল্যান্ডিং ও পার্কিংসহ অন্যান্য চার্জ কমানো ও মওকুফ করা যেতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, আগামী ৪ জুলাই বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট শুরু হবে। ৫ আগস্ট পর্যন্ত হজ ফ্লাইট চলবে। ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১৭ আগস্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন