শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

পাপনের হ্যাটট্রিক

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

অনিশ্চয়তা, উত্তেজনা কিংবা সংশয়, কিছুই বলতে গেলে ছিল না। অপেক্ষা ছিল স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার। সেটিও হয়ে গেল দ্রুতই। পুরনো দায়িত্ব নতুন করে পেলেন নাজমুল হাসান পাপন। আরও একবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নির্বাচিত হলেন ক্রিকেটের সফল এই সংগঠক। সভাপতির মতো বিসিবির পরিচালনা পরিষদেও পুরনোদের আধিক্য। ২৫ বোর্ড পরিচালকের ১৯ জনই ছিলেন আগের বোর্ডে।
আগের দিন বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন শেষেই বেসরকারিভাবে ফলাফল জানানোর পর আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা হয় গতকাল দুপুরে। এ দিনই নতুন বোর্ডের প্রথম সভায় নাজমুলকে নির্বাচিত করা হয় সভাপতি। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব পেলেন নাজমুল হাসান। ২০১২ সালের অক্টোবরে প্রথমবার দায়িত্ব নেন তিনি সরকারের মনোনয়নে। পরের বছরের অক্টোবরে বিসিবির প্রথম নির্বাচিত সভাপতি হন তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এরপর ২০১৭ সালের পর এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বোর্ড সভাপতি হলেন তিনি। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান কর্তার দায়িত্বে সবচেয়ে বেশি সময় থাকছেন ১৪তম এই সভাপতি।
গত কিছুদিনে যদিও বেশ কয়েক দফায় তিনি এই দায়িত্ব চালিয়ে যেতে অনাগ্রহের কথা বলেছেন। ডাক্তার তাকে ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে বলেছেন, নতুন নেতৃত্ব দেখতে চান, এসব কথা বলে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত বোর্ড পরিচালকের দায়িত্ব নিতে তিনি ঠিকই নির্বাচনে আসেন। বোর্ড পরিচালকরাও অনুমিতভাবে তাকেই দিলেন বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব।
এই প্রথমবার অবশ্য নির্বাচনে নেমে বোর্ড পরিচালক হয়েছেন তিনি। আগের দুই নির্বাচনে সরাসরি বোর্ড পরিচালক হয়েছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে। এবারের নির্বাচনে ক্যাটাগরি-২ থেকে ৫৭ ভোটের ৫৩টি পেয়ে তিনি নির্বাচিত হন। এই ক্যাটাগরির পরিচালকরা নির্বাচিত হন ক্লাব প্রতিনিধিদের ভোটে। ৫৩টি করে ভোট পান গাজী গোলাম মুর্তজা ও এনায়েত হোসেন সিরাজও। ৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন ইসমাইল হায়দার মল্লিক। সব মিলিয়ে এই ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচিত হন ১২ জন পরিচালক। যেখানে নতুন মুখ আছেন ওবায়েদ নিজাম, ফাহিম সিনহা, সালাহউদ্দিন চৌধুরি, ইফতেখার মাহমুদ ও মঞ্জুর আলম।
নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যান চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আকরাম খান ও আ জ ম নাছির, খুলনা থেকে শেখ সোহেল ও কাজী ইনাম আহমেদ, সিলেটের শফিউল আলম চৌধুরী, বরিশালের আলমগির খান ও রংপুরের আনোয়ারুল ইসলাম। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে সরাসরি পরিচালক হন দীর্ঘদিন ধরে বোর্ডে থাকা আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ও জালাল ইউনুস।
আরো এক দফা বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিনটি কাজ হাতে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পাপন। তাতে আছে আগের মেয়াদের প‚রণ না হওয়া পুরনো প্রতিশ্রুতি আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনও।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নব নির্বাচিত বোর্ড পরিচালকদের সম্মিলিত রায়ে আরও এক দফায় সভাপতি পদে আসীন হবার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে নাজমুল জানান শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, গঠনতন্ত্র সংশোধন ও আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোশিয়েশন বাস্তবায়নের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তারা, ‘আজ (গতকাল) সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে বলেছি অনেক কাজ বাকি। এতদিন অনেক কাজ করেছি এটা মনে করা হবে ভুল। কারণ এখন আরো কঠিন সময় আসছে। আমাদের প্রথম কাজ হলো শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম। এটা আমাদের যতদ্রুত সম্ভব চালু করতে হবে। কারণ আমরা যে আইসিসি ইভেন্টে আবেদন করেছি সেখানে আমাদের এই স্টেডিয়াম দেখানো আছে। এটা ছাড়া কিন্তু আমরা ওই টুর্নামেন্ট পাব না। তো এটা নাম্বার ওয়ান, টপ প্রায়োরিটি। পরেরটি হচ্ছে গঠনতন্ত্র, পরিচালকদের বলেছি সংবিধানে কোথায় কি পরিবর্তন আনা যায় তা বলতে বলেছি। পরের বোর্ড মিটিংয়ে তারা পরিবর্তনের মতামত উপস্থাপন করবে। আমার প্রস্তাব হলো- আমাদের এখানে এতগুলা ক্লাব অংশগ্রহণ করে করে অথচ ক্লাবগুলোর ভোট নাই। এমন সব ভোটারের নাম দেখি ক্রিকেটের সাথে যাদের কোন সম্পর্কই নাই। এখানে একটা পরিবর্তন আসা দরকার। এটা একটা উদাহরণ দিলাম, এরকম আরো আছে।’
তৃতীয় প্রাধান্য হিসেবে বহুল প্রতীক্ষিত আঞ্চলিক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কথা বলেছেন তিনি, ‘আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থা তৈরি। এটার সঙ্গেই কাঠামোগত উন্নয়নের কথা এসেছে। ক্রিকেট অ্যাকাডেমি ইতিমধ্যে এক জায়গায় হয়েছে আরেক জায়গায় হচ্ছে। আর কোথায় কোথায় হবে এটা নিয়ে প্রস্তাব করেছি। আর বয়স ভিত্তিকের জন্য ডেডিকেটেড অ্যাকাডেমি হবে। এখানে আমি প্রস্তাব রেখেছি যে - উন্নত অ্যাকাডেমি তো কয়েকটা হবে কিন্তু তিনটা থাকবে ডেডিকেটেড। যেমন ব্যাটিংয়ের জন্য একটা থাকবে, পেসারদের জন্য একটা আর স্পিনারদের জন্য একটা। এটা জাতীয় ক্রিকেটারদের জন্য না, ডেভেলপমেন্টের উদ্দেশ্যে। এখানে দেশী হোক বা বিদেশী হোক ডেডিকেটেড কোচ থাকবে। এছাড়া আমাদের খেলার মাঠ দরকার ৮-১০টা, যেখানে সারা বছর খেলা চালাতে পারি। সামনে আরো বেশি খেলাতে চাই। আর এই মাঠগুলো আমরা (বিসিবি) পরিচালনা করবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন