দেশে প্রথম বেসরকারি ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের যাত্রা শুরু। এরপর ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ সেবা। প্রতিদিনই বাড়ছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পরিধি। মূলত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে এ সেবার মাধ্যমে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনাই এর মূল লক্ষ্য। এ সেবা যেমন বাড়ছে একইভাবে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ ও ঋণের চাহিদা বাড়ছে। ২০২০ সালের জুন মাস সময় পর্যন্ত দেশের ২৩টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করেছিল।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে আরও পাঁচটি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় নাম লেখালো। এর মাধ্যমে দেশের মধ্যে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় লিখিয়েছে মোট ২৮টি ব্যাংক। আর চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২২ লাখ পাঁচ হাজার ৩৫৮টি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন, জমা দেয়া, রেমিট্যান্সসহ বিভিন্ন পরিষেবার বিল জমা দেয়া, অন্য হিসাবে অর্থ স্থানান্তর, চেক বই গ্রহণ, এটিএম কার্ড সংগ্রহসহ সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম করা যায়। নির্দিষ্ট কমিশনের মাধ্যমে ব্যাংকের পক্ষে সেবাটি দেন এজেন্টরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এক কোটি ২২ লাখ পাঁচ হাজার ৩৫৮টি হিসাবের মধ্যে ৮৬ শতাংশই গ্রামের, বাকিটা নগর অধিবাসীদের। চলতি বছরের জুন মাস শেষে এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। আর গত ২০২০ সালের জুন শেষে ছিল ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে আমানতের পরিমাণ ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে জুন (এপ্রিল-মে-জুন) শেষে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে দুই হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। আর তিন মাসের ব্যবধানে আমানত বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
একই সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণও বেড়েছে। গত বছরের (২০২০) জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৭২০ কোটি টাকা। আর গত জুন শেষে তা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ১৮৬ কোটি টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বিতরণের হার বেড়েছে ৩৪২ দশমিক ২১ শতাংশ। এর মধ্যে গত মার্চ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চ) থেকে জুন (এপ্রিল-মে-জুন) শেষে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ২৭ দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়েছে ঋণ বিতরণ।
এজেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্সের পরিমাণও বেড়েছে। গত বছরের (২০২০) জুন শেষে রেমিট্যান্স বিতরণ হয়েছিল ২৬ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের জুন শেষে বিতরণ হয়েছে ৬৭ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় দেড়গুণ। অর্থাৎ আলোচিত সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৪১ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন