বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) জশনে জুলুসে সর্বস্তরের মুসল্লি ও সুন্নি জনতার ঢল নেমেছে। মুখে কালিমা শাহাদাত, হাতে হাতে কালিমাখচ্চিত বর্ণিল পতাকা নিয়ে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ শামিল হয়েছেন বর্ণাঢ্য র্যালি। নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর, নারায়ে রেসালত, ইয়া রাসুল আল্লাহ্ ধ্বনিতে মুখরিত চট্টগ্রাম নগরীর আকাশ বাতাস। হজরতুল আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহর (মজিআ) নেতৃত্বে বুধবার সকালে নগরীর মুরাদপুর আলমগীর খানকাহ্-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে বের হয়েছে পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর (সা.) জশনে জুলুস। ১৯৭৪ সাল থেকে এ জুলুসের আয়োজন করে আসছে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকাল ৮টায় জুলুস শুরু হয়। তার আগেই হাজারো মানুষের সমাবেশ হয় আলমগীর খানকাহ প্রাঙ্গণে। মহানগরী ছাড়াও বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে নবীপ্রেমিক হাজার হাজার মানুষ জুলুসে শরিক হতে ছুটে আসেন। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ যোগ দেন জশনে জুলুসে । জুলুসে উপলক্ষে
প্রতি বছরের মতো এবারও নগরীকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। প্রধান প্রধান সড়কে তোরণ, সড়কদ্বীপ ও সড়ক বিভাজকে ব্যানার, ফেস্টুন, বর্ণিল বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঐতিহাসিক এ জুলুস জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়ক হয়ে এগিয়ে চলেছে।
সাবির শাহ একটি সুসজ্জিত গাড়িতে বসে জনতার ভিড় ঠেলে এগিয়ে যাচ্ছেন। তার সাথে আছেন কেন্দ্রীয় আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন ও সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেনসহ ট্রাস্টের নেতারা।
আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জুলুস শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, আল্লামা তৈয়ব শাহ (র.) ৭৪ সালে এ জুলুসের প্রবর্তন করেন। আমরা এ জুলুস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের এবারের বার্তা হচ্ছে মানুষের প্রতি ভালোবাসা। করোনাকালে আপনারা দেখেছেন গাউসিয়া কমিটি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের দাফন কাফন ও সৎকারে সহযোগিতা করে আসছে। আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন বলেন, দেশ, জাতির উন্নতি, বিশ্ব শান্তি ও করোনামুক্তির জন্য দোয়া করা হবে জুলুসের মোনাজাতে। গাউসিয়া কমিটির অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও জুলুস সফল করার জন্য আমরা পীরভাই, সুন্নি জনতা, প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এ জুলুস সম্প্রীতির বার্তা বয়ে আনবে দেশে।
জুলুস নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জারপুল, কাতালগঞ্জ, অলিখাঁ মসজিদ, কেয়ারী মোড়, চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারী, খাস্তগীর স্কুল, আসকার দীঘি, কাজির দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, ২ নম্বর গেট, পুনরায় মুরাদপুর, বিবিরহাট প্রদক্ষিণ পূর্বক জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে জমায়েত হবে।সেখানে দুপুর ১২টায় মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।মাহফিল শেষে জোহরের নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন