নিউইয়র্কে নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড জামে মসজিদে ১২ দিন ব্যাপী জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) গত ১৮ অক্টোবর সোমবার সম্পন্ন হয়েছে। হামদ-নাত আর দরুদে মুখর পরিবেশে গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ মাহফিলে প্রতিদিনই মুসল্লীদের ঢল নামে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএ ব্রঙ্কস শাখা এবং নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড জামে মসজিদ ইনকের উদ্যোগে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় প্রতিদিন মাগরিব থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত এ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জশনে ঈদে মিলাদুন্নবীকে ঘিরে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএ ব্রঙ্কস শাখার সভাপতি ও নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টারের সেক্রেটারী আলহাজ্ব মুহাম্মদ ইকবাল হুসাইনের সভাপতিত্বে সোমবারে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সভাপতি আল্লমা সৈয়দ জুবায়ের আহমদ। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএ ব্রঙ্কস শাখার সহ সভাপতি মাওলানা শেখ মো. মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গেস্ট স্পিকার ছিলেন প্রফেসর আল্লামা ক্বারী গোলাম রাসুল, বিশেষ অতিথি ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএ ব্রুকলীন শাখার সভাপতি মাওলানা শফিউল আলম কুরাইশি আল কাদরী। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএ’র সহ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ আতাউর রহমান ও মহাসচিব আলহাজ্ব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শুরুতেই পবিত্র কোরআনুল কারীম থেকে তেলাওয়াত করেন নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টার অ্যান্ড জামে মসজিদের ভারপ্রাপ্ত ইমাম হাফিজ মোসাদ্দিক আহমেদ। না’ত খাঁ পরিবেশন করেন শায়ের মুহাম্মদ শাখের আশরাফী কাদরী ও হাফিজ মোসাদ্দিক আহমেদ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নর্থ ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি আলহাজ্ব সৈয়দ জামিন আলী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ব্রঙ্কস শাখার সহ সভাপতি সৈয়দ রাহুল ইসলাম ও মো. মাহবুব হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ জাকারিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ওসমান গনি তালুকদার শামীম প্রমুখ।
নাতে রাসূল পরিবেশন করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ব্রঙ্কস শাখা কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ শাহ আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানব জীবনের চলার পথে ঈমান, আকিদা, দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের নির্দেশনা সম্পর্কে সারগর্ভ আলোচনা করে আল্লামা জুবায়ের আহমদ বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমে একথাই নির্দেশ করেছেন যে, হে হাবীব আপনি আপনার উম্মতদেরকে বলে দিন তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাসতে চাও তাহলে আমার আনুগত্য কর। তিনি বলেন, রাছুলে আকরাম (দ:) আমাদের জন্য দু’টি জিনিস রেখে গেছেন। আল কোরআন এবং আল ছুন্নাহ ও তাঁর আহলে বায়াত। হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর পর আর কোনো নবী আসবে না। কুরআন হাদিসের নির্দেশিত পথে চলার মাধ্যমেই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি লাভ সম্ভব। মুসলিম মিল্লাতকে প্রিয় নবীজির প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা বৃদ্ধি এবং তার প্রতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আনুগত্য করতে হবে।
জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ইকবাল হুসাইন বলেন, যেখানে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর ফেরেস্তাদের নিয়ে এবং নবী-রাসুল, সাহাবী, ওলী-আউলিয়া সবাই নবীর প্রতি যথাযথ দরুদ ও সালাম প্রদর্শনসহ মিলাদুন্নবী পালন করে আসছেন, সেখানে উম্মতে মোহাম্মদী হিসেবে সমগ্র বিশ্বের রহমত, সমগ্র জাতির আদর্শ রাসুল (সাঃ)-এর মিলাদুন্নবী পালনে কৃপনতা না করে আমরা সুদৃঢ় হই। মিলাদুন্নবী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠান করি, বেশি বেশি দান-খয়রাতসহ মিলাদুন্নবীর মাসে শরীয়তসম্মত আমল করি।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএ’র সহ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালা প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শান্তি, মুক্তি, প্রগতি ও সামগ্রিক কল্যাণে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত হিসেবে প্রেরণ করেন। হযরত মুহম্মদ (স) ছিলেন শান্তি, নিরাপত্তা ও কল্যাণের মূর্ত প্রতীক ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’। দল-মত-গোত্র নির্বিশেষে আরবের জাতি-ধর্ম-বর্ণ সবার মধ্যে শান্তি চুক্তি ও সন্ধি স্থাপনের মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে মহানবী (সা.) সন্ত্রাসমুক্ত শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ব্রঙ্কস শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ্ জাকারিয়া বলেন, জন্মদিবস পর্যন্ত তাঁর স্মরণ সীমাবদ্ধ না রেখে, আল্লাহর জিকিরের ন্যায় সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্বনবির প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করি। মসজিদ-মাদ্রাসা, খানকাসহ ঘরে ঘরে নবীর আগমনি দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করি।
সালাম, ক্বিয়াম, বিশেষ মুনাজাত ও তবারক বিতরণের মাধ্যমে শেষ হয় পবিত্র জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী মাহফিল। দেশ, জাতির উন্নতি, বিশ্ব শান্তি ও করোনামুক্তির জন্য দোয়া করা হয় আখেরি মোনাজাত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন