শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বৃহৎ ব্যবসার ট্যাক্স বাড়িয়ে চুক্তিতে একমত জি২০

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ঐতিহাসিক এক করপোরেট ট্যাক্স বিষয়ক চুক্তিতে একমত হয়েছেন জি-২০ ভুক্ত দেশের শীর্ষ নেতারা। বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দেয়া এসব নেতারা বলেছেন, বৃহৎ ব্যবসার লভ্যাংশের ওপর শতকরা কমপক্ষে ১৫ ভাগ আয়কর বা ট্যাক্স দিতে হবে। এর আগে উদ্বেগ দেখা দেয় যে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কম আয়করের সুযোগ নিয়ে তাদের লভ্যাংশ আবার ব্যবহার করছে। তার প্রেক্ষিতে অর্থনীতিকে আরো সুসংহত করতে নেতারা বৈশ্বিক এই চুক্তিতে উপনীত হয়েছেন। চুক্তিটি উত্থাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আনুষ্ঠানিকভাবে তা অনুমোদন হলে বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৩ সালের মধ্যে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এ নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ইতালির রাজধানী রোমে শুরু হয়েছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। আবহাওয়া পরিবর্তন এবং কোভিড নিয়ে আলোচনা রয়েছে এজেন্ডায়। করোনা মহামারি শুরুর পর এটাই প্রথম এসব নেতা সশরীরে সমবেত হয়েছেন। জি২০ গ্রুপের সদস্য ১৯টি দেশ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এতে সশরীরে উপস্থিত হননি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারা দু’জনে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে যুক্ত হবেন। বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন এই চুক্তিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির জটিল সময়ে ঐতিহাসিক চুক্তি বলে বর্ণনা করেছেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, এই চুক্তি থেকে উপকৃত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা ও তার সাথে যুক্ত কর্মীরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনেক মেগা কোম্পানিকে অধিক পরিমাণ ট্যাক্স দিতে হবে। গ্লাসগোতে আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে অনুষ্ঠেয় সিওপি ২৬ শীর্ষ সম্মেলনের অল্প আগে শুরু হয়েছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন। সিওপি২৬ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে সোমবার। ফলে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন থেকে যে উপসংহার বা সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে, তা সিওপি২৬-এর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, অনেক দেশ আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিশ্রæতির বিষয়ে তীব্র মতবিরোধী অবস্থানে আছে এখনও। একীভ‚ত থাকার বার্তা নিয়ে দুই দিনের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। তিনি বিশ্ব নেতাদের বলেছেন, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কেউ একলা চলো নীতি গ্রহণ করা কোনো বিকল্প হতে পারে না। আমাদের মধ্যকার ব্যবধানকে অতিক্রম করে অবশ্যই একসাথে কাজ করতে হবে সবাইকে। ওদিকে জরুরি ভিত্তিতে যদি কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনা না যায় তাহলে ভবিষ্যত নিয়ে ভয়াবহতার সতর্কতা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া পরিবর্তনকে মানবতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় হুমকি বলে বর্ণনা করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন সভ্যতাকে পশ্চাতে নিয়ে যেতে পারে। তিনি স্বীকার করেন জি২০ অথবা সিওপি২৬ কোনো সম্মেলনই বৈশ্বিক উষ্ণতা থামাতে পারবে না। তবে পারবে, যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়। যদি এই গ্রহের তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে সীমাবদ্ধ করা যায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির মধ্যে সীমাবদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করছেন জি২০ শীর্ষ নেতারা। বলা হয়েছে, এটা করতে প্রতিটি দেশকে অর্থপূর্ণ এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে যে খসড়া করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি উৎস থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বছরে ১০,০০০ কোটি ডলার অর্থ উন্নত দেশগুলোকে তুলে দিতে হবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সঙ্কট মোকাবিলায়, যা দিয়ে তারা আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিলা করতে পারে। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে ধনী দেশগুলো এমন প্রতিশ্রæতি পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ওই বছরেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সম্মেলনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স ও বৃটেনের নেতারা মিটিং করেছেন। তাতে ইরানের পারমাণবিক কর্মকান্ড নিয়ে ভয়াবহ ও ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। এখানে উল্লেখ্য, জি২০ ফোরামের সদস্য নয় ইরান। তবে ওই দেশগুলো পরে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ইরান যদি তার পারমাণবিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখে, তাহলে ২০১৫ সালে যে ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল, তাতে ফেরত যাওয়ার বিপন্ন হতে পারে। ওই চুক্তির ফলে ইরানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। ওই চার দেশের নেতারা ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ভয়াবহ এক উত্তেজনা এড়ানোর জন্য গতিপথ পরিবর্তন করুন। বিবিসি, রয়টার্স।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন