পুরো গ্রিসই মার্কিন ঘাঁটি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে গ্রিস যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে রূপ নিয়েছে। গ্রিসের আলেকজান্দ্রোপলিতে যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য সামরিক স্থাপনার দিকে ইঙ্গিত করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন। খবর ডেইলি সাবাহর। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রিসের সঙ্গে নানা বিষয়ে তুরস্কের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। এর মধ্যে গ্রিসে মার্কিন সারমিক উপস্থিতি আরও ক্ষিপ্ত করে তুলেছে দেশটিকে। কিন্তু দেশ দুটির মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ বিদ্যমান। শরণার্থী সংকট ছাড়াও দেশ দুটির মধ্যে সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানের অধিকার নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে তুরস্কের। পাশাপাশি তুরস্কের বিতর্কিত দ্বীপ নিয়ে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যখন প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনার পারদ চরমে ঠিক সেই সময়ে এসে আগুনে ঘি ঢালছে ইসরাইল। এরদোগান বলেছেন, আপনারা (গ্রিস) তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বিশ্বকে বোকা বানাতে পারবেন কিন্তু আমাদের পারবেন না। শরণার্থী ইস্যুতে আঙ্কারার বিরুদ্ধে গ্রিসের অভিযোগের জবাবে বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। শরণার্থী ইস্যুতে সম্প্রতি গ্রিস ও তুরস্কের সম্পর্ক আবারও তিক্ত হতে শুরু করেছে। গ্রিস তাদের পানিসীমায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ এনেছে তুরস্কের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে এরদোগান বলেন, শরণার্থীদের সঙ্গে গ্রিসের আচরণের সব তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। আপনারা তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বিশ্বকে বোকা বানাতে পারবেন কিন্তু আমাদের পারবেন না। এরদোগান এসময় শরণার্থী সংকট নিয়ে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনেন। এরদোগান বলেন, শরণার্থী সংকটের মূল তুরস্ক এটি বলা এক ধরনের অকৃতজ্ঞতা, যেখানে তুরস্ক ৫০ লাখের মতো শরণার্থীর বোঝা বইছে। গ্রিস অভিযোগ করেছে, তুরস্ক ‘নৌদস্যু’ রাষ্ট্রের মতো আচরণ করছে। তারা শরণার্থীদের গ্রিসের সীমায় ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অপরদিকে তুরস্ক উল্টো গ্রিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে, গ্রিস শরণার্থীদের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করছে। গ্রিস ও তুরস্ক দুটি দেশই ন্যাটো জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। কিন্তু দেশ দুটির মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে মতবিরোধ বিদ্যমান। শরণার্থী সংকট ছাড়াও দেশ দুটির মধ্যে সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানের অধিকার নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এজিয়ান সাগরের তীরে তুরস্কের কানাক্কালে, বালিকেশির, ইজমির, মুগলা ও আইদিন এ পাঁচটি প্রদেশ অবস্থিত। এ প্রদেশগুলোর কাছে থাকা গ্রিসের দ্বীপ হয়ে শরণার্থীরা ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে। উন্নত জীবনের সন্ধানে এ এজিয়ান সাগর ব্যবহার করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপে হাজার হাজার মানুষ ঢোকার চেষ্টা করেছেন। এ বিপজ্জনক যাত্রায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, অনেকে আবার ধরা পড়েছেন। মূলত যুদ্ধ ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার মানুষ এ দুটি দেশকে ইউরোপে ঢোকার ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে। ডেইলি সাবাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন