সেই বিশ্বকাপ থেকেই শুরু। বিচ্ছিন্নভাবে দুই একজন ছাড়া প্রায় সব ম্যাচেই টপ অর্ডার ছিল পুরো ব্যর্থ। সে ধারা টিকে থাকল মিরপুরেও। পাকিস্তানের বিপক্ষে টপ অর্ডারে আমূল পরিবর্তনেও কাজ হয়নি। আরও একটি ব্যর্থতা শেষে দায়টা টপ অর্ডার ব্যাটারদের কাঁধে তুলেছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে নির্ধারিত ৪ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় সফরকারীরা।
অথচ এদিন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। হাসান আলির বেশ বাইরের বল তাড়া করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ (১)। অভিষিক্ত সাইফ হাসান (১) ছিলেন নড়বড়ে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের মাঝারি পেসেই কাবু হয়ে সিøপে উঠান সহজ ক্যাচ। ওয়াসিমের পরের ওভারে অনেকটা সরে এসে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বিদায় নেন নাজমুল হোসেন শান্ত (৭)। ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আক্ষেপই ঝরে মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে, ‘যখন আমরা ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তখন ব্যাট করার জন্য এটা একটি ভালো উইকেট ছিল। তবে বোলারদের জন্যও সাহায্য ছিল। এটা কোনো অজুহাত নেই। আমাদের ব্যাট হাতে আরও ভালো পারফরম্যান্স করা উচিত ছিল, বিশেষ করে টপ অর্ডারের।’
টপ অর্ডারের ব্যর্থতার কারণে পাওয়ার প্লেতে আরও একবার হতাশ হয় বাংলাদেশ। প্রথম ছয় ওভারে মাত্র ২৫ রান তুলতে সক্ষম হয় দলটি। ফলে শুরুতেই কোণঠাসা টাইগাররা। তা থেকে বের হতে পারেনি দলটি। যদিও সাদামাটা পুঁজিতে লড়াই জমিয়ে দিয়েছিলেন বোলাররা। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বোলারদের লড়াইকে বাহবা দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের কৃতিত্ব দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘বিশ্বকাপেও টপ অর্ডারে ভালো পারফরম্যান্সের অভাব ছিল। ১৪০ করতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু ১২৭ রান নিয়ে শুরুর দিকে কয়েকটি উইকেট... বোলাররা দারুণ কাজ করেছে। আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম। শেষ পর্যন্ত, কৃতিত্ব পাকিস্তানের শেষ দুই ব্যাটার (মোহাম্মদ) নাওয়াজ এবং শাদাবের (খান)। তারা সত্যিই ভাল ব্যাটিং করেছেন।’
পঞ্চম বিশেষজ্ঞ বোলার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের জায়গায় দুই বাঁহাতির জন্য মাহমুদউল্লাহ ব্যবহার করেন নিজের অফ স্পিন। প্রথম ২ ওভারে কেবল ৯ রান দিলেও তিনি শেষ ওভারে দেন ১০ রান। বোলিং ফিগার তার পরও খারাপ নয়। কিন্তু আসল কাজ যেটি, সেই উইকেট এনে দিতে পারেননি দলকে। ফখর ও খুশদিলের জুটি তাই গড়ে ওঠে। শেষ দিকে উইকেট হাতে থাকায় মূল বোলারদের উড়িয়ে পাকিস্তান জিতে যায় ম্যাচ। অথচ লেগ স্পিনাররা বরাবরই উইকেটশিকারি বোলার। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান যখন প্রবল চাপে, তখন অনায়াসেই আমিনুলকে বোলিংয়ে আনা যেত। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ছোট কথায় জানালেন, আমিনুলকে কেন বোলিং করাননি, ‘পরিকল্পনা ছিল বোলিং করানোর। পরে যেহেতু দুটি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ছিল, তাই আমাকে বোলিং করতে হয়।’
দলীয় ৪০ রানে পাকিস্তানের ৪ উইকেট তুলে নেওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে ফখর জামান এবং খুসদিল শাহর ৫৬ রানের জুটিই হতাশা ডেকে আনে। এরপর অবশ্য ১৬ রানের ব্যবধানে এ দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ দিকে নাওয়াজের ৮ বলে ১৮ এবং শাদাবের ১০ বলে ২১ রান বদলে দেয় সব। উল্টো চার বল এবং চার উইকেট হাতে রেখে জতে যায় পাকিস্তান। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি একই ভেন্যুতে শুরু হবে দুপুর ২টায়। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি আগামী ২২ নভেম্বর একই সময়ে ও ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন