সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা পলাশ (৪৩)। পিতার নাম আব্দুস সালাম। গত ৫ বছর আগেও ছিলেন গাড়ি চালক। এখন তার অনেক গাড়ি। বনে গেছেন কোটিপতি। নয়টি পিকআপ, দুইটি প্রাইভেটকার, তিনটি জেক গাড়ি ও বহুতল ভবনের মালিক ড্রাইভার তিনি।
কিন্তু অল্প সময়ে তিনি কি ভাবে এত টাকার মালিক হলেন এ নিয়ে এলাকাবাসীর কৌতুহলের শেষ নাই। একাধিক মামলার আসামী এই পলাশের একটি বাহিনীও রয়েছে। নানা অপকর্মের সাথে জড়িত সেই বাহিনীর সদস্যরা।
অভিযোগ জানা গেছে, পলাশ রাতা রাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার আসল রহস্য মাদক ব্যবসা আর রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার দালালি। হঠাৎ বিত্তবান হয়ে যাওয়া পলাশকে নিয়ে এলাকায় কৌতুহল সৃষ্টি হলেও তার আয়ের উৎস খুঁজে পাচ্ছিলনা স্থানীয়রা।
তার বিত্তবান হওয়ার রহস্য প্রকাশ পায় গত ১৯ মার্চ আড়াইহাজার থানার বিশনন্দী ফেরীঘাট এলাকায় র্যাবের অভিযানে সবজিবাহী পিকআপ আটক করে ৭১ কেজি গাঁজা উদ্ধারের পর। সেদিন গাঁজাসহ আটক হওয়া (ঢাকা-মেট্রো-ন-১৩-৩২৮১) পিকআপটির মালিক এই পলাশ। বর্তামানে গাড়িটি আড়াইহাজার থানায় জব্দ রয়েছে।
সেদিন গাজাসহ আটক হয় নূর আলম ও আলাউদ্দিন। তাদের একজন পলাশের গাড়ির চালক। বিত্তবান হওয়ার পর থেকেই নাসিক ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনের অন্যতম সহযোগী হয়ে পড়ায় পলাশ এলাকায় দাপট দেখাতে শুরু করে। ভয়ে তার আয়ের উৎস নিয়ে তেমন মাথা ঘামায়নি স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পলাশ ছিলেন অন্যের গাড়ির চালক। তখন তিনি মাদক পাচারে জড়িয়ে যান। কিছুদিনেই মধ্যে নিজে একটি গাড়ি কিনে ফেলেন। অন্যের গাড়ি বাদ দিয়ে নিজের গাড়ি চালানো শুরু করেন। মাদকের কাঁচা টাকায় অল্পদিনে একে একে করে ফেলেন নয়টি পিকআপ, তিনটি জেক ও দুইটি প্রাইভেটকার।
মিজমিজি এলাকায় জমি কিনে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ কাজও চলছে। এরই মধ্যে বাড়ির তিনতলার কাজ শেষ হয়েছে। চতুর্থ তলার কাজ চলামান রয়েছে। এখন নিজে গাড়ি চালানো ছেড়ে রাজকীয় বেস ধারণ করে সঙ্গবদ্ধ একটি বাহিনী গড়ে তুলে কৌশলে মাদক পাচার ও ব্যবসা চালাচ্ছেন এই পলাশ।
অভিযোগ রয়েছে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট করার দালালি করতে গিয়ে ধরাও পড়েছিলেন পলাশ। বি-বাড়িয়া ও কক্সবাজার থেকে পলাশের গাড়ি দিয়ে অবিনব কৌশলে মাদকের বড় বড় চালান আনা হয়।
জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ি পলাশ সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি মারামারি হামলা ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভূক্ত আসামি। গত বছরের এপ্রিল মাসের শুরুতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পলাশ তার বাহিনী নিয়ে একই এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে হাসানের উপর হামলা চালিয়ে মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় পলাশসহ ৬জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে একই বছরের ১৫ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধিন রয়েছে।
এছাড়াও একটি চুরির মামলায় ৫ দিন জেল খাটে পলাশ। মাদ্রাসা রোড মনসুরের দোকানের পাশে জুয়াড়ি পলাশ জুয়ার আসর বসায়।এ বিষয়ে কথা বলতে পলাশের মোবাইল ফোনে (০১৭১০----৬৫১) এ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। #
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন