শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

হ্যাটট্রিক দিয়েই মেসির রেকর্ড

প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ইংলিশ লিগে খেললে গতির ফুটবলে লিওনেল মেসি নাকি এত বেশি গোল পেতেন না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পরশু ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গ্রæপ পর্বের তৃতীয় ম্যাচটিও হয়ে থাকল সেই সব সমালোচকদের জন্য উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে। মেসি শুধু খেলেননি; গতি, পায়ের সেই চেনা জাদু আর দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে শুধু খেলেন-ইনি, রীতিমত ম্যান সিটির রক্ষণকে নিয়ে খেলেছেনও। সাবেক ক্লাবে ফেরাটাও তাই আবারো সুখকর হয়নি পেপ গার্দিওলার। ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনার ৪-০ গোলের জয়ে মেসি একাই করলেন ৩ গোল। চোটের কারণে আসরে এক ম্যাচে ছিলেন অনুপস্থিত, বাকি দুই ম্যাচের দুটিতেই হ্যাটট্রিক। সব মিলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইংলিশ দলের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচে ১৫ গোল আর্জেন্টিনা অধিনায়কের।
গ্রহের সেরা খেলোয়াড় গোল তিনটি করেন ১৭, ৬১ ও ৬৯ মিনিটে। প্রথমটি ছিল সিটির রক্ষণের ভুলে অনেকটা একক প্রচেষ্টাই ক্লাদিও ব্রাভোকে বোকা বানিয়ে। দ্বিতীয়টি ঝড়ের বেগে বক্সের ভেতর ঢুকে নিখুঁত শটে। আর তৃতীয়টি সুয়ারেজর কাছ থেকে পাওয়া উপহারই বলা চলে। চাইলে সুয়ারেজ নিজেই লক্ষ্যে শট নিতে পারতেন, কিন্তু হ্যাটট্রিকের অপেক্ষায় থাকা বন্ধুটি তখন ছিল আরো সহজ অবস্থানে। তাই বন্ধুর দিকেই বলটি বাড়ান সুয়ারেজ। কোনো ভুল করেননি ফুটবল জাদুকর। ডান পায়ের টোকায় পূর্ণ করেন হ্যাটট্রিক। গোলটি ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঘরের মাঠে তার ৫০তম। রাউল গঞ্জালেজকে (৪৯) টপকে ইউরোপিয়ান ফুটবলে ঘরের মাঠে গোলের অর্ধ শতক পূর্ণ করেন রেকর্ড ৫ বারের বিশ্বসেরা। চতুর্থ গোলেরও সুযোগ এসেছিল তার সামনে। দ্বিতীয়ার্ধে ডি বক্সে অপ্রতিরোধ্য গতিতে বল নিয়ে ছুটছিলেন, উপায় না দখে ফাউল করেই থামানো হয় তাকে। কিন্তু পেনাল্টি শট নিজে না নিয়ে সুযোগ দেন আরেক বন্ধু নেইমারকে। তার দুর্বল শট রুখে দেন সিটি গোলরক্ষক। দুই মৌসুম মিলে ২৭টি স্পট কিকে এটি ছিল বার্সার ১১তম পেনাল্টি মিস। ৮৯তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে পেনাল্টি মিসের হিসাবটা মিটিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
ম্যাচের চিত্র স্বাগতিকদের জন্য অবশ্য এতটা সহজ ছিল না। মার্ক টার স্টেগেন বার্সার গোলের সামনে যেন ছিলেন চীনের প্রাচীর হয়ে। অসাধারণ নৈপুণ্যে সিটিকে গোল বঞ্চিত করেন কয়েকবার। এছাড়া এই জয়ের মূল্য লুইস এনরিকেকে দিতে হয়েছে জর্ডি আলবা ও জেরার্ড পিকেকে হারিয়ে। প্রথমার্ধেই চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন দুই রক্ষণ সেনা। ৭৩তম মিনিটে লাল কার্ড দেখেন আরেক ডিফেন্ডার জেরেমি ম্যাথিউ। এর ২০ মিনিট আগে অবশ্য ১০ জনের দলে পরিণত হয়েছিল সফরকারীরা। অভিজ্ঞ ব্রাভো নিশ্চিত গোল বাঁচাতে গিয়ে বক্সের বাইরে এসে বল ঠেকান হাত দিয়ে। সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সেলোনার সাবেক চিলিয়ান গোলরক্ষককে।
ম্যাচ শেষেও জয়ের পুরো কৃতিত্বই মেসিকে দিলেন এনরিকে, ‘সে ছিল ফল নির্ধারক। ম্যাচের সব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় জড়িত ছিল সে। মেসি এমনভাবে ম্যাচটি শেষ করেছে যেন সে কোনো স্কুলের মাঠে খেলছিল। সে যে চোট কাটিয়ে ফিরেছে এটা তার কাছে কোনো ব্যাপার না।’ গার্দিওলার মুখে অবশ্য বার্সা বন্দনা, ‘বার্সা আপনাকে শাস্তি দিতে পারে, তাদের খেলার মান অনেক বেশি ভালো।’ এর আগে একই আসরে বায়ার্নের হয়ে একবার ন্যু ক্যাম্পে এসেছিলেন পেপ। সেবারো ফিরতে হয়েছিল ৩-০ গোলের হার নিয়ে। সাকুল্যে ৩ বার বার্সার মুখোমুখিতে ৯ গোল হজম করলেন এই স্প্যানিশ কোচ। ৩ ম্যাচে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রæপের শীর্ষেই আছে কাতালানরা, সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সিটি।
একই আসরের খেলায় টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে আরেক স্প্যানিশ ক্লাব ও গেলবারের ফাইনালিস্ট অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। রাশিয়ান ক্লাব রোস্তভের বিপক্ষে তাদের জয়টি ছিল ফেরেইরা কারাসকোর করা একমাত্র গোলের। ফলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে তারা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বায়ার্ন মিউনিখের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। এদিন তারা নিজেদের মাঠে পিএসভি ইন্দোভেনকে ৪-১ গোলে হারায়। একই রাতে ঘরের মাঠ এমিরেটসে মেসুত ওজিলের হ্যাটট্রিকে বুলগেরিয়ান ক্লাব লুদোগোরেতসকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয় আর্সেনাল। ওয়েঙ্গারের দলের হয়ে একটি করে গোল করেন থিও ওয়ালকট, অ্যালেক্সিস সানচেস ও অক্সালেট চেম্বারলাইন। ফলে ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে গানারা। গ্রæপের অন্য ম্যাচে সুইস ক্লাব বাসেলকে ৩-০ গোলে হারিয়ে একই পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে পিএসজি।

একনজরে ফল
বার্সেলোনা ৪-০ ম্যানচেস্টার সিটি
রোস্তভ ০-১ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
আর্সেনাল ৬-০ লুদোগোরেতস
বায়ার্ন মিউনিখ ৪-১ পিএসভি ইন্দোভেন
প্যারিস সেন্ট জার্মেই ৩-০ বাসেল
সেল্টিক ০-২ মশেনগøাডবাখ
ডায়নামো কিয়েভ ০-২ বেনফিকা
নাপোলি ২-৩ বেসিকতাস

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন