বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বৈঠকে নেই, তবে ঐক্যে আছে তৃণমূল

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২১, ১:১৬ পিএম

জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল বনাম কংগ্রেসের সম্পর্ক এখন যথেষ্ট শীতল। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, আজ, সোমবার থেকে শুরু হতে চলা সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যে কি দুই কংগ্রেস একে অপরের পাশে থাকবে, নাকি ভিন্ন পথে হাঁটবে?

অধিবেশন শুরুর আগে আজ বিরোধী দলগুলো নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। কিন্তু, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় ওই বৈঠকে যোগ দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। তাদের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে কংগ্রেস শিবিরের একাংশের দাবি, মুখে মোদী-বিরোধিতার কথা বললেও আসলে বিরোধী ঐক্য চাইছে না তৃণমূল। সেই কারণেই তারা কংগ্রেসের ওই বৈঠক এড়িয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, বিজেপি-বিরোধিতার প্রশ্নে তারা কংগ্রেসের পাশে থাকবে।

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন টুইট করে জানিয়েছেন, 'সংসদে বিরোধী ঐক্য থাকবে। সাধারণ বিষয়গুলো বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করবে।' তাঁর ব্যাখ্যা, সব ইস্যুতে কংগ্রেসের হাত ধরে না-চলার অর্থ এই নয় যে বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরছে। তবে অন্য বিরোধীদের সঙ্গে তৃণমূলের যে ফারাক রয়েছে, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।

তার যুক্তি, 'আরজেডি, ডিএমকে, সিপিআই এবং সিপিএম- এরা সকলেই কংগ্রেসের ভোটসঙ্গী। এনসিপি-শিবসেনা এবং ঝাড়খণ্ড জনমুক্তি মোর্চা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে সরকার চালায়। কংগ্রেস কিন্তু আমাদের নির্বাচনী সহযোগী নয় এবং আমরা তাদের সঙ্গে সরকারও চালাই না। এটাই হলো পার্থক্য।' অর্থাৎ পরোক্ষে এটাই যেন বুঝিয়ে দেওয়া যে, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে তৃণমূলকে যোগ দিতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ, কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের কোনও 'দেওয়া-নেওয়া'র রাজনীতি নেই, কংগ্রেসের উপর তারা নির্ভরশীলও নয়। তবে বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে তারা থাকবে কংগ্রেসের পাশেই। ডেরেকের স্পষ্ট কথা, 'কংগ্রেসের সঙ্গে আমরা কোনও যুদ্ধ করছি না, রবিবার সরকারের ডাকা সর্বদল বৈঠকেও আমরা পাশাপাশি বসেছিলাম। আমরা বিজেপিকে কোনও ভাবেই সুবিধা পেতে দেব না।'

খাড়্গের বৈঠকে না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত তৃণমূল জানিয়ে দেওয়ার পরেই কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী কটাক্ষ করেছিলেন, 'কোনও কোনও বিরোধী দল এমনও আছে, প্রকাশ্যে হয়তো তারা বিরোধী, কিন্তু আসলে তারা সরকারপক্ষের সঙ্গেই রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হলে তারা সরে দাঁড়ায়। কিন্তু কংগ্রেস এমন করে না।' রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই কটাক্ষেরই পাল্টা দিয়েছেন ডেরেক।

বিরোধী বৈঠকে যোগদানের প্রসঙ্গ কংগ্রেস ও তৃণমূলের দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করলেও, দু'দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে অনেক আগেই। ত্রিপুরা, গোয়া, মেঘালয়-সহ নানা রাজ্যে কংগ্রেস সদস্যদের 'ভাঙানোর' অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার সম্প্রতি জোড়াফুলের নেতারা লাগাতার নিশানা করছেন হাত শিবিরকে। গত সপ্তাহে দিল্লি সফরে এসে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তীক্ষ্ণ জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, 'প্রতিবার দিল্লি এলে দেখা করতে হবে, এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।' তার পর থেকে দু'দলের দূরত্ব যেন বেড়েই চলেছে।

এই পরিস্থিতিতে এদিন নয়াদিল্লিতে নিজেদের দলের অবস্থান নিয়ে লোকসভার তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, 'আমরা কাউকে কংগ্রেস ছেড়ে আসতে বলছি না। কংগ্রেসের আদর্শে বিশ্বাসীরা মনে করছেন, বিজেপি-বিরোধিতায় কংগ্রেসের তুলনায় অনেক ভালো ফল করছে তৃণমূল। প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে আসা উচিত আমাদের, এটাই ভাবা হচ্ছে নানা মহলে।'

কংগ্রেস শিবির থেকে বলা হচ্ছে, সনিয়া-রাহুলের মূল লক্ষ্য ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পুরো বিরোধী শিবিরকে গুছিয়ে নেওয়া। সুদীপের অবশ্য কটাক্ষ, 'কংগ্রেস নিজের ঘরই তো গোছাতে পারছে না! আগে নিজেদের ভালো করে গুছিয়ে নিক, তার পরে না-হয় বিরোধীদের গোছানোর চেষ্টা করবে।' সূত্র: টিওআই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন