বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামলী লীগ মনোনিত প্রার্থী হয়েছেন নাহিদ সুলতানা। তার বিরুদ্ধে বিএনপির রাজনীতি করার অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
গতকাল সোমবার দুপুরে সান্তাহার শহরের জেলা পরিষদ ডাকবাংলো প্রাঙ্গনে লিখিত বক্তব্যে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদুল হক বলেন, নাহিদ সুলতানা বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে তার নাম নেই এবং তিনি কখনও আওয়ামী লীগ করেননি। তিনি যুদ্ধপরাধ মামলায় ফাঁসির দ-প্রাপ্ত আসামি সাবেক বিএনপি দলীয় সাংসদ আবুল মোমেন তালুকদারের কাছে গিয়ে ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপি’তে যোগদান করেন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনেও নাহিদ সুলতানা আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট করেন এবং বিএনপি দলীয় প্রার্থী মোজাহার হোসেনের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেয়। আওয়ামী লীগ এবার তাকে এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেন, নাহিদ সুলতানা সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোন সদস্য নয়। তিনি ও তার স্বামী মাদুর ও পোল্ট্রি ব্যবসা করে সফলতা লাভ করেন। এ কারণে তিনি নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরষ্কার গ্রহণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে থাকা পুরষ্কার গ্রহণের ছবি কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু সান্তহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধী আব্দুল মোমিন তালুকদারের সাথে বিএনপির দলীয় রাজনীতি করায় তাকে কখনও সদস্য হিসেবে গ্রহন করেনি।
সম্প্রতি বিএনপির সাবেক সংসদ আব্দুল মোমিন তালুকদারের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসির রায় হয়। আগামী পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামলী লীগ মনোনিত প্রার্থী হিসাবে নাহিদ সুলতানাকে মনোনয়ন দেয়। এতে বিএনপিতে যোগদানের একটি ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তার প্রার্থিতা স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড নাহিদ সুলতানাকে সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়।
সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, সর্বশেষ ২০২০ সালে গঠিত সান্তাহার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটিতে নাহিদ সুলতানার কোন নাম নেই। তাকে কখনও আওয়ামী লীগের সদস্য করা হয়নি। গত ২৪ নভেম্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশের কারণে তাকে দলীয় প্রার্থীদের নামের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়।
এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কুদরত-এ-এলাহী কাজল বলেন, নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন সদস্য ছিল না। সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশের ভিত্তিতে নবাগত সদস্য হিসেবে তার নাম নির্বাচনী বোর্ডে পাঠানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে নিয়ে নাহিদ সুলতানা মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন