তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের ‘অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে- মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল।
গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠক করেন ব্যারিস্টার রূহুল কুদ্দুস কাজল।
তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দৌহিত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান যে অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ও নারী বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন, তার প্রতি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমাদের জানা মতে, একটি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হলেও ব্যারিস্টার জাইমা রহমান নিজে কোনও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তিনি দেশের একজন অত্যন্ত মেধাবী তরুণী। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার হিসেবে স্বীকৃতি তার মেধার পরিচয় বহন করে। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আইন পেশায় কর্মরত। স্বাভাবিকভাবেই তিনি দেশেও আইন পেশায় নিয়োজিত হবেন। সেই হিসেবে তিনি আমাদের আইনজীবী পরিবারের একজন সদস্য। আমাদের এই মহান পেশার অন্যতম বৈশিষ্ট্য, অগ্রজরা সবসময অনুজদের জন্য অনুকরণীয়। আমাদের দায়িত্ব অনুজদের জন্য নিরাপদ পেশা পরিচালনার পরিবেশ সৃষ্টি করা। কিন্তু সরকারের একজন ‘কথিত দায়িত্বশীল’ প্রতিমন্ত্রী আমাদের এই তরুণ ব্যারিস্টার সম্পর্কে যে লাগামহীন মন্তব্য করেছেন তা শুধুমাত্র নিন্দনীয়ই নয়-পরিত্যাজ্য। তার এই মন্তব্য দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য, বিশেষ করে নারীর প্রতি বিদ্বেষক ও চরম অবমাননাকর।
ব্যারিস্টার কাজল বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে ডা. মুরাদ হাসান বিভিন্ন ব্যক্তি, বিশেষ করে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সম্পর্কে লাগামহীনভাবে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেই চলেছেন। এমনকি তিনি দাবি করেন যে তিনি যা বলেন তা তিনি সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েই করেন।
আমাদের সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদের তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহীত আচরণ করবো মর্মে মন্ত্রী হিসেবে তিনি যে সাংবিধানিক শপথ গ্রহণ করেছেন তিনি ক্রমাগতভাবে তার নানাবিধ মন্তব্য/কর্মকা-ের মাধ্যমে তা ভঙ্গ করে চলেছেন। জাতি হিসেবে এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রতিমন্ত্রীর মতো একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে তার এসব অযাচিত মন্তব্য জাতি হিসেবে আমাদের কলঙ্কিত করছে। আমরা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সম্পর্কে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান যে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে জাতির সামনে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সমিতির সিনিয়র সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান, সদস্য ব্যারিস্টার এসএম ইফতেখার উদ্দীন মাহমুদ, পারভীন কাওসার মুন্নি ও ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রাজীব প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন