মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

কাবাডির প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষণ

প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি হলেও সাফল্যের ধারাবাহিকতায় থাকতে পারছে না লাল-সবুজরা। সাউথ এশিয়ান গেমস ও এশিয়ান গেমসে সফল হয়ে অতীতে সাড়া জাগালেও এখন যেন অনেকটাই অনুজ্জ্বল বাংলাদেশের কাবাডি। ভারতের আহমেদাবাদে চলমান বিশ্বকাপ কাবাডিই তার প্রমাণ। বিশ্বসেরা এ আসরের ‘এ’ গ্রæপে স্বাগতিক ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে লাল-সবুজের পুরুষ কাবাডি দলকে। বিশ্বকাপের ব্যর্থ মিশন শেষে শুক্রবার রাতে ঢাকায় ফিরেছে জাতীয় কাবাডি দল।
দেশে ফিরেই দলের কর্মকর্তাদের দাবি, উন্নত প্রশিক্ষণ না পেলে বাংলাদেশের কাবাডি একচুলও এগুবে না। ব্যর্থতা বারবারই ফিরে আসবে শুধুমাত্র উন্নত প্রশিক্ষণের অভাবে।
ঢাকায় ফিরে জাতীয় পুরুষ কাবাডি দলের কোচ সুবিমল চন্দ্র দাস গতকাল বলেন, ‘এবারের বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ভারত অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায়। সেই প্রভাব পড়ে বাংলাদেশ শিবিরে। ফলে খেলোয়াড়রাও মানসিকভাবে চাপে ছিল। তারপরও কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেই মোতাবেক ছেলেরা খেলেও ছিল। প্রথম পাঁচ মিনিটে লোনা নিয়ে ১০-০ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলাম আমরাই। পরে তুহিন তিনটি ক্যাচ মিস করে। তাই বিরতিতে যেতে হয় ১৫-১৫ সমান পয়েন্টে থেকেই। কিন্তু শেষ আড়াই মিনিট আগে টাইম আউট নিয়ে খেলোয়াড়দের বলেছিলাম, অন্তত এক পয়েন্টে হলেও জিতে ম্যাট ছাড়তে হবে। এরপরেই নাটকীয় ঘটনা ঘটে গেল। অধিনায়ক আরদুজ্জামান একটি রেইড দিতে গিয়ে ধরা পড়ল। শুরু হলো কোরিয়ার টার্নিং পয়েন্ট। আমাদের সীমানায় রেইড দিতে এলো কোরিয়ার জ্যামি কুল লি। সোলায়মান কবির তাকে ধরার জন্য ড্রাইভ দিল। পারল না। জিয়া পুশ করতে গিয়ে ধরা খেলো। তুহিনও পুশ করতে গিয়ে ব্যর্থ। সুপার রেইডে জ্যাং কুম লি তিন পয়েন্ট নিয়ে গেল। ফলে উল্টো লোনা নিয়ে আমাদের ব্যাকফুটে ফেলে দিল কোরিয়া। আর এ ভুলের জন্যই আমাদের খেসারত দিতে হলো হেরে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত উন্নত প্রশিক্ষণ না পেলে আমাদের কাবাডি কোনোভাবেই এগুবে না। খেলোয়াড়দের থাকতে হবে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। দলে ভালো মানের রেইডার গড়ে তুলতে হবে। আগে জিয়া (বর্তমানে কোচ) কিংবা সেনাবাহিনীর মুসা’র মতো ভালো মানের রেইডার ছিল। বোনাস পয়েন্ট তারা আনতে পারত। কিন্তু এখন সেরকম রেইডার নেই। জাকিরকে নিয়ে আশা থাকলেও সে বিশ্বকাপে ভালো করতে পারেনি। দু’টি কর্ণার ফেরদৌস ও সবুজ মিয়াও তাদের সেরাটা খেলতে পারেনি। দুর্বল রেইডিংয়ের কারণেই আমরা সেমিফাইনালে যেতে পারিনি।’
কাবাডিতে থাইল্যান্ড, কোরিয়া ও কেনিয়া প্রসঙ্গে সুবিমলের মন্তব্য, ‘থাইল্যান্ড দু’টি অনুশীলন ম্যাচের দু’টিতেই হেরেছে। আসলে থাইল্যান্ড, কোরিয়া ও কেনিয়া তাদের রাগবি দলকে কাবাডিতে এনেছে অনুশীলনের মাধ্যমে। তারা ভারতীয় কোচ নিয়ে গিয়ে অনুশীলন করিয়েছে দলকে। ভারতীয় জগমোহন কিলারু তো ইংল্যান্ডের কোচই ছিলেন। আর কেনিয়া নিয়মিত খেললে ভবিষ্যতে জায়ান্ট হবে।’
দলের ম্যানেজার নিজামউদ্দিন চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘দেড় মাসের অনুশীলনে বিশ্বকাপে ভালো করাটা খুব কষ্টকর। এই স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে পদক জেতার ভাবনাটাও দুঃস্বপ্নের মতো। তারপরও আমরা সেখানে গিয়ে পাঁচটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। যার মধ্যে ইরান ছাড়া বাকি চারটিতেই জিতেছি। বিশ্বকাপে আসা দক্ষিণ কোরিয়া আটমাস অনুশীলন করেছে। জাপান তো তিন/চারমাস পর পর ভারতে গিয়ে অনুশীলন করে। তারপরও আমি বলব আমরা খেলেই হেরেছি। তবে আমাদের দরকার উন্নত প্রশিক্ষণের। সেটা পেলে বাংলাদেশের কাবাডি এগিয়ে যাবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন