শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অ্যাশেজে ‘নো বলে’ তুলকালাম!

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১:০১ এএম

নিজের প্রথম ওভারেই ডেভিড ওয়ার্নারকে বোল্ড করে দিলেন বেন স্টোকস। সতীর্থদের সঙ্গে মেতে উঠলেন উদযাপনে। তবে টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল ইংলিশ অলরাউন্ডারের ডেলিভারিটি ছিল ‘নো’ বল। বেঁচে গেলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। কিন্তু নাটকীয়তার তখনও বাকি! পরে স্বাগতিক ব্রডকাস্টার চ্যানেল সেভেনের ক্যামেরায় ধরা পড়ে, ওয়ার্নারের (বেঁচে যাওয়া) বলটির আগের তিনটি ডেলিভারিও ছিল ‘নো’। নিজের প্রথম পাঁচ ওভারে মোট ১৪টি ‘নো’ বল (ওভারস্টেপ) করেন স্টোকস। এর মধ্যে কেবল একবারই তা ধরতে পারেন মাঠের আম্পায়ার। আরেকটি ধরা পড়ে থার্ড আম্পায়ার টিভি রিপ্লে দেখার পর, যে বলে বেঁচে যান ওয়ার্নার।
টেস্টের বর্তমান প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, সামনের পায়ের ‘নো বল’ এর জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি বলের পর বোলারের সামনের পায়ের অবস্থান দেখবেন থার্ড আম্পায়ার এবং ‘নো বল’ হলো কি-না, সে বিষয়ে কথা বলবেন মাঠের আম্পায়ারের সঙ্গে। গত বছর ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্টে প্রযুক্তিটি প্রথমবার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ব্রিজবেনে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে পায়ের ‘নো বল’ ধরার প্রযুক্তি ম্যাচ শুরুর আগে থেকে কাজ করেনি। ফলে এই ম্যাচে খেলা হচ্ছে আগের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, যেখানে কোনো বলে উইকেট পড়লেই কেবল তা পরীক্ষা করে দেখবেন থার্ড আম্পায়ার।
গতকাল গ্যাবায় ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের ১৩তম ওভারে স্টোকসের চতুর্থ বলে ওয়ার্নার যখন বেঁচে যান, তখন ১৭ রানে ব্যাট করছিলেন তিনি। প্রযুক্তি না থাকলেও এত ‘নো’ বল মাঠের আম্পায়ারের চোখ এড়িয়ে গেল কীভাবে, তা বড় প্রশড়বই!
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদকর্মী ও ধারাভাষ্যকার অ্যালিসন মিচেল চ্যানেল সেভেনকে বলেন, ‘এই টেস্ট শুরুর আগে আইসিসিকে যে প্রযুক্তি সরবরাহ করা হয়েছে, তা ঠিকমতো কাজ করেনি। অর্থাৎ এই টেস্ট ম্যাচ ২০২০ সালের আগের কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে, যেখানে শুধু উইকেট নেওয়ার ডেলিভারিতেই দেখা হতো বোলারের পা দাগ পেরিয়ে গেছে কি না।’ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের কাছে, টেস্ট μিকেটের সবচেয়ে বড় সিরিজে এমন ঘটনা ‘হতাশার’ এবং সাবেক ওপেনার ম্যাথু হেইডেনের চোখে ‘অবিশ্বাস্য ব্যাপার।’ হেইডেন বলেন, ‘খেলা থেকে এ বিষয় পরিহার করতে হবে। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে পুরো সেবাই পেতে হবে। কারণ, প্রযুক্তি থাকলে মাঠের আম্পায়াররা খুব স্বাভাবিকভাবেই এটার ওপর ভরসা রাখবেন।’ অবাক হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি আম্পায়ার সাইমন টোফেলও, ‘এখন তো প্রযুক্তির সাহায্যে সব বল পর্যবেক্ষণ করার কথা। আমি বুঝতে পারছি না, কেন এই বলগুলো পর্যবেক্ষণ করা হলো না। মাঠের আম্পায়ারদের সাহায্য করার জন্য তো আইসিসির প্রযুক্তিবিদরাও রয়েছেন।’
ব্রিসবেন টেস্টে মাঠে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন পল রেইফেল ও রড টাকার। টিভি আম্পায়ার হিসেবে আছেন পল উইলসন। তিনজনই অস্ট্রেলিয়ান। তাদেরও সমালোচনা করেন পন্টিং, ‘কিছু নো বল মোটেও ছোটখাটো ছিল না। (দাগ থেকে) ৬ ইঞ্চিও পরিমাণও (পা) বেরিয়ে গেছে। এখনকার আম্পায়াররা কি অলস হয়ে যাচ্ছেন? ভালোমতো দেখেন না? আগে বৈধ ডেলিভারিতে উইকেট পড়লেও তারা নো বল ডাকার কারণেই এ প্রযুক্তি এসেছে।’
১৭ রানে বেন স্টোকসের বলে বোল্ড হয়েও ‘নো’ বলের জন্য বেঁচে যান ডেভিড ওয়ার্নার, পঞ্চাশের আগে আরেকবার রোরি বার্নসের কল্যাণে জীবন পান তিনি। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে বাঁচেন রান আউট থেকেও। তবু সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তার। অস্ট্রেলিয়ার দারুণ শুরুর পর ওলি রবিনসন, মার্ক উড, ক্রিস ওউকসদের তোপে খেলাও ফিরেছিল ইংল্যান্ড। তবে জো রুটের দলকে হতাশায় পুড়ান ট্রেভিস হেড। ওয়ানডে মেজাজে ৮৫ বলে পেরুন সেঞ্চুরি। তার ব্যাটে শক্ত অবস্থানে চলে গেছে অস্ট্রেলিয়া। গতকাল গ্যাবায় অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৭ উইকেটে ৩৪৩ রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। লিড নিয়ে নিয়েছে ১৯৬ রানের। অজিদের আনন্দে ভাসিয়ে ৯৬ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় ১১২ রানে অপরাজিত আছেন পাঁচে নামা হেড। অথচ এই টেস্টে তার জায়গা পাওয়া নিয়ে ছিল সংশয়। উসমান খাওয়াজার সঙ্গে লড়াইয়ে জিতে জায়গা নিয়ে এমন ইনিংস খেললেন যাতে তার ভিত হয়ে গেল পোক্ত।
আগের দিন প্যাট কামিন্সের তোপে ইংল্যান্ডকে ১৪৭ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর আর ব্যাট করতে নামা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার।

ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ১৪৭।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস : ৮৪ ওভারে ৩৪৩/৭ (ওয়ার্নার ৯৪, হ্যারিস ৩, লাবুশান ৭৪, স্মিথ ১২, হেড ১১২*, গ্রিন ০, ক্যারি ১২, কামিন্স ১২, স্টার্ক ১০* ; ওকস ১/৫৬, রবিনসন ৩/৪৮, উড ১/৫৭, স্টোকস ০/৫০, লিচ ১/৯৬, রুট ১/২৯)। দ্বিতীয় দিন শেষে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন