অতিথি পাখি ভিড় করেছে চট্টগ্রামের রাউজানে। প্রতি বছর শীতকালে হাজার হাজার অতিথি পাখির হয়ে উঠে রাউজানের প্রতিটি জনপদ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাউজানের লস্কর উজির দীঘিতে দাপিয়ে বেড়ায় অতিথি পাখি। সারাদিন দীঘির পানিতে তাদের বিচরণ ও কিচির-মিচির শব্দ এক অন্যরকম পরিবশে তৈরি করে।
রাউজান উপজেলায় হাজার হাজার অতিথি পাখির এখন মিলন মেলা বসেছে ঐতিহাসিক কদলপুর গ্রামের লস্কর উজির দীঘিতে। সারাদিনই কদলপুর গ্রাম ও পাহাড়তলী এলাকাজুড়ে কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে ওই এলাকাসহ স্থানীয় গ্রামের চারদিক। দিন শেষে এসব অতিথি পাখি দীঘির পানি থেকে উড়াল দিয়ে গ্রামের বিভিন্ন গাছপালায় রাত কাটায়। সকাল হলেই দলবেঁধে দীঘির পানিতে নামে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অতিথি পাখির মেলায় অপরূপ সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে কদলপুর গ্রামের ঐতিহাসিক লস্কর উজির দীঘিতে। স্থানীয়রা জানান, এই দীঘির একটি ইতিহাস রয়েছে। কয়েকশত বছর আগে লস্কর নামে এক বাদশা ছিলেন। মোগল ও ব্রিটিশ আমলে রাউজানের প্রভাবশালী উজির নাজির ছিল এই নামকরা লস্কর জমিদার। প্রায় ৬০ একর আয়তনের বিশাল দীঘির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে এক ওলির মাজার। পূর্ব পাড়ে সুন্দর একটি মসজিদ। দীঘির পাড়ে রয়েছে সবুজ গাছের বাগান।
প্রতি বছরের মতো এবারও শীতের মৌসুম শুরুর পর থেকেই প্রতিদিন হাজারো অতিথি পাখি দল বেঁধে আসতে শুরু করেছে এই দীঘিতে। মাঝেমধ্যে নীল আকাশের নিচে এসব পাখির ঝাঁক উড়ে বেড়ায়। আবার আকাশ থেকে দীঘির পানিতে যখন নামে তখন মনে হয় বিমান অবতরণ করছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ড ক্লাবের পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ভিন্ন দেশ থেকে পাখিরা যখন অতিথি হয়ে আসে তখন আমাদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। তারা যে আশায় হাজার হাজার মাইল উড়ে আসে তা পূরণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
রাউজানে অতিথি পাখি অনেক নিরাপদে আছে। দিনভর পাখির অবস্থান ও কিচিরমিচির শব্দ এক মনোরম পরিবেশ তৈরি করে। এতে স্থানীয়রা ভীষণ খুশি। সকল বয়সের নারী-পুরুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে কোন সময় দীঘির পাড়ে এসে পাখির মেলা দেখে মুগ্ধ হন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন