শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

কষ্টটা অন্যদের চেয়ে বেশি সাব্বিরের

মুশফিকুরের দেখা অন্যতম সেরা টেস্ট

প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী, চট্টগ্রাম থেকে : টেস্ট অভিষেকে বাংলাদেশের যে চারজন ফিফটি করেছেন, তাদের কারো নেই চতুর্থ ইনিংসে ফিফটি। শুধু ৭ নম্বর থেকে শুরু করে নিচের দিকে ব্যাট করে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ করেছেন যারা টেস্ট ইতিহাসে সেই তালিকায় পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম (১৯৯৬ সালে লাহোর টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে), ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নেপিয়ার টেস্টে নিউজিল্যান্ডের টীম সাউদির ৭৭’র পর তৃতীয় সাব্বিরের এই ইনিংস। তবে ৩৩ রানের সমীকরণ মেলাতে কেন পঞ্চম দিনে সাব্বির অধিকাংশ বলে স্ট্রাইকের দায়িত্বটা নিলেন না, টেল এন্ডার তাইজুলের ভরসায় থাকলেন। ৪র্থ দিনে বাংলাদেশ দলের স্কোরশিটে যোগ হওয়া ১২ রানে তাইজুলের অবদান ৫, সেখানে রুম্মানেরও ৫। এই দিনে সাব্বির খেলেছেন যেখানে ৯টি বল, সেখানে তাইজুলকে দিয়ে খেলানো হয়েছে ১০টি বল! ম্যাচ শেষে এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দিল দেখা।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিক অবশ্য সাব্বিরের উপর দোষ চাপানোর পক্ষপাতী ননÑ‘৩৩ রানে দুই উইকেট অনেক কঠিন সমীকরণ। এই ম্যাচটি ৯০ শতাংশ ওদের দিকেই হেলেছিল। ওদের ১১ জনেরই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আছে সেঞ্চুরি, যেখানে আমাদের টেল এন্ড এমন কেউ নেই যার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেঞ্চুরি আছে। তাছাড়া সাব্বির তো আর একাই ৩৩ রান করতে পারবে না। তাইজুল যে বেশি খারাপ খেলে তা না। এটা যদি শেষ উইকেট, হত তাহলে হত ভিন্ন ব্যাপার ছিল। ব্যাপারটা এমন নয় যে, এক দিক থেকে স্পিন অন্য দিক থেকে ওরা পেস করছে। দুই দিক থেকেই পেস ব্যবহার করেছে। সাব্বির যদি বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে আউট হতো, তাহলে আরও আগেই খেলা শেষ হয়ে যেতো। তাই পরিকল্পনা ছিল, তাইজুল যতটা সম্ভব যদি সাপোর্ট দিবে, অন্যদিক থেকে সাব্বির রান নিবে। গতকাল শেষ তাইজুল খুব ভালো খেলছিল, আজও শুরুটা কিন্তু খুব ভালো করেছিল। যদি রান হয় রানটা নিয়ে নিতে পারে, নিক, এটাই ছিল সিদ্ধান্ত।’
টেস্ট অভিষেকে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অভিষেকে ফিফটি, মুশফিকুরের সঙ্গে ৮৮ রানের পার্টনারশিপে বাংলাদেশকে ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনিই। ৯ম জুটিতে তাইজুলকে নিয়ে ৪২ মিনিটের ইনিংসে ২৫ রানে অবদানটা রেখেছেন তিনিই। এমন একটি ম্যাচ ২০ রানে হারের আক্ষেপটা তাই করতে হচ্ছে সাব্বিরকেÑ‘খুব খারাপ লাগছে। এভাবে হেরে যাব ভাবিনি।’ তাইজুলকে স্ট্রাইক দেয়ার সিদ্ধান্ত নাকি পরিস্থিতির মুখে নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাব্বিরÑ‘তাইজুল যখন উইকেটে আসে,তখন আমাদের টার্গেট ছিল ৫২ রান। তাইজুল সিঙ্গলে না খেললে তো এতোটা ক্লোজ হতো না ম্যাচটি।’
২২ রানে হেরেও এই টেস্টটিকে মুশফিকুর তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা টেস্ট বলে গণ্য করছেন। খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র’ টেস্টটিকে এগিয়ে রেখে এই টেস্টকে তার দেখা দ্বিতীয় সেরা টেস্ট বলছেনÑ‘ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে ১৫ মাস পর টেস্ট খেলা, এটা সহজ নয়। এ যে কন্ডিশনেই খেলেন না কেন। ১২ কিংবা ১৩ মাস পর একেকটা টেস্ট খেলতে নেমে আমার কাছেই প্রত্যেকটা ম্যাচ নতুন নতুন লাগে। ব্যক্তিগত অনুভূতি হয়, এটাই বুঝি আমার প্রথম টেস্ট। তাদের (ইংল্যান্ড) দলে ১০, ৮, ৫ হাজার রান করা খেলোয়াড় রয়েছে। সেই কারণে এই ম্যাচটি আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি আগেও বলেছিলাম, যেন পাঁচ দিন ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলতে পারি এটাই ছিল চ্যালেঞ্জ। মনে হয়, আমরা পুরো টেস্টে ৯২ থেকে ৯৫ শতাংশ ভালো ক্রিকেট খেলেছি। সাব্বির খুব ভালো ব্যাট করেছে, মিরাজ প্রথম ইনিংসে খুব ভালো বল করেছে। সাকিব খুবই ভালো বোলিং করেছে। তামিম কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খুব ভালো ব্যাটিং করেছে, সব মিলিয়ে আমি বলব, বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো টেস্ট হয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় যে টেস্টটি খেলে ড্র’ করেছিলাম, তার পরই রাখব এই টেস্টকে।’ চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ কোচ তার দেখা সেরা টেস্ট বলে গণ্য করেছেন এই টেস্টকে, ৯৯ টেস্ট খেলা স্টুয়ার্ট ব্রড নিজের সেরা ৫টি’র মধ্যে রেখেছেন এটিকে। মুশফিকুরও তাদের মতোই মত দিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Rasel ২৫ অক্টোবর, ২০১৬, ৪:৩৬ পিএম says : 0
kosto howa ta e savabik
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন