করোনাভাইরাসের কারণে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহর বা থার্টিফার্স্ট নাইটে প্রকাশ্যে কোনো সভা-সমাবেশ এবং ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন না করতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন আর ৩১ ডিসেম্বর রাতকে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে আইজিপি, বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি/মহাসচিবের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। করোনার কারণে গত বছরও এ দুই আয়োজনে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, বড়দিন ও থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে প্রকাশ্যে কোনো সভা, সমাবেশ এবং ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে আয়োজন করা যৌক্তিক হবে। এ লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত চিঠিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রয়োজনে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর এলাকায় স্থানীয়ভাবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা ও আলোচনা করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। এ অবস্থায় অন্যান্য বছরের মতো ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরের ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ অনুষ্ঠান অত্যন্ত সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন নিশ্চিত করাসহ নিরাপত্তা জোরদার ও নজরদারি অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রতি বছর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘শুভ বড়দিন’ ২৫ ডিসেম্বর যথাযথ মর্যাদা, আনন্দ, উৎসাহ-উদ্দীপনায় পালিত হয়। সেইসঙ্গে ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরে ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ উপলক্ষেও বিভিন্ন স্থানে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী সব ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ অত্যন্ত সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরোয়াভাবে উদযাপন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সীমিত আকারে উদযাপন করা হচ্ছে।
দেশে করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ২ শতাংশের নিচে। জিম্বাবুয়েফেরত নারী ক্রিকেট দলের দুই সদস্য ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারা অবশ্য সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে জনপরিসরে মাস্ক না পরা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে ঢিলেঢালাভাব শঙ্কাহীন পরিস্থিতিকে অবনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র এবং রাজনৈতিক সভায় বিপুল মানুষের মাস্কহীনভাবে চলাফেরার ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন