শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

গোখাদ্য থেকে সুস্বাদু গুড়

শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

গোখাদ্য চুইন্না থেকে মাদারীপুরের শিবচরের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু গুড়। ব্যতিক্রম স্বাদের এই গুড় কিনতে আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ পদ্মার চরাঞ্চলের বাড়িগুলোতে প্রতিদিনই আসছেন। আর এই গুড় তৈরি করে অনেকেই বাড়তি আয় করে পরিবারের চাহিদা মেটাচ্ছেন।

সরেজমিন পদ্মার চরাঞ্চল ঘুরে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের হাওলাদারকান্দি গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির লোকজন মাঠ থেকে গোখাদ্য চুইন্না কেটে বাড়ি আনছেন। তারপর সেই চুইন্না থেকে পাতা কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। আর চুইন্না গাছটি ভালভাবে ধুয়ে পরিস্কার করে একই এলাকার ইব্রাহিমের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। ইব্রাহিম টাকার বিনিময়ে স্যালো মেশিনের তৈরি এক ধরনের মেশিনে চুইন্না ভেঙ্গে তা থেকে রস বের করে দিচ্ছেন। স্থানীয়রা বাড়িতে বসে সেই রস চুল্লিতে ভাল করে পুড়িয়ে তা থেকে তৈরি করছেন সুস্বাদু গুড়। শুধু হাওলাদারকান্দি গ্রামের মানুষই নয় পাঁচ্চর, মাদবরচর, কাঁঠালবাড়ি, বন্দরখোলাসহ আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন প্রতিনিয়তই চুইন্না সংগ্রহ করে ইব্রাহিমের কাছে এনে ভাঙ্গিয়ে রস করে নিয়ে যাচ্ছেন। ইব্রাহিম নিজেও গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন। এই সুস্বাদু গুড় কিনতে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ভাঙ্গাসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ হাওলাদারকান্দি গ্রামে ভিড় জমাচ্ছেন। ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। গোখাদ্য চুইন্না থেকে তৈরি এই সুস্বাদু গুড় বিক্রি করে স্থানীয়রা বাড়তি আয় করছেন।

স্থানীয় সুফিয়া আক্তার বলেন, আমরা প্রথমে শখের বসে চুইন্না ধুয়ে শিল পাটায় বেটে রস তৈরি করে তারপর গুড় তৈরি করতাম। দেখতাম গুড় খুবই সুস্বাদু হচ্ছে। পরে ইব্রাহিম ভাই চুইন্না ভাঙ্গানোর মেশিন আনার পর এলাকার প্রায় সবাই তার কাছ থেকে চুইন্না ভাঙ্গিয়ে গুড় তৈরি করে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। অনেক জায়গা থেকে লোকজন এসে গুড় কিনে নিয়ে যায়। আর আমরা এখন এই গুড় দিয়েই পিঠা পায়েস রান্না করে খাই। স্থানীয় বারেক হাওলাদার বলেন, এই গুড় কিনতে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ভাঙ্গাসহ অনেক জায়গা থেকে লোকজন এখানে আসে। আর অন্যান্য গুড়ের চেয়ে এই গুড় খেতে অনেক সুস্বাদু।

ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, এলাকার প্রায় সব বাড়ির নারীদেরকেই দেখি শিল পাটায় বেটে চুইন্নার রস বানিয়ে গুড় তৈরি করছে। গুড় খেতেও সুস্বাদু। তাই স্যালো মেশিনের তৈরি মেশিন কিনে এনে চুইন্না ভাঙ্গার কাজ করছি। নিজেও চুইন্না থেকে গুড় তৈরি করে বিক্রি করছি। পাঁচ্চর, মাদবরচর, কাঁঠালবাড়িসহ অনেক এলাকার মানুষ আমার কাছে চুইন্না ভাঙ্গাতে আসে। কৃষি কাজের পাশাপাশি এই গুড় বিক্রি করে আমার মত অনেকেই বাড়তি আয় করছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করে এই কর্মটিকে কিভাবে সামনের দিকে অগ্রসর করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো বেশি উৎসাহিত করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Anik Hasan Madbor ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:০৪ এএম says : 0
এগুলা আমরা কত খাইছি। নদীতে গোসল করতে গেলেই খেতাম
Total Reply(0)
Arifa Begum Mukti ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:০৪ এএম says : 0
আমি আমার নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়ে রাস্তার পাশের ঝোপের মধ্যে এই গাছ আছে,আমরা আখ মনে করে খাই, খুব মিষ্টি।
Total Reply(0)
Md Rafiqul Islam Rafiq ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:০৫ এএম says : 0
করচা বলে এইগুলারে আমারা ছোট থাকতে নদীতে গেলে অনেক খাইছি
Total Reply(0)
Mehedi Hassan Jilhazz ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:০৫ এএম says : 0
আমরা যে কাশফুল কে চিনি সবার সাথে পরিচিত কাশফুল, এই কাশ ফুল যে গাছটা থেকে হয় সেই গাছটাই হচ্ছে এই গাছটা,আমরা পদ্মা নদীর পাড়ে,গ্রামের ভাষায় এগুলোকে বলে খাওইল্লা
Total Reply(0)
সাদাফ আহম্মেদ ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:২৫ এএম says : 0
খুবই মিষ্টি কিন্তু দাঁত দিয়ে সহজে খোলা যায় না
Total Reply(0)
Kazi Abdul hannan ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:০৩ এএম says : 0
Agullu khoob Bhalo. Onek agei are Kadar cholo.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন