মীরসরাই (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকঋতু বৈচিত্রের ধারায় এসেছে হেমন্ত। সঙ্গে কড়া নাড়ছে শীত। ভোরের বাতাস কুয়াশাসিক্ত। সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা সারি সারি সীম গাছ, শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, করলা, পটোল, পালং ও লালশাকসহ রকমারি শীতকালীন সবজির চারা।
ক্ষেতে এসব ফসল পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানী, খাঁচি, বালতি, ¯েপ্র মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে এখন কৃষককূল। ক্ষেতে নেমে পড়েন সবজি পরিচর্যায়। বিকেল অবধি মাঠেই চারায় গোড়ায় পানি ঢেলেই ফিরছেন সবাই বাড়ী। তাদের কেউ দাঁড়িয়ে কোদাল চালাচ্ছেন, অনেকেই গাছের গোঁড়ালির পাশ দিয়ে ঘোরাচ্ছেন নিড়ানী, কেউবা খালি হাতেই গাছগুলো ঠিক করছেন। কেউ বা না টেকা চারার স্থলে সতেজ চারা প্রতিস্থাপন করছেন, এভাবে শীতকালীন সবজি নিয়ে চলছে কৃষকের কর্মযজ্ঞ।
বেড়েই চলছে মানুষের কাজের চাপ
ধান চাষে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছেন না অনেক কৃষক। কোনোভাবেই লোকসান ঠেকাতে পারছেন না তারা। তাই রকমারি সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন অনেক কৃষক। পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক হায়দার আলী ও আমজাদ হোসেন বলেন, সবজি চাষের জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলক মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তুলনামূলক কম। তবে সেবা যতেœ ক্রটি করা যাবে না। কিন্তু রোগবালাই দমনে সবজি ক্ষেতে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়। স্বল্প সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় দিনই বাজারে সবজি বিক্রি করা যায়। পরিবারের চাহিদাও মেটানো যায়। ক্ষেতে সবজি থাকা পর্যন্ত প্রত্যেক কৃষকের হাতে কমবেশি টাকা থাকে। যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব না। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সবমিলিয়ে সবজি চাষকেই এসব কৃষকরা লাভজনক মনে করছেন।
খৈয়াছরা ইউনিয়নের আমবাড়ীয়া গ্রামে ফুলকপি ও বাঁধাকপি রোপণ এবং পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক আব্দুল হালিম মিয়া জানালেন কুমিল্লা থেকে বয়ে আনা বিভিন্ন কপির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সবাই আমরা এখন। তিনি বলেন এবার আগাম ভালো ফলন ও আশা করছি সবাই। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার নুরুল আলম জানান এবারের শীত মৌসুমে ১৮৫০ হেক্টর জমিতে মৌসুমী সবজি উৎপাদনের লক্ষমাত্রা আমাদের। ইতিমধ্যে ৮০০ হেক্টর আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বাকি জমিতে চাষাবাদ প্রক্রিয়াধিন।
বর্তমানে সীম, বেগুন, লালশাক, মুলা শাক, ফুলকপি, বাধাকপি, টমেটো এর আবাদ চলছে বলে তিনি জানা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, সবজি চাষে যুক্ত উপজেলার কৃষকরা এবার বেশ উৎফুল। কারণ তারা প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশের জন্য এবার উৎপাদিত ফসলের দাম বেশ ভালো পাবেন বলে আশা করছেন বলে মনে করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন