টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরে গিয়েছিলেন আগেই, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। পরের বছর অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপের পর তাকে ওয়ানডেতেও আর বিবেচনা করেননি পাকিস্তানের নির্বাচকরা। এই সংস্করণে তার শেষ প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে যখন এই দুটি দল মুখোমুখি টেস্ট লড়াইয়ে, ঠিক সেদিনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। এই তারকা অলরাউন্ডারকে আর দেখা যাবে না পাকিস্তান দলের জার্সিতে। তবে ৪১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি আসরগুলোতে খেলা চালিয়ে যাবেন।
গতকাল লাহোরে অবস্থিত পিসিবির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ১৮ বছর দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন হাফিজ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার অভিষেক হয়েছিল ওয়ানডে দিয়ে। ২০০৩ সালের ওই ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। আর গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে যাওয়া সেমিফাইনালটি হয়ে থাকল তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
জাতীয় দলকে বিদায়ের ঘোষণায় হাফিজ বলেছেন গর্বিত হওয়ার কথা, ‘১৮ বছর আগে পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে শুরু করা সুন্দর যাত্রা থেকে আজ আমি আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিতে চাই। আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছি এবং ১৮ বছর ধরে আমি যা খেলেছি, তা মর্যাদার সঙ্গে খেলেছি। আর মাঠে হোক কিংবা মাঠের বাইরে, আমার কর্মকা-ের মাধ্যমে আমি পাকিস্তানের পতাকা উঁচু করার চেষ্টা করেছি।’ বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার নিয়ে সন্তুষ্টি ঝরেছে হাফিজের কণ্ঠে, ‘আমি আমার ক্যারিয়ার ও অর্জন নিয়ে খুব খুশি এবং সন্তুষ্ট যেগুলো মূলত ছিল পাকিস্তানের জন্য। তো এটাই আমার জন্য শেষ। আমি সম্পূর্ণ গর্বের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছি। তবে আমি ফিট থাকা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক লিগগুলোতে খেলতে থাকব এবং আমার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে অবদান রাখতে পারব।’
ডানহাতি ব্যাটার ও অফ স্পিনার হাফিজ ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে ও ১১৯ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন পাকিস্তানের হয়ে। সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৭৮০ রান করেছেন এবং ২৫৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ম্যাচসেরা হয়েছেন ৩২ বার যা পাকিস্তানের হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ। তার উপরে আছেন কেবল শহিদ আফ্রিদি (৪৩), ওয়াসিম আকরাম (৩৯) ও ইনজামাম উল হক (৩৩)। হাফিজ সিরিজসেরা হয়েছেন নয়বার। এই তালিকায় ইমরান খান, ওয়াকার ইউনুস ও ইনজামামের সঙ্গে যৌথভাবে দুইয়ে আছেন তিনি। এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া সাত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছয়টিতে খেলেছেন হাফিজ। তবে যে আসরে দলে ছিলেন না, সেই ২০০৯ সালের আসরেই পাকিস্তান হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলটির হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড তার দখলে। হাফিজ অধিনায়কত্ব করেছিলেন ২০১২ ও ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এই সংস্করণে মোট ২৯ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ১৮ জয়ের বিপরীতে ১১টি হার রয়েছে তার নামের পাশে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন