নেত্রকোনায় বাসস্ট্যান্ডের জন্য নেই নির্দিষ্ট কোনো জায়গা। সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়কে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বাসস্ট্যান্ড। ফলে এই এলাকাটি যেন যানজটনের এক অন্যতম হিসেবে পরিণত হয়েছে। শহরের বনুয়াপাড়ায় সড়কের দুই পাশেই যত্রতত্রভাবে বাস রাখায় যাত্রীদের যাতায়াতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও দূরপাল্লার বাসগুলো এই সড়কেই ঘোরানোর ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। আর নিয়ন্ত্রণহীন অটোরিকশা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারীদের দাপট তো রয়েছেই। এসব কারণেই এই এলাকাতে দুর্ঘটনার সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে। ফলে এ এলাকায় চলাচলরতদের মধ্যে ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়কের বেশিরভাগ জায়গা বাসের দখলে থাকায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে। তবে বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে স্ট্যান্ডের জন্য জাগয়া চাওয়া হয়েছে। নেত্রকোনা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তিনটি জায়গা থেকে বাস চলাচল করে। এর মধ্যে শহরের পাশের পারলা ও রাজুর বাজারে বাসস্ট্যান্ডের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও, বনুয়াপাড়ায় নির্দিষ্ট জায়গা নেই। দীর্ঘদিন ধরে প্রধান সড়কের উপরে রাখা হয় বাস, সেখান থেকেই চলাচল করে। শহরের বনুয়াপাড়া থেকে জেলার কেন্দুয়া, মদনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মানুষ চলাচল করে। এতে প্রতিদিন সড়কে তৈরি হয় যানজট। চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শহরের বনুয়াপাড়ায় রাস্তা দখল করে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানোয় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে সবসময়ই এ এলাকায় যানজট লেগেই থাকছে। যা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও। অটোরিকশা চালক তানভীর হোসেন বলেন, সড়ক দখল করে বাসগুলোর যাত্রী ওঠা নামার কারণেই মূলত যানজট হয়। আমাদের ১০টি অটোরিকশার জন্য যে জায়গার প্রয়োজন হয় তা একটি বাসেরই লাগে। সে কারণেই যানজট কমছে না।
অভিযোগ রয়েছে শ্রমিকরা সড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে পরিষ্কার করার কারণে ময়লা ও নোংরা পানি পথচারীদের শরীরে পরে জামা কাপড় নষ্ট হচ্ছে। যাত্রী ছামিউল ইসলাম জানান, বাস স্ট্যান্ড না থাকায় সবসময় আমাদেরকে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হচ্ছে। টিকেট কেটে মালামাল নিয়ে খোলা জায়গায় বসে থাকতে হয় অনেক সময়। এছাড়া যাত্রী ছাউনী এবং গণশৌচাগার না থাকায় পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। জনস্বার্থে অতি জরুরি একটি বাসস্টান্ড একান্ত প্রযোজন বলে মনে করছে যাত্রীরা। বাসস্টান্ড একান্ত প্রযোজন বলে মনে করছে যাত্রীরা।
শহরের বনুয়াপাড়ায় এলাকার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ বলেন, প্রধান সড়কে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড করা হয়েছে। এই সড়কের দুই পাশের বাসিন্দারা সবসময়ই দুর্ঘটনা আতঙ্কে থাকেন। আর এসব পরিবহনের কারণে রাস্তার দুই পাশের বাসিন্দারা বাড়ির দরজা জানালা খোলা রাখতে পারে না। এ এলাকার বাসিন্দারা দুর্ঘটনা আতঙ্কের পাশাপাশি বিকট শব্দের হর্ন বাজানোর কবলে পড়ে আছে। ফলে শিশু ও বৃদ্ধসহ অসুস্থদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা বাস-ট্রাক মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক টিটু দত্ত রায় বলেন, বনুয়াপাড়ায় নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ডের জন্য জায়গা চেয়ে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের বরাবর আবেদন করা হয়েছে। জায়গা পেলে তারা চলে যাবেন।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মো. আব্দুর রহমান বলেন, বিষয়টি সমাধানে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই বাসস্ট্যান্ডের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে। জনগনের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রæত উদ্যোগ নেবে প্রশাসন, এমনটাই প্রত্যাশা জেলাবাসীর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন