খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৪ ছাত্রকে কুয়েট থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৪০ জনের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। শাস্তি পাওয়া ৪৪ জনের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। গতকাল বুধবার কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয় ড. সেলিমের পরিবার। অন্যদিকে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কয়েকজন শাস্তিপ্রাপ্ত ছাত্র। কুয়েট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত আমি মানি না। যাদের জন্য আমার স্বামীর জীবন গেছে, আমি তাদের প্রত্যেকের ফাঁসি চাই। যাদের জন্য তার জীবন গেছে, এত অল্পতে তারা কেন ছাড় পাবে?
তিনি বলেন, তার বাবা নেই, স্বামীকেও হারিয়েছেন। এখন পরিবারে উপার্জনক্ষম কেউ নেই। তার একমাত্র মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস আনিকা প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। তার লেখাপড়া ও ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে গেছে। তিনি মেয়েকে কিভাবে লেখাপড়া করাবেন? মেয়ের ছোট ছোট শখ পূরণেরও সামর্থ্য তার নেই। তিনি আরও বলেন, মামলা দায়েরের জন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কুয়েট কর্তৃপক্ষ মামলা না করলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন।
এদিকে, স্থায়ী ও সাময়িক বহিস্কার ও বিভিন্ন শাস্তির বিষয়ে কুয়েট ছাত্রলীগ নেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, কুয়েটের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা আদালতে যাবেন। কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান বলেন, নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে আমাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। ইতোমধ্যে আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আইনিভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করা হবে।
এদিকে, কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা আহবান করা হয়েছে। এই সভায় তারা কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করে ক্লাসে ফেরা-না ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন