অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় এক ম্যাচ জিতে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে কাঁদিয়ে মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। গতকাল বিকালে কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে শুরুতে পিছিয়ে থেকেও রহমতগঞ্জ ২-১ গোলে দশজনের মোহামেডানকে হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। বিজয়ী দলের হয়ে ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড ফিলিপ আদজাহ ও নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে সিজোবা একটি করে গোল করেন। মোহামেডানের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন স্থানীয় ডিফেন্ডার রাজিব হোসেন।
কাল ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় সাদাকালোরা। ফলে ম্যাচের বয়স যখন মাত্র পাঁচ মিনিট তখনই গোল আদায় করে নেয় তারা।এসময় ডানপ্রান্ত দিয়ে আলমগীরের কর্ণার কিকের বল পোস্টের খুব কাছ থেকে হেডে নামিয়ে দেন মোহামেডানের অস্টেলিয়ান ডিফেন্ডার এরন জন। বল রাজিবের পায়ে কাছে গেলে ফাইনাল টাচে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া ছিল মোহামেডান। তবে দুর্দান্ত খেলেছেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক তুষার। তিনি দারুণভাবে প্রতিহত করে মোহামেডানের বেশ ক’টি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করে দেন। ফলে প্রথমার্ধে আর কোনো গোল পায়নি সাদাকালোরা। রহমতগঞ্জও পারেনি সমতায় ফিরতে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই গোল শোধে মরিয়া হয়ে লড়ে রহমতগঞ্জ। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে ফ্রি কিক পায় তারা। শাহরিয়ার বাপ্পী সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। ৬৭ মিনিটে দশ জনের দলে পরিণত হয় মোহামেডান। ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড (লাল কার্ড) দেখে মাঠ ছাড়েন মোহামেডানের মেসিডোনিয়ান ডিফেন্ডার জেসমিন মেকচিনোভিকি। সুলেমান দিয়াবাতে রেফারির কাছে বার বার আবেদন করেন লালকার্ডের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। এ সুযোগটিই কাজে লাগায় রহমতগঞ্জ। ৭৮ মিনিটে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করে দলকে সমতায় ফেরান রহমতগঞ্জের ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড ফিলিপ আদজাহ (১-১)। ম্যাচের যোগকরা সময়ে (৯০+১ মিনিট) ডানপ্রান্ত দিয়ে ফিলিপের ক্রস বক্সের কাছ থেকে বাঁ পায়ের শটে পোস্টে জড়িয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন ম্যাচসেরা নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে সিজোবা (২-১)। ১৩ বছরের অপেক্ষা ঘুচাতে পারলো না মোহামেডান। এর আগে সবশেষ ২০০৯ সালের ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেলেছিল তারা। ম্যাচ শেষে রহমতগঞ্জের কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী বলেন, ‘অ্যাটাকিং মুডে খেলানোই ছিল আমার কৌশল। তবে জেসমিনের লালকার্ডটিই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।’ অন্যদিকে ম্যাচসেরা সানডে সিজোবা বলেন,‘আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না, মোহামেডানকে হারিয়ে আমরা ফেডারেশন কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন