সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

সেরা প্রস্তুতিতে ভালোর আশায় বাংলাদেশ

বড়দের পারফরম্যান্সে উজ্জীবিত যুবারা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

গতবার ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য, এবার রকিবুল হাসানের কাঁধেই বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দায়িত্ব। গতবার আকবর আলীর অধীনে খেলা বাংলাদেশ দলের এনে দেওয়া শিরোপা এবার ধরে রাখার ভারটা রকিবুলের ওপর। করোনাভাইরাসের কারণে প্রস্তুতিতে একটু ঘাটতি থাকলেও সেটাকে ‘সম্ভাব্য সেরা’ হিসেবে মনে করতে চান রকিবুল। ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ‘ভালো কিছু’ এবারও আশা করা যায়, বলেছেন এ বাঁহাতি স্পিনার। আপাতত ম্যাচ ধরে ধরে এগিয়ে সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়ার লক্ষ্য তাঁদের। শিরোপা ধরে রাখার সেই মিশনে আজ সন্ধ্যা ৭টায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড।

২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে অন্যতম অনুঘটক ছিল ম্যাচ খেলার প্রস্তুতি। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পর থেকে সে সময়ে বাংলাদেশ খেলেছিল ৩০টি যুব ওয়ানডে। এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ গেছে মাত্র ১২টি যুব ওয়ানডের অভিজ্ঞতা নিয়ে। অবশ্য ভারতে তিন দলের একটা টুর্নামেন্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ভারত ‘এ’ ও ‘বি’ দলের বিপক্ষে খেলে সেটিতে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল তারা।
নিজেদের শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জের কথা বলতে গিয়ে রকিবুল তুলে ধরেছেন আগেরবারের সঙ্গে এবারের প্রস্তুতির পার্থক্যের কথা, ‘দেখুন, সব দলই তো বিশ্বকাপ জেতার জন্য আসে। সবার পরিকল্পনা থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। সর্বশেষ বিশ্বকাপে আমাদের সেই লক্ষ্য ছিল এবং আমাদের প্রস্তুতি, প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনা সফল হওয়ায় শিরোপা জিতেছিলাম। এবার কোভিডের কারণে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি।’ তবে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় বলেই মনে করেন তিনি, ‘অন্য সব দলও কিন্তু একই কারণে প্রস্তুতির ঘাটতিতে আছে। আশা করি, আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটা সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতি। সামনে যে ম্যাচগুলো আসছে, আমরা যদি আমাদের পরিকল্পনার সঠিক প্রতিফলন করতে পারি, তবে অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারব।’
বাংলাদেশ বিশ্বকাপে গেছে এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হেরে। অবশ্য এর আগের বিশ্বকাপের আগেও দুটি এশিয়া কাপে ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ- ২০১৮ সালে সেমিফাইনালে ২ রানে, ২০১৯ সালে ফাইনালে ৫ রানে। ভারতের কাছে এবারের হারটিকেও ‘ধাক্কা’ মনে করছেন না রকিবুল, ‘হয়তো আমরা ভারতের কাছে এশিয়া কাপে হেরেছি। কিন্তু এতে আমাদের প্রস্তুতি খারাপ হয়ে যায়নি। এখনো আমরা ভালো অবস্থানে আছি। এখানে আমরা সেসব ভুলে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে ভালো করার ব্যাপারে কথা বলেছি। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। আগের চেয়ে আমরা এখন বেশি প্রস্তুত আছি। আশা করি, প্রথম ম্যাচে ভালো করব।’ শিরোপা ধরে রাখার যে চাপ, সেটা নিয়েও ভাবতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘চাপ তো থাকেই। এটা নিয়ে ভাবলে চাপ আরও বাড়বে। আমরা এখন নিজেদের প্রথম ম্যাচটায় কীভাবে সফল হব, সেটায় মনোযোগ দিচ্ছি। হাতে তিন দিনের মতো সময় আছে। আর ওভাবে কোনো চাপ নেই।’
১৬ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে বাংলাদেশ। গ্রুপ ‘এ’-তে বাংলাদেশ সব ম্যাচই খেলবে সেন্ট কিটসে। এখানেই জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়ে প্রস্তুতিও সেরে নিয়েছে দল। সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে এরই মধ্যে মানিয়ে নিয়েছেন, রকিবুল বলছেন এমন, ‘এখানকার কন্ডিশন খুব কঠিন নয়। এখানে আমরা দুই সপ্তাহের মতো আছি, দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, যা ভালো প্রস্তুতি আমাদের জন্য। আমরা এখন ভালোভাবেই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। আশা করি, ইংল্যান্ডের সঙ্গে আমরা সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারব।’ সব মিলিয়ে এবারের দলটিকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ বলেই মনে করেন রকিবুল, ‘গতবারের মতো এবারের দলও ভালো। এবার দলে অনেক অলরাউন্ডার আছে, যেটা গতবার আমাদের একটু ঘাটতি ছিল। তবুও আমরা ভালো করেছিলাম। এবার আমাদের দলটা অনেক ভালো এবং ভারসাম্যপূর্ণ। আমাদের প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনামতো খেলতে পারলে ও ছোট ভুলগুলো যদি কম করতে পারি- অবশ্যই ভালো করব।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের একমাত্র বৈশ্বিক ট্রফিটি এসেছে যুব ক্রিকেট থেকে। যুবারা তাই একদিক থেকে বড়দের জন্যও প্রেরণার। তবে এবার নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাফল্য দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে যুবাদেরও। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে অনুপ্রেরণার জ্বালানী খুঁজে নিচ্ছেন যুবা অধিনায়ক, ‘সিনিয়র দলের নিউজিল্যান্ডে ভালো করাটা অবশ্যই আমাদের প্রেরণা জোগাবে এখানে ভালো করায়। আশা করি, আমরাও তাদের মতো ভালো কিছুই করব। জয়টি আমরা সেলিব্রেট করেছি এখানেও। আমাদের সবার জন্য এবং পুরো দেশের মানুষের জন্যই খুব অনুপ্রেরণাদায়ক। বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্মরনীয় জয়। আমাদের মধ্যে অনেক কথা হয়েছে এ ব্যাপারে। আমরা বিশ্বাস করেছি, সিনিয়ররা যখন নিউ জিল্যান্ডের মতো জায়গায় গিয়ে জিততে পেরেছে, আমাদেরও কঠিন কন্ডিশনে ভালো করা উচিত। সেখান থেকেই আমরা বিশ্বাস করি, ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ভাল কিছু করতে পারব।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন