তিন পার্বত্য জেলার সকল অবৈধ ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি জেবি এম হাসান এবং বিচারপতি ফাতেমা নজীবের ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে তিন পার্বত্য জেলা- খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সব ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চাওয়া হয়। সেইসঙ্গে অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা পরিচালনার জন্য ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ধারা ৪, ৫, ১৪, ১৮ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশ কেন দেয়য়া হবে না- জানতে চাওয়া হয়।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষারকান্তি রায়।
আদেশের বিষয়ে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। এসব ইটভাটায পাহাড় কেটে মাটি কাঁচামাল হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও বনের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ’ (এইচআরপিবি) এই রিট করে।
শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ৪ ধারা অনুসারে কোনো ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারবে না। চালালে ধারা ১৪ অনুসারে দুই বছরের সাজার বিধান আছে। তা সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সব ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাছাড়া উক্ত আইনের ৫ ধারায় পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং তা করলে একই আইনের ১৫ ধারায় দুই বছরের সাজার বিধান রয়েছে। তথাপি পাহাড়ের মাটি ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এ কারণে পার্বত্য এলাকার অনেক পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রশাসনের চোখের সামনে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটাগুলো পরিচালিত হচ্ছে- যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
আদালত শুনানি শেষে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরসহ অন্যদেরকে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটিতে পরিচালিত সকল লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা আগামী ৭ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতের আদেশ প্রতিপালনের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত অপর এক আদেশে লাইসেন্স ব্যতীত পরিচালিত সব ইটভাটার তালিকা আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রস্তুত করে আদালতে এভিডেভিট দাখিলের জন্য তিন জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম এলাকার পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালকসহ অন্যদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন