টসের সময়ই চোখে পড়ল বিষয়টি। নিয়মিত অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ আসেননি তার জায়গায় এলেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নাঈম ইসলাম। ততক্ষণে ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে মিরাজকে। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে মাঠে নামে চট্টগ্রাম। টসের সময়ে অধিনায়ক পরিবর্তনের কারণ জানিয়ে নাঈম বলেন, ‘মিরাজ নিজের খেলায় মনোযোগ দিতে চায়। এ কারণে সে অধিনায়কত্ব করছে না’
মিরাজের অধিনায়কত্ব পরিবর্তনের ধাক্কা কাটতে না কাটতেই জানা যায় পরিবর্তন হয়েছে কোচের। চলে গেছেন প্রধান কোচ পল নিক্সন। তার জায়গায় এখন কোচের দায়িত্ব পালন করবেন পেস বোলিং কোচ শন টেইট। তাতে গুঞ্জন বাড়ে আরও। হঠাৎ কেন গেলেন এ ইংলিশ কোচ? কেনই বা বদল হলো অধিনায়কের? কোচ-অধিনায়কের পরিবর্তন নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের চিফ অপারেটিং অফিসার ইয়াসির আলম বললেন, ‘চট্টগ্রামের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন নাঈম ইসলাম। আর প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন শন টেইট।’ আর এ পরিবর্তনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নিক্সন তার কাউন্টি দল লেস্টারশায়ারে ফিরে গেছেন। তাই প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন পেস বোলিং কোচ শন টেইট। মিরাজের জায়গায় নাঈমকে অধিনায়ক করার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই অনুযায়ী এখন থেকে দলকে নেতৃত্ব দেবেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।’
কাউন্টিতে লেস্টারশায়ারের দায়িত্বে থাকলেও অনুমতি নিয়ে পুরো আসরের জন্য বিপিএলে এসেছিলেন নিক্সন। কিন্তু তারপরও কেন হঠাৎ চলে গেলেন। এ প্রশ্নের জবাবটা দেন ম্যানেজার ফাহিম মুনতাসির সুমিত, ‘নিক্সনের সঙ্গে পুরো আসরের জন্যই চুক্তি ছিল। তার কাউন্টি ক্লাব থেকে জরুরি বার্তা পেয়ে তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে গেছেন। যাওয়ার আগে দল কীভাবে চলবে তিনি তার একটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে গেছেন। সে ভিত্তিতেই এই পরিবর্তন এসেছে। মিরাজ দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তাকে নির্ভার খেলার সুযোগ দিতে নেতৃত্ব বদলের কথা বলেছিলেন তিনি।’
অধিনায়ক হিসেবে অবশ্য খারাপ করেননি মিরাজ। চার ম্যাচের দুটিতে জয়। জয়ের হার ৫০ শতাংশ। ঢাকা পর্বের শুরুতে হারলেও পরের দুই ম্যাচে জিতে নেয় চট্টগ্রাম। তবে ঘরের মাঠে এসে আগের দিন হেরে যায় দলটি। সে কারণেই মিরাজের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলেই গুঞ্জন রয়েছে। তবে ম্যাচে এর কোনো প্রভাব পড়তে দেয়নি দলটি। দুর্দান্ত এক জয়েই ‘নতুন শুরু’ হয়েছে চট্টগ্রামের।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামকে দারুণ শুরু এনে দেন উইল জ্যাকস। আরেক ওপেনার কেনার লুইসকে নীরব দর্শকের ভূমিকায় রেখে একের পর এক চার-ছক্কা হাঁকাতে থাকেন জ্যাকস। ১৮ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে গড়েন বিপিএলের দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড, যা এবারের আসরে দ্রুততম। অবশ্য পরের বলেই থামতে হয় জ্যাকসকে। বিদায়ের আগে ১৯ বলে ৫২ রান করেন, হাঁকান ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। এর খানিক পর লুইসও (১২ বলে ৮) বিদায় নেন। তবে চট্টগ্রামের রানের চাকা থামেনি। আফিফ হোসেন ধ্রুবর ২৮ বলে ৩৮ (১টি চার ও ৩টি ছক্কা), সাব্বির রহমানের ২৯ বলে ৩১ (৩টি চার) ও বেনি হাওয়েলের ২১ বলে ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস দলকে পথ দেখায়। শেষদিকে ৪ বলে ১৩ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন অধিনায়কত্ব হারানো মিরাজ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০২ রান। এখন পর্যন্ত যা এবারের রানখরার বিপিএলে সর্বোচ্চ। শেষ ৫ ওভারে ৭১ রান জড়ো করে দলটি। এই রানও আনামুল হক বিজয় (৪৭ বলে ৭৮) ও কলিন ইনগ্রামের (৩৭ বলে ৫০) ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পেরিয়ে গিয়েছিল সিলটে। তবে এই জুটির বিদায়ের পর আর পেরে ওঠেনি মোসাদ্দেক হোসেনের দল। ১৬ রান আগেই (১৮৬) থামে ৬ উইকেট হারানো সিলেট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন