১৯ বছরের মধ্যে তুরস্ক সব চেয়ে বেশি মুদ্রাস্ফীতির কবলে পড়ল। জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে দুইটি কাজ করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি পরিসংখ্যান এজেন্সির প্রধানকে সরিয়ে দিয়েছেন এবং সংবাদমাধ্যমকে নৈতিক মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
তুরস্কের মুদ্রাস্ফীতি এখন আকাশছোঁয়া। মুদ্রা-সংকটও দেখা দিয়েছে। এই মাসের গোড়ায় পরিসংখ্যান এজেন্সি জানিয়েছিল, মুদ্রাস্ফীতির হার হয়েছে ৩৬ দশমিক এক শতাংশ, যা গত ১৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিরোধী নেতারা মনে করেন, মুদ্রাস্ফীতির এই হারও কমিয়ে দেখানো হয়েছে। তাদের অভিযোগ, জীবনধারণের খরচ দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে।
তবে এরদোগান ঘনিষ্টমহলে এজেন্সির কড়া সমালোচনা করে বলেছিলেন, এজেন্সি বাড়াবাড়ি করছে। তারা তুরস্কের আর্থিক সমস্যাকে বাড়িয়ে দেখিয়েছে। আগামী মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার ঘোষণা করা হবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেটা ৪৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। দেশের অর্থনীতির এই অবস্থার জন্য এরদোগানের কড়া সমালোচনা হচ্ছে। তিনি গত আড়াই বছরে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের তিনজন গভর্নরকে সরিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বদল হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ অফিসারদের বদল করেছেন। তারপরেও কিছু হয়নি। এরদোগানের এই সব সিদ্ধান্তও সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এরদোগান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ককে ঋণ কম করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর মনে হয়েছে, চড়া সুদের জন্য মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। এটা চিরাচরিত অর্থনীতির ধারণার উল্টো। এর ফলে ডলারের তুলনায় লিরার মূল্য ৪০ শতাংশর বেশি কমেছে। গত শনিবার এরদোগান আবার বলেছেন, ''সুদের হার আরো কম করা হবে এবং তার জেরে মুদ্রাস্ফীতি কমবে।'' এরদোগান বলেছেন, ''আপনারা জানেন, আমি সুদের হারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছি, আমরা সুদের হার কম করছি। এটা জেনে রাখুন এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি কমবে। জিনিসর দামও কমবে। যা এখন হচ্ছে, সবই সাময়িক।''
এরদোগান তুরস্কের মিডিয়াকে বলেছেন, তরা যেন এমন বিষয় প্রচার না করে, যা জাতীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে খাপ খায় না। ডিক্রি জারি করে এরদোগান বলেছেন, ক্ষতিকর মিডিয়া রিপোর্টের হাত থেকে পরিবার, বাচ্চা ও যুবকদের বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সমালোচকরা মনে করছেন, আগামী বছর নির্বাচনের আগে এরদোগান তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের খবরে রাশ টানতে চাইছেন। এই মাসের গোড়ায় বিশিষ্ট সাংবাদিক কাবাসকে জেলে ভরা হয়েছে। অভিযোগ, তিনি এরদোগানকে অপমান করেছেন। তার কয়েক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। আরেক বিশিষ্ট সাংবাদিক ফারুক বিদিরিসি টুইট করে বলেছেন, মিডিয়ার বিরুদ্ধে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। সূত্র: এপি, এএফপি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন