একটি অপেক্ষার অবসান হতোই। মিশরের এক যুগের কিংবা সেনেগালের এক জীবনের। টাইব্রেকারে হলো নিষ্পত্তি। সেখানে এক রকম পাপমোচনই করলেন সাদিও মানে। ম্যাচের শুরুতে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হওয়া তারকা ফরোয়ার্ড টাইব্রেকারে শেষ শটে দলকে তুললেন নতুন উচ্চতায়। সেনেগাল পেল অনির্বচনীয় স্বাদ, আফ্রিকান নেশন্স কাপের শিরোপা! গতপরশু রাতে ক্যামেরুনের ওলেম্বে স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও খেলা গোলশূন্য থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-২ গোলে জিতে প্রথম শিরোপার উচ্ছ্বাসে ভাসে সেনেগাল। আফ্রিকার রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন মিশর তাদের সাত শিরোপার সবশেষটি জিতেছিল ২০১০ সালে। ২০১৭ আসরে ফাইনালে উঠলেও সেবার পারেনি দলটি। ২০০২ ও সবশেষ ২০১৯ আসরের রানার্সআপ সেনেগাল তৃতীয় চেষ্টায় পারল। ঘরে নিল আফ্রিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি।
মহামারীকালে কঠিন এক অবস্থায় হয়েছে এবারের আফ্রিকান নেশন্স কাপ। সেখানে প্রাণবন্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে সেনেগাল। আর মিশর যেন বারবার ম্যাচ টেনে নিতে চেয়েছে টাইব্রেকারে। নকআউট পর্বের শুরু থেকে তাদের টানা চার ম্যাচই গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। এর তিনটির নিষ্পত্তি হলো টাইব্রেকারে। আগের দুইবার গোলরক্ষকের বীরত্ব আর নিজেদের সবাই জালের দেখা পাওয়ায় জয়ের খুশিতে মাঠ ছাড়ে মিশর। এবার চোখের অশ্রুতে বিদায় নিতে হলো মোহাম্মদ সালাহদের।
সাধ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন গোলরক্ষক মোহামেদ আবু গাবাল। মূল ম্যাচে মানের স্পট কিক ঠেকানোর পর টাইব্রেকারে ফেরান বোনা সারের শট। সেনেগালের হয়ে কালিদু কুলিবালি, আব্দু দিয়ালো, বাম্বা ও মানে জালের দেখা পান। বেশির ভাগ শটেই ঠিক দিকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মিশরের গোলরক্ষক। জিজুর গোল দিয়ে শুরু হয় মিশরের স্পট কিক। এরপর মোহামেদ আব্দেলমোনেমের শট ব্যর্থ হয় বাঁদিকের পোস্টে লেগে। মারওয়ান হামদি গোল করার পর মোহামেদ লাশিনের শট ঠেকিয়ে দেন মঁদি। শেষ হয় সেনেগালের অর্ধশতাব্দীর বেশি সময়ের অপেক্ষা।
এদিকে, দুই দশক আগে দেশের প্রথম ফাইনালে হারের পেছনে ‘বড় দায়’ ছিল খেলোয়াড় আলিয়ু সিসের। দুই বছর আগে আবারও শিরোপা মঞ্চে উঠে খালি হাতে ফেরে সেনেগাল, এবার ডাগআউটে ছিলেন তিনি। তার গাত ধরেই ২০ বছরের হতাশার বৃত্ত ছিড়ে অবশেষে বের হতে পারল দেশটি। আফ্রিকান নেশন্স কাপ জিতিয়ে দলকে সুউচ্চে তোলার আনন্দের পাশাপাশি নিশ্চিতভাবে ‘ভারমুক্ত’ হওয়ার স্বস্তিও কাজ করছে কোচ সিসের মনে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন