আপনাদের সেবার জন্য আমাদের দোকান মাসে ত্রিশ দিনই খোলা থাকে। আমাদের কোন রোববার-সোমবার নেই। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্করের শাহ আলী মার্কেট বন্ধ দেখলাম, আপনাদের মার্কেট বন্ধ কবে? এই প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানাচ্ছিলেন শাহ আলী মার্কেটের ঠিক পেছনের ফাহাদ কমপ্লেক্সের নিচতলায় ম্যাক্স কালেকশনের এক কর্মচারি। কয়টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের দোকান রাত বারোটা পর্যন্ত খোলা। এত রাতেও ক্রেতা থাকে কিনা প্রশ্নে তিনি তার দোকান মালিকের দর্শন এভাবে বলেন, রাত যত গভীর হয় ব্যবসাও তত ভালো হয়।
গতকাল রোববার এমনই আলাপ হয় সেই দোকানের কর্মচারির সাথে। স্থানীয়রা জানান, এই মার্কেটতো বছরের বছর দেখছি প্রতিদিনই খোলা থাকে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, রাজধানীতে সপ্তাহে একদিন পূর্ণ দিবস ও আরেক দিন অর্ধদিবস বন্ধ থাকবে দোকানপাট ও শপিংমল। বন্ধের দিন নির্ধারণ করার প্রস্তাবটি ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় পাস হয়। কিন্তু এই নিয়ম এখনো অজানা ব্যবসায়ীদের। পূর্ণদিবস বন্ধ থাকার কথা থাকলেও প্রায় সব দোকানই ছিল খোলা। ক্রেতারা যে যার মতো পণ্য কিনছেন। রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। অথচ যানজট নিরসন ও বিদ্যুতের সাশ্রয়ের জন্য সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা মানার কোন বালাই নেই।
একই এলাকা সংলগ্ন মিরপুর বেনারসী পল্লী, পল্লবী সুপার মার্কেটের চিত্রও ছিল একই রকম। এছাড়া রজনীগন্ধা মার্কেট, ইউএই মৈত্রী কমপ্লেক্স, বনানী সুপার মার্কেট, ডিসিসি মার্কেট গুলশান-১ এবং ২, গুলশান পিংক সিটি, মোল্লা টাওয়ার, আল-আমিন সুপার মার্কেট, রামপুরা সুপার মার্কেট, মালিবাগ সুপার মার্কেট, তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট, কমলাপুর স্টেডিয়াম মার্কেট, গোরান বাজার, আবেদিন টাওয়ার, ঢাকা শপিং সেন্টার, আয়েশা মোশারফ শপিং কমপ্লেক্স, মিতালী অ্যান্ড ফ্রেন্ড সুপার মার্কেট সংলগ্ন এলাকার দোকানপাটও খোলাই ছিল।
তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন বলেন, রোববার সাপ্তাহিক ছুটি জানি। কিন্তু আমাদের দোকান সবসময়ই খোলা থাকে। আমাদের নিয়মিত ক্রেতারা যদি দোকান বন্ধ দেখেন, তাহলে তারা অন্য দোকানে চলে যাবেন। আমরা কাস্টমার হারাবো। কারণ অন্য দোকানতো খোলাই থাকবে।
অথচ কয়েকদিন আগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, মার্কেট বন্ধের দিনেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনিটরিং চালু আছে। আমরা যেখানে এ ধরনের বিষয় দেখি সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই আইন প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন