শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ট্রাক পার্কিং চার্জ বৃদ্ধির প্রতিবাদে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানী বন্ধ

প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস : বেনাপোল বন্দরে ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ‘ইনটিগ্রেটেড চেকপোস্টের’ ট্রাক পার্কিং চার্জ বৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল শনিবার সকাল থেকে পেট্রাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে বাণিজ্য বন্ধের কারণে বন্দরে দু’পাশে আমদানি-রফতানি পণ্য নিয়ে এক হাজার ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এসব পণ্যের মধ্যে মাছ, পান, পেঁয়াজ, ফুলসহ বিভিন্নপ্রকারের কাঁচামাল রয়েছে। দ্রæত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ওপারের পেট্রাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট এসোশিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কর্তিক চক্রবর্তী জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় ‘ইনট্রিগেটেড চেকপোস্টে আমদানি-রফতানি পণ্যের ট্রাক পার্কিং চার্জ হঠাৎ করে অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেখানে ব্যবসায়ীদের প্রবেশের উপর নানা বিধি-নিষেধ ও নিয়ম কানুন বেধে দেওয়ায় দ্রæত বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে অতিরিক্ত খরচ পড়ে যাবে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে সভা ডেকে আমদানি-রফতানি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে। সমাধান হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওপারের সূত্র জানায়, পেট্রাপোল বন্দর টার্মিনালে (সিডাবøুসি) আগে পণ্যবাহী ৪ চাকা লরীর (ট্রাক) প্রতিদিনের পার্কিং চার্জ ৮০ রুপি থেকে বাড়িয়ে ২৭০ রুপিতে করা হয়েছে। আর ১৬ চাকা লরির (ট্রাক) পার্কিং চার্জ ১২০ রুপি থেকে ৫৬০ রুপিতে বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বাণিজ্যিক কাজে ইনট্রিগেটেড চেকপোস্ট প্রবেশ করতে ঘণ্টাপ্রতি চার্জ নির্ধারণ করা হচ্ছে। এতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে খরচ বাড়লে তাপ্রভাবও পড়বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উপর। শুক্রবার দুপুর ২টায় ভারতের ল্যান্ডপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান ওয়াইএস সেরওয়াত ও বাংলাশের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চৌধুরী ফিতা কেটে ‘ইনটিগ্রেটেড চেকপোস্টের (সুসংহত চেকপোস্ট) উদ্বোধন করেন। গত ৩ বছর আগে ওই চেকপোস্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।
৩০০ হেক্টর জমির উপরে তৈরি ওই আধুনিক চেকপোস্ট এলাকাটি ৩শ’ বিএসএফ সদস্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এক হাজার ট্রাক একযোগে ধারণ করার ক্ষমতা সম্পন্ন ইনন্ট্রিগেটেড এই চেকপোস্ট চালু হলে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে আরও গতিশীলতা আসবে। ট্রাক টার্মিনাল, এয়ারকন্ডিশন ওয়ার হাউজ, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট জোন ও স্ক্যানিং মেশিনসহ আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সহজ করার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে এই বন্দরে।
আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে, তেমনি আমদানিও বাড়বে কয়েকগুণ বলে আশা করছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। সেইসঙ্গে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধাও নেবে ভারত সরকার। ১৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সুসংহত চেকপোস্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্দর ও কাস্টমসের মূল প্রশাসনিক ভবনসহ বিশ্রামাগার, চওড়া রাস্তা, আলো, আমদানি ও রফতানির ট্রাক রাখার গুদাম ঘর, পণ্য পরীক্ষার জন্য সিকিউরিটি চেকপোস্ট, পার্কিং, কোয়ারেন্টাইন ভবনসহ (পশু খাদ্য ওপ্রাণী) খাদ্যের গুণগত মান পরীক্ষাগার।
ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের বন্দর সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট উদ্বোধনের আগে ওপারে সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রতিদিন ট্রাক প্রতি ২ হাজার টাকা করে ট্রাক ড্যামারেজ আদায় করে আসছিল। বর্তমানে এটি চালু হওয়ায় আমদানিকারকদের ডেমারেজ চার্জ দিতে হবে না। দিনের ট্রাক দিনেই বাংলাদেশে রফতানি হবে। ৪-৫ দিন করে সময় লাগবে না। তাছাড়া সব ডেমারেজ চার্জ তো আমদানিকারকদের প্রদান করতে হয়। বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হাসাবুল ইসলাম জানান , ওপারে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন