এই সিরিজের আগে ফজলহক ফারুকির নামটা খুব একটা পরিচিত ছিল না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবে পা দেওয়া এই আফগানিস্তান পেসারকে এখন সবাই চেনেন। তিনি যে টানা তিন ম্যাচেই বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে আউট করেছেন!
তামিম তার দীর্ঘ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে একই সিরিজে একই বোলারের বিপক্ষে এবারই প্রথম টানা তিনবার আউট হলেন। তবে এর চেয়েও বড় দুশ্চিন্তা তামিমের আউট হওয়ার ধরন। তিনবারই যে বাঁহাতি ফারুকির ভেতরে আসা বলে আউট হয়েছেন তামিম। আগের দুই ওয়ানডেতে গুড লেংথের ডেলিভারিতে তিনি হয়েছিলেন এলবিডব্লু। সামনের পা সোজা রাখতে না পারার খেসারত দিয়ে ফুল লেংথের ডেলিভারিতে এবার তিনি হলেন বোল্ড। লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন তামিম। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল উপড়ে নেয় স্টাম্প। ২৫ বলে একটি মাত্র চারে তামিমের সংগ্রহ ১১ রান।
ভেতরের ঢোকা বলে এই বাঁহাতি ওপেনারের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠল আরও একবার। এই ফারুকি আবার তামিমের বিপিএল দল মিনিস্টার ঢাকার হয়ে খেলেছেন। অনুশীলনে ফারুকির বিপক্ষে তামিম ব্যাটিংও করেছেন। তবু তামিমের দুর্বলতা রয়েই গেছে। এই সিরিজেই হতাশ করলেন তামিম। বাংলাদেশ দলের পরবর্তী ওয়ানডে সিরিজ দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে। প্রোটিয়া দলে আছেন ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি দীর্ঘ বাঁহাতি পেসার মারকো ইয়ানসেন। ফারুকির মতো ইয়ানসেনও হবে তামিমের দুশ্চিন্তার কারণ।
বাঁহাতি পেসারদের ভেতরে আসা বলে তামিমের সমস্যা নিয়ে প্রথম ম্যাচের পর থেকেই কাজ শুরু করেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। বাঁহাতি পেসারের বিপক্ষে তামিম সামনের পা অফ স্টাম্পের অনেকখানি বাইরে নিয়ে খেলার চেষ্টা করেন। ভেতরে আসা বল প্যাডে লাগলেও যেন ইমপ্যাক্ট থাকে অফ স্টাম্পের বাইরে। কিন্তু পা অফ স্টাম্পের অনেকখানি বাইরে রাখতে গিয়ে তামিমের স্পাইক থাকে কাভার ফিল্ডার বরাবর। যে কারণে তাঁকে খেলতে হয় ক্রস ব্যাটে। বাঁহাতি পেসারের ভেতরে আসা বলে ব্যাট ছোঁয়ানো কঠিনই। তখনই এলবিডব্লু আর বোল্ডের আশঙ্কা বাড়ে।
সিডন্স বিষয়টি ধরতে পেরে তামিমের সঙ্গে এ নিয়ে কাজ করা শুরু করেন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের নেটে তামিমের সঙ্গে লম্বা সময় ধরে কাজ করতে দেখা গেছে তাকে। দুই দিন আগে সিডন্স বলছিলেন তামিমের ব্যাটিং সমস্যার কথা, ‘তামিম তার সামনের পা সোজা করতে চাচ্ছে। তবে এটা খুব দ্রুতই যে ঠিক করা সম্ভব তা কিন্তু নয়। আমরা লম্বা সময়ের ব্যাপারে কাজ করছি। যদি সে আগামী তিন থেকে চার বছর খেলে যেতে চায়, তাহলে সামনে পা সোজা করতে হবে।’
তবে সেই পরামর্শ কতটুকু বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন দেশসেরা এই ব্যাটার! সাত মাস পর জাতীয় দলের জার্সিতে তার ফেরাটাও হলো না সুখকর। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৮ ও ১২ রান করে সাজঘরে ফিরেছিলেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন