ইউক্রেনে-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে একটি চক্র শেয়ারবাজারে নানা গুজব ছড়িয়ে দেয়। যার প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ও রোববার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। তবে গত রোববার কিছুটা ঘুড়ে দাড়ায় বাজার। এই ধারাবাহিকতায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে গতকাল দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। দিনের লেনদেন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে, দাম কমার তালিকায় স্থান হয়েছে তার থেকে বেশি। এরপরও ঊর্ধ্বমুখী থেকেছে সূচক। মূলত বেশিরভাগ বিমা কোম্পানি দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখায় পতনের হাত থেকে কোনো রকমে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। শুরুর এই বড় উত্থান প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টাজুড়েই। ফলে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মল্যসূচক ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
এতে দিন শেষে সূচকের বড় উত্থান দেখা যাবে এমনটাই প্রত্যাশা করছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বদলাতে থাকে চিত্র। দাম বাড়ার তালিকা থেকে পতনের তালিকায় নাম লেখাতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। প্রথমে পতনের তালিকায় আসতে শুরু করে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীকালে বস্ত্র, প্রকৌশলসহ প্রায় সবকটি খাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে।
অবশ্য এ পরিস্থিতিতেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বিমা কোম্পানিগুলো। ফলে তালিকাভুক্ত ৫৩টি বিমা কোম্পানির মধ্যে দিনের লেনদেন শেষে ৪৫টি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দরপতনের তালিকায় স্থান করে নেয় ৭টি বিমা কোম্পানি। সিংহভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দিনের লেনদেন এতে ডিএসইতে ১৬৩টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৫৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়েছে ২ হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৯৮ কোটি ৯১ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৭৩০ কোটি ১ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৬৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৪৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ৯২ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফরচুন সুজ, সোনালী পেপার, কেয়া কসমেটিকস, ইউনিয়ন ব্যাংক, ড্রাগোন সোয়েটার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং সোনালী পেপার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৪টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন