প্যারিসে শেষ সময়ে গোলে পিএসজিকে জিতিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। তারকাসমৃদ্ধ দলটির বিপক্ষে প্রথম লেগের সেই পরাজয়ে রিয়াল মাদ্রিদের চ্যালেঞ্জ আগে থেকেই ছিল বেশ কঠিন। এবারও প্রথমার্ধে ফরাসি তারকা গোলে সেটা হয়ে উঠল পাহাড়সম। বিরতির পর প্রবল চাপ তৈরি করেও মিলছিল না গোলের দেখা। একটা সময় সেটা অসম্ভবই মনে হচ্ছিল। কিন্তু এরপর যেভাবে তারা ঘুরে দাঁড়াল, তা অসাধারণের চেয়েও বেশি কিছু। প্রতিপক্ষের ভুল আর সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় হ্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসলেন আরেক ফরাসি তারকা করিম বেনজেমা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে পা রাখল রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
প্রথম লেগে হারের পরই আনচেলত্তি ছুড়েছিলেন হুঙ্কার; ফিরতি পর্বে কেবল রিয়ালের ১১ জনের বিপক্ষে নয়, পুরো বার্নাব্যু’য়ের সঙ্গে লড়তে হবে পিএসজিকে। ৬১ হাজারের বেশি দর্শকের সামনে যে লড়াইয়ে বলা যায় ভরাডুবিই হলো মেসি-নেইমার-এমবাপেদের নিয়ে গড়া দলটির। গতপরশু রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু’য়ে ফিরতি লেগে রিয়ালের জয়টি ৩-১ গোলে। প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছিল পিএসজি। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ অগ্রগামিতায় পরের ধাপে গেল কার্লো আনচেলত্তির দল।
অসম্ভব জয় হয়েছে মাত্র ১৮ মিনিটের ঝলকে বেনজেমার হ্যাটট্রিকে। ৬১তম মিনিটে পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজো দোন্নারুমার ভুলে সুযোগ তৈরি হয় বেনজেমার। মার্কো ভেরাত্তির ব্যাক-পাসে অযথা কালক্ষেপণ করে বেনজেমার চাপের মুখে পড়েন দোন্নারুমা। এরপর বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে এই ইতালিয়ান তুলে দেন ভিনিসিয়ুসের পায়ে। তার কাছ থেকে বল পেয়ে অনায়াসে ফাঁকা জালে বল ঠেলে দেন বেনজেমা। ৭৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের পাস ধরে বল জালে জড়ান ফরাসি তারকা। দুই মিনিট পর শেষ পেরেক ঠুকে দেন তিনি। ডি-বক্সে ঢুকে পড়া ভিনিসিয়ুসের পা থেকে বল কেড়ে বিপদমুক্ত করতে চেয়েছিলেন মার্কুইনোস। কিন্তু বল পেয়ে যান সুযোগ সন্ধানী বেনজেমা। দারুণ নিচু শটে হ্যাটট্রিক পুরো করে আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠেন তিনি।
স্মরণীয় জয় পাইয়ে দেওয়া করিম বেনজামা বলছেন, এই ফিরে আসা তাদের অদম্য মনোবলের প্রমাণ। উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে এই ফরাসি ফরোয়ার্ড গণমধ্যমকে জানান কতটা তেতে ছিলেন তারা, ‘রিয়াল মাদ্রিদ জাগ্রত আছে এবং আমরা দেখিয়েছি যেকারো বিপক্ষে কীভাবে জেতা যায়। এই ফিরে আসাটা হয়েছে মানসিক শক্তির কারণে। এই কিংবদন্তি ক্লাবের অংশ হওয়ায় এবং এগিয়ে যাওয়ায় নিজেকে সম্মানিত মনে করছি।’
যোগ করা সময়ের শেষ দিকে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাচ জুড়ে বিবর্ণ থাকা মেসি। কিন্তু ফ্রি কিকে বল অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে গেলে আর নায়ক হয়ে ওঠা হয়নি তার। ম্যাচে ফেরা হয়নি পিএসজির। কাড়ি কাড়ি অর্থ ঢেলেও তাই আরও একবার অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বপ্ন আগেভাগেই ভেঙে গেল প্যারিসের ধনী ক্লাবটির।
এদিকে প্রথম লেগে গোল উৎসব করা ম্যানচেস্টার সিটি একই রাতে জালের দেখাই পেল না। তাতে অবশ্য একটুও ভাবনায় পড়তে হয়নি তাদের। ঘরের মাঠে হতাশাজনক ড্রয়ের পরও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে গেছে পেপ গার্দিওলার দল। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর ফিরতি লেগের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। প্রথম লেগে স্পোর্তিং লিসবনের মাঠে ৫-০ গোলে জেতায় শেষ আটে উঠতে কোনো সমস্যই হয়নি ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের।
রিয়াল মাদ্রিদ ৩-১ পিএসজি
দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে শেষ আটে রিয়াল
ম্যানসিটি ০-০ লিসবন
দুই লেগ মিলিয়ে ৫-০ ব্যবধানে শেষ আটে সিটি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন