অনুশীলন শেষে বাড়ি ফেরার তাড়া তাসকিন আহমেদের। পরদিনই দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্লাইট, লম্বা সময়ের জন্য দেশ ছাড়ার আগে পরিবারের সঙ্গে যতটা সময় কাটানো যায়। তিন ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে তিন ভাগে ভাগ হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। আজ সকালে ঢাকা ছাড়বে প্রথম দল, রাতে আরেকটি ও আগামীকাল সকালে রওনা হবে আরেক ভাগ।
মিরপুর শেরবাংলা স্টেডিয়ামে বোলিং সেশন শেষে গাড়ীতে ওঠার আগে বলছিলেন, ‘ছেলেটা বেড়ে উঠছে, ওর নানা কা--কীর্তি দেখতে ভালো লাগে। ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না।’ পেশাদারীত্বের দাবি মেটাতে তবু সেই মায়ার টান ছেড়ে যেতেই হয়। পরিবারের প্রতি যেমন ভালোবাসা আছে, দলের প্রতি দায়িত্বও তো আছে। তাসকিন যেমন দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন, একটি স্বপ্ন বুকে পুষে।
হারাতে হারাতে পথে ফেরা, নিজেকে ঘষেমেজে শানিত করা, এসব দিক থেকে তাসকিন এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে উদাহরণ। কোচরা তার নিবেদনের কথা তুলে ধরেন অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে, সতীর্থরাও তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। গত বছর দুয়েক ধরে পারফরম্যান্সে তিনি দারুণ ধারাবাহিক। দলে অবদান রাখছেন নিয়মিত। কিন্তু দুর্দান্ত কোনো পারফরম্যান্সে জয়ের মূল নায়ক এখনও হতে পারেননি তিনি। এবার নিজেকে সেই গৌরবে রাঙাতে চান তাসকিন। অনুশীলন শেষে গতকাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শোনালেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তার ব্যক্তিগত লক্ষ্যের কথা, ‘নিজের শক্তির জায়গা, নিজের মৌলিকত্ব, নিজের আয়ত্ত্বের মধ্যে থেকেই সেরাটা দিতে চাই। অবশ্যই খুব ইচ্ছের জায়গা যেন ম্যাচ জেতানোর পেছনে নিজের অবদান থাকে বা আমি একটা ম্যাচ জেতাতে পারি ও ভালো কিছু করতে পারি।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সেই সুযোগটা তার পাওয়ার কথা। সেখানকার গতিময় ও বাউন্সি উইকেটে তো ফাস্ট বোলারদের দিকেই তাকিয়ে থাকবে দল। তাসকিনও তা জানেন। তবে উইকেটে পেসারদের জন্য সম্ভাবনার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জও যে কিছুটা আছে, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন ২৬ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার, ‘ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, এসব জায়গায় যথাযথ স্পোর্টিং উইকেট থাকে। বোলার-ব্যাটসম্যান সবারই ভালো করার সুযোগ থাকে। তবে চ্যালেঞ্জ এখানে আরও বেশি। কারণ বাউন্স সমান থাকে, সুন্দর ক্যারি থাকে। এজন্য উপযুক্ত লেংথে ও ঠিক জায়গায় বল না করলে রান দেওয়ার শঙ্কাও আছে। কাজেই বাড়তি সুবিধাও যেমন আছে, তেমনি আরও বেশি নিখুঁত হতে হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটের জন্য বলের আদর্শ লাইন ও লেংথ বলে দেওয়ার জন্য উপযুক্ত একজনকে এবার অবশ্য দলে পাচ্ছেন তাসকিনরা। ওই দেশেরই কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার অ্যালান ডোনাল্ড এই সিরিজ দিয়েই কাজ শুরু করবেন বাংলাদেশের ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের সেরা বোলারদের একজন তিনি, তেমনি কোচ হিসেবেও তার অভিজ্ঞতা অনেক। তাসকিন বললেন, ডোনাল্ডের সঙ্গে কাজ করতে তারা মুখিয়ে আছেন, ‘আমরা রোমাঞ্চিত যে উনার মতো কিংবদন্তি একজন কোচের তত্ত্বাবধানে কোচিং করব। আমাদের দেশি কোচ বলেন বা বিদেশি, সবারই থিওরি প্রায় একই। হয়তো অভিজ্ঞতা একেকজনের একেকরকম। আমরাও রোমাঞ্চিত যে উনার মতো একজন কোচকে পাব। উনার থেকে যতটুকু নেওয়া যায়, নেওয়ার চেষ্টা করব।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন