ওমাইমা সোহেল হাঁপ ছেড়ে বাঁচতে পারেন এই ভেবে যে সেই বলে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার সিউন লুস একের বেশি রান নিতে পারেননি। ওই বলে চার বা ছক্কা হয়ে গেলে ওমাইমার মেজাজ খারাপ হয়ে যেত, নিশ্চিত! আম্পায়ারের ভুলের কারণে চার-ছক্কা হজম করতে কেই-বা চায়!
ঘটনাটি মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের। গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন পাকিস্তানের মেয়েরা। টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় তারা। সিউন লুস ও লরা উলভার্টের কল্যাণে ততক্ষণে শক্ত একটা ভিত পেয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জুটি ভাঙার আশায় ওমাইমা সোহেলের হাতে বল তুলে দিলেন অধিনায়ক বিসমা মারুফ। ওভারের শেষ বলে আরেকটু হলে অধিনায়কের পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দিয়েই দিচ্ছিলেন ওমাইমা, লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক লুসকে। কিন্তু উলভার্টের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর নেওয়া রিভিউয়ে জীবন ফিরে পান লুস। শেষ বল? ততক্ষণ পর্যন্ত অন্তত সেটাই মনে হচ্ছিল! একটু পর সে ধারণা ভেঙে দিলেন ওমাইমা নিজেই। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এরপর আরও একটা বল করলেন। আম্পায়ারদের হিসেবের ভুলে সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত বলটা লংঅনে ঠেলে দিয়ে এক রান নিয়ে নিলেন লুস। বিশ্ব দেখল চমক-জাগানিয়া এক ঘটনা। সাত বলের ওভার!
লুস (৬২) আর উলভার্টের (৭৫) দুই অর্ধশতকেই ভালো স্কোর গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ উইকেটে তোলে ২২৩ রান। পাকিস্তানের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন দুই ফাতিমা-গুলাম ও সানা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২১৭ রানের মধ্যেই অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। প্রথমে নাহিদা খান (৪০) ও পরে নিদা দারকে (৫৫) নিয়ে ওমাইমাই (৬৫) পাকিস্তানের জয়ের আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু বাকিরা কেউই ব্যাট হাতে সফল হননি। শবনিম ইসমাইল (৩ উইকেট), মারিজানে কাপ (২) ও আয়াবোঙ্গা খাকা (২) মিলে আটকে দিয়েছেন টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের প্রথম জয় পাওয়ার পথ। হারটিও অনেক বেদনারই, মাত্র ৬ রানের!
তবে ওমাইমাই যে প্রথম সাত বলের ওভার করলেন, এমন কিন্তু নয়। ২০১৯ সালের আইপিএলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন সাত বলের ওভার করেছিলেন। সেবার অশ্বিনের করা ওভারের সপ্তম বলে উল্টো চার মেরে বসেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের কুইন্টন ডি কক। যদিও পরে জানা যায়, ওভারের প্রথম বলটা ‘ডেড’ ছিল দেখেই অশ্বিনকে অতিরিক্ত বলটা করার অনুমতি দিয়েছিলেন আম্পায়াররা। ওমাইমার ওভারের কোনো বলই ‘ডেড’ ছিল না। ২০১৯ সালের বিগ ব্যাশ লিগেও বেন ডোয়ারশুইসের কল্যাণে দেখা মিলেছিল সাত বলের ওভারের। অশ্বিনের সপ্তম বলে বাউন্ডারি হলেও, ডোয়ারশুইসের কপাল এত খারাপ ছিল না। বরং মাইকেল ক্লিঙ্গারকে স্টিভ ও’কিফের ক্যাচ বানিয়ে ওভারের সপ্তম বলটা স্মরণীয় করেই রাখেন তিনি। সে ওভারে কোনো বল ডেডও ছিল না, ক্লিঙ্গার বা মাঠে থাকা ক্যামেরন ব্যানক্রফট ডোয়ারশুইসের অতিরিক্ত বল নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্যও করেননি! সে হিসেবে ওমাইমা নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন