শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

সাকিবহীন বাংলাদেশের এসিড টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। গতকাল সকাল ১১টার দিকে উড়ানে চেপেছে প্রথম দল, যেখানে ছিলেন জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার। এদিন রাত ১১টায় গেছে সবচেয়ে বড় গ্রুপটি, আজ সকাল পৌনে ১১টায় রওনা হবে শেষ দল। এই তিন গ্রুপের কোনো একটিতে থাকতে পারতেন সাকিব আল হাসানও। টেস্ট-ওয়ানডে, দুই সংস্করণেই তাকে রেখে ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি যাচ্ছেন না সফরে। তবে না থেকেও যেন প্রবলভাবে আছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার।
২০০৬ সালের আগস্টে সাকিবের আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশ দল তিন সংস্করণ মিলিয়ে খেলেছে ৪৭১ ম্যাচ। সাকিবের ক্যারিয়ার ৩৭৩ ম্যাচের। এবার এই সফরেই অপেক্ষায় আছেন বাংলাদেশের হয়ে অদ্ভুত এক শতকের। কী সেই শতক? ম্যাচ মিসের! চোট, নিষেধাজ্ঞা, ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কারণে ছুটি- সব মিলিয়ে দেড় যুগের ক্যারিয়ারে সাকিব মিস করছেন ৯৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেই হয়ে যাচ্ছে সাকিবের মিসের সেঞ্চুরি। সফরের আগেও তাই ঘুরেফিরেই আসছে তার প্রসঙ্গ। সেই আলোচনা ঝেড়ে ফেলে সামনে তাকাতে চান হাবিবুল। দক্ষিণ আফ্রিকার পথে রওনা হওয়ার আগে সাবেক এই অধিনায়ক বলে গেলেন, এই দল নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকায় জয় খরা কাটানোর বিশ্বাস আছে তার। দলের সেরা ক্রিকেটারকে না পাওয়া মানে সম্ভাবনায় চোট নিশ্চিতভাবেই।
সাকিব একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান ও বোলার, তাকে ছাড়া তাই একাদশের ভারসাম্যও নড়ে যায় খানিকটা। সেই বাস্তবতা জানেন বাশারও। তবে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি শোনালেন আশার গান, ‘সাকিবকে অবশ্যই মিস করব। আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। সাকিব দলে থাকলে দলের ভারসাম্য অনেক ভালো থাকে। লম্বা সময় ধরে সে আমাদের সেরা পারফরমারদের একজন। বিশ্ব ক্রিকেটে তার পাফরম্যান্স আমরা দেখেছি। তবে এখন আর এটা নিয়ে ভাবছি না। আমাদের যে দলটা আছে, ওদের নিয়েই ভাবছি। আমাদের বিশ্বাস, এই দলটা নিয়েই আমরা ভালো পারফর্ম করতে পারব। সব সময় আপনি সেরা খেলোয়াড়কে পাবেন না। তার জায়গায় যে খেলবেন, সে-ই এখন সেরা খেলোয়াড়। তাকে নিয়েই চেষ্টা করতে হবে। এর আগেও সেরা খেলোয়াড়দের ছাড়া আমাদের খেলতে হয়েছে এবং পারফর্মও করেছি। আমার বিশ্বাস, যারা দলে আছেন, তারা ভালো করতে পারবে।’
সেই ভালো করা মানে ম্যাচ জয়। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকায় ৬ টেস্ট ও ১৪ ওয়ানডে খেলে জয় ব্যাপারটির সঙ্গে কোনো পরিচয় নেই বাংলাদেশের। তবে ওয়ানডে দল এখন অনেক পোক্ত ও অভিজ্ঞ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে এখন ১০০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতার পথ ধরে এবার ওয়ানডেতে অন্তত খরা কাটানোর আশায় বুক বাঁধছেন হাবিবুল, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার দলটা যথেষ্ট ভালো। কন্ডিশনও আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের ওয়ানডের ফর্ম যদি দেখেন, একটু আশাবাদী তো হতেই পারি। সেই আশা নিয়েই যাচ্ছি। আমরা জানি যে, আমাদের কাজটা কঠিন হবে। ওরা ওদের সেরা দলটা নিয়েই আমাদের সঙ্গে নামছে। ওরা এবার মূল ভেন্যুতেই খেলাগুলো দিচ্ছে, মানে বাংলাদেশকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে পারফর্ম করছি আমরা, যে ফর্মে আছে বাংলাদেশ দল, সেই ফর্ম যদি ধরে রাখতে পারি, নিজেদের সেরাটা যদি দিতে পারি, ভালো কিছুর আশা আমরা করতেই পারি। সেই আশা নিয়েই যাচ্ছি যে অন্যান্যবারের চেয়ে আমরা ভালো করব এবার।’
ওয়ানডে সিরিজের আগে অবশ্য সময় খুব বেশি পাচ্ছে না দল। ওয়ানডে দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটার গেছেন গতরাতের ফ্লাইটে। আজ পৌঁছে আগামীকাল গোটা দিন বিশ্রাম। আগামী শুক্রবার ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ও অনুশীলনের জন্য সময় ¯্রফে চার দিন। তবে গত কয়েক মাসের টানা খেলা ও ঠাসা সূচিতে কয়েকদিন আগে যাওয়ার বাস্তবতাও ছিল না। হাবিবুল তাই বললেন, এই কদিনে যতটা সম্ভব প্রস্তুত হতে হবে প্রোটিয়া চ্যালেঞ্জের জন্য, ‘সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করলে এর চেয়ে ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ ছিল না। একটু আগে গেলে হয়তো আরেকটু ভালো হতো। কারণ, কন্ডিশন সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে বেশি সময় কাটাতে পারলে, দু-একটি প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে পারলে সেটা অনেক সাহায্য করতে পারত অবশ্যই। তবে কিছু করার নেই। যেটুকু প্রস্তুতির সময় পাব, সেটুকুতেই নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।’
প্রোটিয়াদের ঘরের মাঠে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৯ ম্যাচ খেলে জয় এখনও অধরা বাংলাদেশের। ২০১৭ সালের পর প্রোটিয়াদের মাটিতে নতুন কিছুর আশায় এবার তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট খেলতে যাচ্ছে টাইগাররা। ১৮ মার্চ সেঞ্চুরিয়নে শুরু হবে দুই দলের প্রথম ওয়ানডে। ২০ মার্চ জোহানেসবার্গে দ্বিতীয় ও ২৩ মার্চ ফের সেঞ্চুরিয়নে হবে শেষ ম্যাচ। ৩০ মার্চ ডানেডিন টেস্ট দিয়ে শুরু হবে লাল বলের সিরিজ। শেষ টেস্টটি ৭ থেকে ১২ এপ্রিল, পোর্ট এলিজাবেথে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন