শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রাজুর সাফল্যের পেছনে স্লোয়ার

পরিকল্পিত বোলিংয়ে ম্যাচ উইনার মাহামুদুল্লাহ

প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রথম স্পেলেই (২-০-১১-১) অধিনায়ক ড্যারেন স্যামীকে দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। অস্ট্রেলিয়ার রিকি ওয়ালেসকে দিয়েছেন ফিরিয়ে। এমন এক স্পেলে পেস বোলার আবুল হাসান রাজুকে ¯øগে ২ ওভার (১৮ এবং ২০তম) বোলিংয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন রাজশাহী কিংস অধিনায়ক ড্যারেন স্যামী। রাজুর হাতে বল তুলে দিয়ে খুলনা কিংসের স্কোরের লাগাম টেনে ধরার নির্দেশনা ছিল ড্যারেন স্যামীর। তবে অধিনায়কের দাবির চেয়েও বেশি কিছু করে দেখিয়েছেন পেস বোলার আবুল হাসান রাজু। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে খুলনা কিংসের অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহকে লং অনে এবং পরের বলে অলক কাপালীকে মিড উইকেটে ক্যাচে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ২০তম ওভারে আরিফুলের হাতে প্রথম বলে ছক্কা খেয়েও হারাননি খেই। দ্বিতীয় বলে সেই আরিফুল দিয়ে এসেছেন থার্ডম্যানে ক্যাচ, ৪র্থ বলে শফিউল বোল্ড। ভয়ংকর দ্বিতীয় স্পেলটি তার (২-০-১২-৪)! তিন বছর আগে টেস্ট অভিষেকে ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সেঞ্চুরিতে করেছেন বিশ্বরেকর্ড। তবে তিন ভার্সনের ক্রিকেটের কোনটাতেই বল হাতে নিজের কার্যকরীতা পারেননি দেখাতে। ২০১৫’র এপ্রিলের পর দলের বাইরে তাই রাজু। টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে ইতোপূর্বে নিজের সেরা পারফরমেন্স ছিল ৩/২০। বিপিএল টি-২০তে সেই রাজুই কি না দেখা পেলেন ৫ উইকেট! বিপিএল’র প্রথম তিনটি আসরে ৫ উইকেটের ইনিংস ছিল ৪ জনের। ২০১২ সালে ঢাকা গøাডিয়েটর্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক ইনিংসে দূরন্ত রাজশাহীর পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ সামীকে (৫/৬) দিয়ে শুরু, ২০১৫ সালে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে বরিশাল বুলসের ক্যারিবিয়ান পেসার কেভন কুপারের (৫/১৫), সিলেট সুপার স্টারর্সের বিপক্ষে সে বছর বরিশাল বুলস পেসার আল আমিন (৫/৩৬) এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের তিসারা পেরেরার (৫/২৬) পাশে এবার জায়গা পেলেন রাজশাহী কিংসের আবুল হাসান রাজু (৫/২৮)।
বিপিএলে ইনিংসে ৫ উইকেটে আল আমিনের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী তিনি। সেøায়ার ডেলিভারীতে এমন সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজুÑ ‘উইকেটটা দেখে মনে হয়েছিল, বলটা একটু ধরবে। বোলিংয়ে ভেরিয়েশন আনতে পারলে ভাল কিছু করা সম্ভব, তা ধরে নিয়ে বল করেছি। এ কারণেই হয়তোবা আজকে আমি আজকে সাফল্য পেয়েছি। সেøায়ার নিয়ে অতিরিক্ত কাজ করেছি, তার ফল পেলাম।’
রাজুর এমন বোলিংয়ের ম্যাচে শেষ ওভারে হেরে গেছে রাজশাহী কিংস। ৬ বলে ৭ রান, হাতে ৩ উইকেটÑ এমন সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে থেকেও ৩ রানে হেরে গেছে রাজশাহী কিংস। শেষ ওভারে খুলনা টাইটান্সের অবিশ্বাস্য এই জয়ের নায়ক অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহ! ওই ওভারে ৩ রানে তিন তিনটি শিকারে দলকে উৎসবে ভাসিয়েছেন এই অফ স্পিনার। এক ওভারের প্রথম স্পেলে ৪’র বেশি রান দেননি বলে শেষওভারটা করবেন বলে স্থির করেছিলেন, শেষ ওভারে পরিকল্পিত বোলিংয়ের সুফল পেয়েছেন মাহামুদুল্লাহÑ ‘শেষ ওভারে যেহেতু অন্য কোন বিকল্প ছিল না, তাই আমার বোলিংয়ে আসতে হয়েছে। নিজের উপর খুব একটা চাপ নেইনি। তবে শেষ বলটা করার সময় চাপে ছিলাম। আমি শুধু ভাবছিলাম যে যদি ভালো জায়গায় বল ফেলতে পারি আর ভাগ্যের সহায়তা পাই, তাহলে হয়তো ম্যাচ জিততেও পারি। ছয় বলে ৭ রান রাজশাহীর জন্য খুবই সহজ লক্ষ্য ছিল। এরকম একটা ম্যাচ জিততে পেরে বেশ ভালো লাগছে। রাজুর উইকেটটা আমাকে একটা মোমেন্টাম দিয়েছে। তখনই আমি ভাবা শুরু করেছি যে, ফলাফলটা আমাদের দিকেও আসতে পারে। পরিকল্পনা ছিল আউটসাইড অফস্ট্যাম্প ডেলিভারী। নাজমুল অপু সøগ সুইপ করতে পারে, তাই আমি ওই জায়গায় বল ফেলতে চাচ্ছিলাম না। শেষের আগের বলটায় তাই আমি একটু থেমেছিলাম, দেখতে চেয়েছিলাম সে কি করে। দেখি যে সে আসলে রিভার্স সুইপই করতে গিয়েছে। তারপর আমি আমার পরিকল্পনাই ঠিক রেখেছি, ভেবেছি আউটসাইড অফস্টাম্পই বল করবো। এক্সট্রা কভার ফিল্ডারটাও বের করে রেখেছিলাম। অপু মিস করেছে, আমরাও ম্যাচটা জিতে গেছি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন