চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনাল খেলা হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও স্মরণীয় কিছু সাফল্য ধরা দিয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়? ভাবতেও অনেকের লাগতে পারে ভয়। মনে জাগতে পারে সংশয়। তবে রাসেল ডমিঙ্গো দারুণ আত্মবিশ্বাসী। দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জয়ের পর দলকে বিশ্বকাপ জয়ের বিশ্বাস জোগাচ্ছেন বাংলাদেশ কোচ।
ওয়ানডেতে বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ সমীহ জাগানিয়া শক্তি। তবে দেশের বাইরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল না। সিরিজ জয় বলতে এতদিন ছিল কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে জয়। কিন্তু এবার সিরিজ জয় এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়, যেখানে সফরকারী দলের জন্য জেতা ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলির একটি।
এই জয়ের পর দল এখন দারুণ চনমনে। আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছেন রাসেল ডমিঙ্গোও। সিরিজ জয়ের পর ড্রেসিং রুমে যে কথা বলেছেন কোচ, পরদিন সংবাদ সম্মেলনে তা শোনালেন অধিনায়ক তামিম, ‘কালকে (পরশু) রাসেল (ডমিঙ্গো) খুব ভালো একটা কথা বলেছেন। ম্যাচের পর যখন আমরা ড্রেসিং রুমে কথা বলি, তখন তিনি বলেছেন যে, “এই সিরিজ জয়ের পর যদি বিশ্বাস না করো যে, তোমরা বিশ্বকাপ জিততে পারবে, তাহলে আর কোনো কিছুতে বিশ্বাস করবে না।” খুব ভালো একটি বার্তা ছিল এটি তার কাছ থেকে।’
শুধু দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ জয়ই নয়, বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব হিসেবে চালু হওয়া আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে বাংলাদেশ শীর্ষে বেশ অনেক দিন ধরেই। এবারের জয়ে অবস্থান পোক্ত হয়েছে আরও। বিশ্বকাপের অবশ্য এখনও দেরি আছে বছর দেড়েক। তামিম তাই আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে চান এবারের জয়ের বিশ্বাসকে সঙ্গী করে, ‘আমরা সবসময়ই ভালো দল, ওয়ানডেতে। তবে দেশের বাইরে ম্যাচ জয় ও সিরিজ জয়ের ঘাটতি ছিল। আশা করি, এটা কেবলই শুরু। এখান থেকে দেশের বাইরে আমরা আরও এগিয়ে যাব।’
সিরিজ জিতে ফেরার পর ড্রেসিংরুমের সিঁড়িতে তামিমকে জড়িয়ে ধরেন ডমিঙ্গো। লিটন দাসকে আলিঙ্গন করে অনেকক্ষণ কথাও বলেন তিনি। হোটেলে ফেরার সময় তুমুল উল্লাসে বাস থেকে নেমে নাচতে দেখা গেছে তাকে। তামিম জানালেন এই সিরিজ জেতার জন্য প্রচণ্ড বিশ্বাস যুগিয়েছেন প্রধান কোচ, ‘দেশে থেকে আসার সময় এটা বিশ্বাস ছিল যে জিততে পারব। সিরিজ জিততে পারব কিনা, এটা বলাটা কঠিন ছিল। তবে ম্যাচ জয়ের বিশ্বাস ছিল। তবে এটাও বলতে হয়, কোচের প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল যে বাংলাদেশ সিরিজটি জিতবে। তিনি ক্রমাগত বলে গেছেন এবং ক্রিকেটারদেরও সেই বিশ্বাস জোগানোর চেষ্টা করেছেন।’
বাংলাদেশের প্রধান কোচ দক্ষিণ আফ্রিকান। সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও তাই। পাওয়ার হিটিং কোচ হিসেবে ওয়ানডে সিরিজে কাজ করেছেন আলভি মরকেল। তামিম জানান প্রোটিয়াদের ভেতরের খবর দিয়ে সাহায্য করেছেন এই কোচরা, ‘তারা বিরাট ভূমিকা রেখেছেন, আমার কাছে মনে হয়। সব তথ্য তারা দিয়েছেন। যতটা পারা যায়, ভাগাভাগি করেছেন আমাদের সঙ্গে। পাশাপাশি আমাকে এটাও বলতে হবে, যারা কাজ করে গেছেন আমাদের সঙ্গে, তাদেরও অবদান আছে। তাদেরকে ভুললে চলবে না। যারা কাজ করছেন এখন, তাদের তো অবদান অবশ্যই আছে। দলীয় প্রচেষ্টা মানে কোচিং স্টাফও এটার অংশ। ২৫-৩০ জনের স্কোয়াড আমরা যে আছি, সেখানে ম্যাসাজম্যান, থ্রোয়ার, সবারই অবদান আছে। ওরা নিজেদের কাজ ঠিকঠাক না করলে আমরা হয়তো ফিট থাকতাম না বা ভালোভাবে প্রস্তুত হতে পারতাম না।’
ওয়ানডে সিরিজ জেতার সুখস্মৃতি নিয়েই গতকাল প্রথম টেস্টের ভেন্যু ডারবানে গেছে বাংলাদেশ দল। আগামী ৩১ মার্চ থেকে কিংসমিডে খেলবে মুমিনুল হকের দল। সিরিজের দ্বিতীয় শেষ টেস্ট শুরু হবে ৭ এপ্রিল পোর্ট এলিজাবেথে, সেন্ট. গ্রেগরি’স পার্কে এই প্রথম খেলবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের দলে যোগ দেবার কথা সাকিব আল হাসানেরও। দক্ষিণ আফ্রিকায় এখনও পর্যন্ত ৬ টেস্ট খেলে সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ, ৫টিতেই ইনিংস ব্যবধানে। আরেকটি টেস্টে হার ৩৩৩ রানে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন