নিজেদের কার্যক্রমের ২৫ বছর পূর্তি করেছে গ্রামীণফোন। এ যাত্রাপথে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ বছর স্বাধীনতার ৫১ বছর উদযাপন করছে বাংলাদেশ, ঠিক একই সময়ে সমাজের ক্ষমতায়নে নিজেদের ২৫ বছর পূরণ করলো গ্রামীণফোন। ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনা এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দেশের সম্ভাবনা উন্মোচনের লক্ষ্য নিয়ে গ্রামীণফোনের স্বপ্নের শুরু। প্রতিষ্ঠার রজত জয়ন্তীতে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পেরে গ্রামীণফোন গর্বিত। ডিজিটাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময় এ বিশ্বাস নিয়ে এখন প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য সামনের দিনগুলোতেও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য নিজেদের ডিজিটাল টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান পরিণত করা এবং কানেক্টিভিটির বাইরে অন্যান্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখা। আজ রোববার (২৭ মার্চ) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিজেদের কার্যক্রম এবং এশিয়ায় টেলিনরের প্রথম কার্যক্রমের রজত জয়ন্তী উদযাপন করেছে গ্রামীণফোন। অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, সিএমও সাজ্জাদ হাসিব, সিটিও রাদে কোভাসেচিভ, সিসিএও (ভারপ্রাপ্ত) হোসেন সাদাত, হেড অব মার্কেটিং নাফিস আনোয়ার চৌধুরী, একেএম আল আমিন, হেড অব নেটওয়ার্ক সার্ভিস এবং স্বনামধন্য গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশার।
১৯৯৭ সাল থেকে দেশের মানুষের সবচেয়ে পছন্দের টেলিকম ব্র্যান্ড হবার ক্ষেত্রে গ্রামীণ জনপদকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাবার বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ইয়াসির আজমান। অনুষ্ঠানে তিনি পল্লীফোনের প্রথম গ্রাহক লাইলী বেগম ও মধুপুর বনাঞ্চলের সুবীর নকরেকের গল্প বলেন। পেফোন সেবার মাধ্যমে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে লাখো মানুষের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন লাইলী বেগম; অন্যদিকে, সুবীর নকরেক কানেক্টিভিটির মাধ্যমে শুধু নিজের জীবনেই পরিবর্তন আনেননি, পাশাপাশি গারো সম্প্রদায়ের অন্যান্যদের জন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন কীভাবে ফোরজি কানেক্টিভিটি সম্ভাবনা উন্মোচনে সহায়তা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, বাংলাদেশ শূন্য থেকে আজ অসীম সম্ভাবনার দেশে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বিগত ২৫ বছর ধরে দেশের পরিবর্তনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত। একটি স্ব-নির্ভর, ডিজিটাল অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য ৫১ বছর বছর বয়সী অদম্য বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনে আমাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। গুরুত্বপূর্ণ এ মুহূর্তে আমি, গ্রামীণফোনের আগের এবং বর্তমান সহকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা ও অঙ্গীকারের জন্য ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি, সবসময়, সবক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের ওপর আস্থা রাখার জন্য আমি সরকার, আমাদের সকল পার্টনার, রিটেইলার, ডিস্ট্রিবিউটর, স্টেকহোল্ডার, শেয়ারহোল্ডার এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমাদের সকল গ্রাহক এবং সমগ্র দেশকে ধন্যবাদ জানাই। সময় এখন আমাদের যাত্রার পরবর্তী অধ্যায় শুরু করার যে যাত্রায় অনিশ্চয়তা রয়েছে, যা আবার একই সাথে রোমাঞ্চপূর্ণ। এক্ষেত্রে, আমরা আমাদের লক্ষ্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এবং আমরা সবাইকে একসাথে মিলে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানাই।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের সিএমও সাজ্জাদ হাসিব প্রতিষ্ঠানটির আগামী দিনের লক্ষ্যের ব্যাপারে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষের সবচেয়ে পছন্দের টেলিকম ব্র্যান্ড হিসেবে আমাদের মূল্যবান গ্রাহকদের সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন সেবাদান করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। সমাজের ক্ষমতায়নে এবং প্রযুক্তির সুবিধা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হবে আরও দৃঢ়। মানুষের জীবনের রূপান্তরে আমরা গ্রাহকদের চাহিদা অনুধাবনের ক্ষেত্রে আরও বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবো। একসাথে আমাদের গ্রাহকদের আরও উন্নত সেবাদানে ভবিষ্যতে আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও ইকোসিস্টেম পার্টনারদের সাথে আরও বড় পরিসরে অংশীদারিত্বের ব্যাপারে প্রত্যাশী। ডিজিটাল কানেক্টিভিটির সাথে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময়।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার ভিডিও বার্তার মাধ্যমে গ্রামীণফোনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান সমাজের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার ও রূপান্তর প্রতিষ্ঠানটির প্রতিশ্রুতি নিয়ে বলেন, উন্নত কানেক্টিটির মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়নে গ্রামীণফোনের প্রতিজ্ঞার জায়গা থেকেই বিস্তৃত কাভারেজ নিশ্চিত করা ও সবার জন্য কানেক্টিভিটির সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের দেশ, বিশেষ করে, আমাদের তরুণদের মাঝে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রামীণফোন মনে করে, এ সম্ভাবনা উন্মোচনের এবং সবাই মিলে একটি আধুনিক জাতি গড়ে তুলতে ও সবার জন্য কানেক্টিভিটির সুবিধা নিশ্চিত করতে; পাশাপাশি, একটি স্ব-নির্ভর ও ডিজিটাল অর্থনীতির দেশ বিনির্মাণে আমাদের লক্ষ্যের দিকে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময়।
বাংলাদেশ এর স্বাধীনতার ৫১ বছর উদযাপন করছে, আর ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টভিটি পার্টনার হিসেবে গ্রামীণফোন দেশের জন্য এবং দেশের নাগরিকদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের উন্নত জাতি গঠনে গ্রামীণফোনের ভূমিকা নিয়ে দু’টি অডিও-ভিজ্যুয়াল (এভি) দেখানো হয়। যেখানে কাব্যিকভাবে গ্রামীণফোনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তা ও অতিথিরা করপোরেট ও সামাজিক ক্ষেত্রে সিমপ্লিফায়েড সল্যুশনের মাধ্যমে উদ্ভাবন নিয়ে আসার বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান। এছাড়াও, সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে ২৫ বছরের নতুন একটি লোগো উন্মোচন করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন