মার্চের ফিফা উইন্ডোতে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে হারলেও মঙ্গোলিয়াকে হারাতে চায় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে প্রীতি ম্যাচে সফরকারী মঙ্গোলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছেন জামাল ভূঁইয়ারা। আজ বিকাল সাড়ে ৫টায় শুরু হবে বাংলাদেশ-মঙ্গোলিয়া ম্যাচটি। দীর্ঘদিন পর এ ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের দর্শক ফিরছেন স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। একশ’ টাকায় টিকিট কিনে খেলা দেখতে পারবেন দর্শকরা। তাই অতিথি দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠের পুরো সুবিধাটাই পাবে লাল-সবুজরা।
মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে জয়ের আশা অমূলক নয় বাংলাদেশের। কারণ দেশটির বিপক্ষে প্রায় দুই যুগ আগে একমাত্র জয় থেকেই অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন নাবীব নেওয়াজ জীবনরা। ২০০১ সালে দাম্মামে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম দেখায় মঙ্গোলিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ফিরতি দেখায় অবশ্য ২-২ ব্যবধানে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল দু’দলকে। একুশ বছর আগে বাংলাদেশের কাছে মঙ্গোলিয়া হার মানলেও বর্তমানে তারা কতটা এগিয়েছে তা বলা মুশকিল। তবে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের দিকে তাকালে প্রায় সমশক্তির দলই মনে হয় বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়াকে। র্যাঙ্কিংয়ে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান ১৮৪তম হলেও বাংলাদেশ রয়েছে তাদের দুই ধাপ নীচে।
এ ম্যাচটি বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দ্বিতীয় অ্যাসাইনমেন্ট। গতকাল সিলেটে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবরেরা বলেন, ‘মালদ্বীপ ও মঙ্গোলিয়া-দ্ইু দলের পরিকল্পনা ও মনোভাব ভিন্ন রকম হবে। মালদ্বীপ এমন একটা দল, যারা টেকনিক্যালি মেধাবী। তারা বিল্ড-আপের সময় সম্ভবত বেশি ঝুঁকি নেয়। আমার মনে হয়েছে মঙ্গোলিয়া প্রাণ প্রাচুর্য ভরপুর দল। মালদ্বীপের মতো কৌশলী নয়, সম্ভবত ডিরেক্ট ফুটবল খেলে তারা। মাঠে আমাদের পরিকল্পনা এবং কৌশল প্রয়োগের উপর নির্ভর করবে ম্যাচের ফলাফল।’
স্বাগতিক অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘গত ম্যাচের (মালদ্বীপ) ফল নিয়ে আমরা কিছুটা হতাশ। তবে আমাদের এখন সামনের ম্যাচের দিকে তাকাতে হবে। চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। অবশ্যই আমরা জিততে চাই হোম ম্যাচে।’ তিনি যোগ করেন, ‘প্রতিটি ম্যাচই চ্যালেঞ্জিং। আমরা মঙ্গোলিয়ার খেলার অনেকগুলো ভিডিও দেখেছি। তাদের খেলার ধরণ, খেলোয়াড়দের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করেছি। এভাবেই আমরা ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়েছি।’
মঙ্গোলিয়ার জাপানি কোচ ইচিরো ওতসোকার বলেন, ‘এখানে তাপমাত্রা অনেক গরম। আজকে (গতকাল) খুব বেশি না। আমাদের জন্য ভালোই বলা চলে। মঙ্গোলিয়ায় এখনো হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা। প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের কী অবস্থা সে সম্পর্কে আমার ধারণা খুব কম। তবে আশা করি ভালো একটা ম্যাচ হবে।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি খুব একটা ভালো নয়। তারপরও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুনে আমাদের এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব রয়েছে। এই ম্যাচ আমাদের জন্য ওই বাছাইয়ের প্রস্তুতি বলা চলে।’
অধিনায়ক টিসেন্ড আইয়ুশ ২১ বছর আগের ম্যাচের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘২০০১ সালে আমার বয়স ছিল ১১ বছর। ২০০১ সালে সেদিন মঙ্গোলিয়ায় ছুটির দিন ছিল। সৌদী আরবের দাম্মামে ৯৪ মিনিটে বাংলাদেশের বিপক্ষে গোল করে ড্র করেছিলাম আমরা। সেদিন আমি খুব উল্লাস করেছিলাম। আমার ফুটবলার হওয়ার জন্য অনেক অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল ওই ম্যাচটি। সেদিন থেকেই মঙ্গোলিয়া জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি বাংলাদেশের এক নম্বর খেলা ক্রিকেট। আমার দেশে কুস্তি, বক্সিং, জুডো। কিন্তু আমার হৃদয়ে ফুটবলই সেরা। ১৯৯৯ সাল থেকে ফুটবল খেলছি। ২০০৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় আমার। বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে পারাটা আমার জন্য সৌভাগ্যের।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন