হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার উত্তরসুর গ্রামের কৃতি সন্তান সৈয়দ আবদুল্লাহ আর নেই। শুক্রবার (১ এপ্রিল) রাত ৩-৩০ মিনিটে ঢাকাস্থ নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)
শনিবার (২ এপ্রিল) বেলা আড়াইটায় হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার উত্তরসুর গ্রামের নিজ বাড়িতে জানাজা নামায অনুষ্ঠিত হবে।
আধুনিক বাংলা ইসলামি সাহিত্যের অন্যতম বাক নির্মাতাদের অন্যতম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। মাসিক মদীনার তিন যুগের জনপ্রিয় লেখক ও গবেষক। বৃহত্তর সিলেটের সমকালীন কৃর্তিমান মনীষীদের মাঝে তিনি ছিলেন অন্যতম। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান নিয়ে এই বরেণ্য ইতহাস গবেষকের লেখা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তির ইতিহাসবিদ, শেকড় সন্ধানী ইতিহাস গবেষক সৈয়দ আবদুল্লাহ। আধুনিক বাংলা ইসলামি সাহিত্যের অন্যতম বাক নির্মাতাদের অন্যতম তিনি। বৃহত্তর সিলেটের সমকালীন কৃর্তিমান মনীষীদের তিনি অন্যতম। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান নিয়ে এই বরেণ্য ইতিহাস গবেষকের লেখা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
উলামায়ে হিন্দ এর জীবন কর্ম নিয়ে বাংলা ভাষায় এতো লেখালেখি দ্বিতীয় আর কেউ করেন নি। দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মূখপাত্র মাসিক মঈনুল ইসলামে লাগাতার কয়েক বছর ধারাবাহিক পর্ব লিখেন, ‘আযাদী আন্দোলনে আলেম সমাজ’ শিরোনামে। আজীবন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নিষ্ঠাবান দায়িত্বশীল ছিলেন। ছিলেন ফেদায়ে মিল্লাত মাওলানা সাইয়্যেদ আসআদ আল মাদানী রহ. এর একনিষ্ঠ শিষ্য।
ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসাবে কাজ করেন।পাশাপাশি লিখেছেন বঙ্গবন্ধু সহ জাতীয় অনেক বিষয়ের উপর গবেষণাগ্রন্থ।
সিলেট ও তরফ (হবিগঞ্জের প্রাচীন নাম) অঞ্চল নিয়ে ব্যাপক কাজ করেছেন। তরফ সাহিত্য পরিষদের মতো মহীরুহের ন্যায় প্রতিষ্ঠান তিনি গড়ে তুলেছেন। প্রান্তিক ইতিহাস থেকে শেকড়ের সন্ধানে তার বিচরণ পলাশির পান্তর পর্যন্ত। পলাশি নিয়ে তারঁ লেখা গ্রন্থ উভয় বাংলায় সমাদৃত।
মাসিক মদীনার শুরু থেকে তিন যুগের জনপ্রিয় লেখক ও গবেষক। ৭০/৯০ দশকে লিখতেন সকল জাতীয় দৈনিক ও ইসলামি পত্রিকায়। মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ট বন্ধু বান্ধবের তিনি একজন। খান সাহেবের বহু লেখায় তার কথা এসেছে। জাতীয় অধ্যাপক দেওয়ান আজরফ থেকে শুরু করে কবি আল মাহমুদ পর্যন্ত বহু খ্যাতিমান লেখকরা সৈয়দ আব্দুল্লাহর গবেষনাকর্ম ও সাহিত্য সাধনা নিয়ে লেখালেখি করেছেন।
বিএনএস ইংল্যান্ড সাহিত্য স্বর্ণ পদক সহ পেয়েছেন জাতীয় আন্তর্জাতিক অনেক সম্মাননা, পদক ও পুরস্কার। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন বহু বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা। ২০০৮ সালে সিলেট বিভাগের ২৫টি শিল্প সাহিত্য ও সাংবাদিক প্রতিষ্ঠান মিলে গ্রামিণফোনের সহযোগীতায় বর্ণিল নাগরিক সংবর্ধনার মাধ্যমে তাকে “তরফরত্ন” উপাধীতে ভুষিত করা হয়।
সীরাত বিষয়ক বহু লেখালেখি তিনি করেছেন। সে সময়কার পত্রিকায় সকল রবিউল আওয়াল সংখ্যায় সৈয়দ আব্দুল্লাহর সীরাত বিষয়ক লেখা পাওয়া যাবে। আহলে বায়াত ও সাহাবাদের উপর তার বহু প্রান্ডুলিপি এখনো অপ্রকাশিত।
লিখেছেন ঐতিহাসিক বহুগ্রন্থ। যা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অনন্য দলিল। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য নিয়ে তার গবেষনা বুদ্ধা মহলে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ আকর।
আরকানের প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ মুস, কুরাইশ মাগন ঠাকুর, সভাকবি আলাওয়াল ও মহাকবি সৈয়দ সুলতানের উপর তার গবেষণা আন্তর্জাতিকভাবে সমৃদ্ধ। আরকানের মুসলমান সৈয়দ আব্দুল্লাহর লেখা ৯০ দশকের জনপ্রিয় গ্রন্থ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন